
শিল্পের শহরে সন্ধ্যা হলেই আতঙ্ক, ১৯ জায়গা বেশি বিপজ্জনক
দেশের একটি ওষুধ কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধি আশিক চৌধুরী ১৬ আগস্ট রাতে গাজীপুর মহানগরের বড়বাড়ি থেকে একটি অটোরিকশায় টঙ্গীর বোর্ডবাজার যাচ্ছিলেন। অটোরিকশাটিতে আগে থেকেই যাত্রীবেশে কয়েকজন বসে ছিলেন। সেটি শহরের গাছা এলাকায় পৌঁছালে চালকসহ চারজন আশিকের কাছে থাকা দেড় লাখ টাকা ও দুটি মুঠোফোন ছিনিয়ে নেন।
গাজীপুরে এর আগে ৭ আগস্ট স্থানীয় একটি দৈনিক পত্রিকার সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিনকে (৩৮) কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এক ব্যক্তিকে ছিনতাইকারীদের ধাওয়ার ভিডিও ধারণ করতে গিয়ে অনেকের সামনে খুন হন তিনি।
এই দুই ঘটনা গাজীপুর শহরের অপরাধ পরিস্থিতির কোনো বিচ্ছিন্ন চিত্র নয়, বরং শহরটির বাসিন্দাদের নিরাপত্তাহীনতার নিত্যদিনের পরিস্থিতি। গাজীপুর মহানগর পুলিশের (জিএমপি) আওতাধীন এলাকায় একের পর এক ছিনতাই হচ্ছে। সন্ধ্যা হলেই রাস্তায় চলাচলে আতঙ্ক তৈরি হয়। চাঁদাবাজির ঘটনা ঘটছে। অপহরণ ও ধর্ষণ বেড়েছে। খুন হচ্ছে।
১৩ থেকে ১৫ আগস্ট গাজীপুর শহর ঘুরে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের নিরাপত্তাহীনতা ও উদ্বেগের কথা জানা গেছে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, পুলিশ অপরাধ ঠেকাতে পারছে না। পুলিশের আগের মতো তৎপরতা, টহল ও তল্লাশিচৌকি নেই। এই সুযোগে অপরাধীরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।
পুলিশ সদর দপ্তরের এক তদন্ত প্রতিবেদনেও গাজীপুরের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির বিষয়টি উঠে এসেছে। সাম্প্রতিক ওই প্রতিবেদনে শহরটির আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে ‘খুবই খারাপ’ শব্দ দুটি ব্যবহার করা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জিএমপিতে চুরি, ছিনতাই ও ডাকাতি বেড়েছে। দিনের বেলায় এসব ঘটনা ঘটলেও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা (ওসি) নীরব ভূমিকা পালন করছেন। তাঁরা মাদক ব্যবসায়ী ও ছিনতাইকারীদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের মাসোহারা আদায় করেন।