সংবিধানের ওপরে জুলাই সনদের প্রাধান্য নিয়ে প্রশ্ন বিএনপির

প্রথম আলো প্রকাশিত: ২০ আগস্ট ২০২৫, ০৯:২৯

জুলাই জাতীয় সনদের সমন্বিত খসড়ার কয়েকটি বিষয় নিয়ে আপত্তি তুলেছে বিএনপি। কোনো রাজনৈতিক সমঝোতার দলিল সংবিধানের ওপরে স্থান পেতে পারে কি না, এমন প্রশ্ন তুলে দলটি বলেছে, জুলাই সনদকে সংবিধানের ওপরে প্রাধান্য দেওয়া হলে খারাপ নজির তৈরি হবে। এ সনদ নিয়ে আদালতে প্রশ্ন তোলা যাবে না, সরাসরি এমন বিধান রাখারও বিপক্ষে বিএনপি।


বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ গতকাল মঙ্গলবার সাংবাদিকদের কাছে জুলাই সনদের সমন্বিত খসড়া নিয়ে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরেন। সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে আলোচনায় বিএনপির পক্ষ থেকে নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন সালাহউদ্দিন আহমদ।


যেসব দফায় আপত্তি



  • জনগণের সর্বোচ্চ অভিব্যক্তি হিসেবে জুলাই সনদ প্রণয়ন করা হয়েছে উল্লেখ করে খসড়ায় বলা হয়, এই সনদের সব বিধান, নীতি ও সিদ্ধান্ত সংবিধানে অন্তর্ভুক্তকরণ নিশ্চিত করা হবে এবং বিদ্যমান সংবিধান বা অন্য কোনো আইনে ভিন্নতর কিছু থাকলে সে ক্ষেত্রে এই সনদের বিধান/প্রস্তাব/সুপারিশ প্রাধান্য পাবে।

  • খসড়ায় বলা হয়েছে, জুলাই সনদের কোনো বিধান, প্রস্তাব বা সুপারিশের ব্যাখ্যা-সংক্রান্ত যেকোনো প্রশ্নের চূড়ান্ত মীমাংসার এখতিয়ার বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের ওপর ন্যস্ত থাকবে।

  • খসড়ার আরেকটি দফায় বলা হয়েছে, জুলাই সনদের প্রতিটি বিধান, প্রস্তাব ও সুপারিশ সাংবিধানিক ও আইনগতভাবে বলবৎ হিসেবে গণ্য হবে বিধায় এর বৈধতা, প্রয়োজনীয়তা কিংবা জারির কর্তৃত্ব সম্পর্কে কোনো আদালতে প্রশ্ন তোলা যাবে না।

  • সনদে বলা হয়েছে, যেসব সুপারিশ অবিলম্বে বাস্তবায়নযোগ্য, সেগুলো আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে বাস্তবায়ন করা হবে। এ বিষয়ে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, নির্বাচনের তফসিল ঘোষিত হবে ডিসেম্বরের মধ্যভাগে। তার আগপর্যন্ত এই যে কয়েক মাস সময় আছে, তা আইনকানুন, বিধিবিধান প্রণয়নের জন্য যথেষ্ট। এক–দেড় মাসের মধ্যেই সব অধ্যাদেশ জারি করা যায়। নির্বাহী আদেশগুলো বাস্তবায়ন করা যায়। সনদে ‘জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে’—এই শব্দ উল্লেখ না করলে ভালো হয়।

  • জুলাই সনদের সমন্বিত খসড়ায় অঙ্গীকার অংশের সূচনায় মুক্তিযুদ্ধের পর এবং নব্বইয়ের গণ-অভ্যুত্থান–পরবর্তী সময়ে কিছু বিষয় কীভাবে সংবিধানে সন্নিবেশিত হয়েছিল, তার উল্লেখ করা হয়। ওই দুটি সময়ের মতো ‘গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ, জনগণের ইচ্ছার প্রতি শ্রদ্ধাবোধ এবং সাংবিধানিক কনভেনশন বজায় রেখে ২০২৪ সালের জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে জনগণের ইচ্ছাকে প্রাধান্য দিয়ে’ আটটি বিষয়ে অঙ্গীকার করার কথা বলা হয়।


মুক্তিযুদ্ধের সময়ের সঙ্গে বর্তমান প্রেক্ষাপটকে একইভাবে দেখার সুযোগ নেই বলে মনে করেন সালাহউদ্দিন আহমদ। তিনি বলেন, একাত্তরের পরিস্থিতি আর এখনকার পরিস্থিতি এক নয়। এখন স্বাধীন রাষ্ট্র আছে, সংবিধান আছে। সাংবিধানিক প্রক্রিয়ায় অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নিয়েছেন। এখানে কোনো সাংবিধানিক শূন্যতা সৃষ্টি হয়নি।


বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, মুক্তিযুদ্ধকালীন কার্যাবলিকে যেভাবে বৈধতা দেওয়ার কথা জুলাই সনদের খসড়ায় বলা হয়েছে, তা সঠিক নয়। একাত্তরের ২৬ মার্চ স্বাধীনতার ঘোষণা করা হয়। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। পরবর্তী সময়ে শেখ মুজিবুর রহমানের পক্ষে স্বাধীনতার ঘোষণা পুনরুচ্চারণ করা হয়। ১০ এপ্রিল স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র প্রণীত হয়। তখন যাঁরা নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি ছিলেন, তাঁরা মিলে এটি প্রণয়ন করেন। সে ঘোষণাপত্রে অস্থায়ী বিধান রাখা হয় এবং সেই ঘোষণাপত্রে রাষ্ট্রপতিকে নির্বাহী ক্ষমতা এবং আইন প্রণয়ন ক্ষমতা দেওয়া হয়। তার ভিত্তিতে বাংলাদেশের প্রথম আইন ‘দ্য ল’জ কন্টিনিউয়েন্স এনফোর্সমেন্ট অর্ডার ১৯৭১’ প্রণীত হয়। যেটা পরে সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। সে হিসেবে আইনানুগ ও স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রের ভিত্তি দিয়ে বাংলাদেশ পরিচালিত হয়েছে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

এই সম্পর্কিত

আরও