তেইশ বছর বয়সী জান্নাতুল নাঈম দীর্ঘদিন ধরে ভুগছিলেন মেরুদণ্ডের সমস্যায়; দেশে কাঠখড় পুড়িয়ে খুব বেশি উপকার মেলেনি।
বাধ্য হয়েই প্রতিবেশী ভারতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন নাঈম। তবে পটপরিবর্তনের বাস্তবতায় সীমিত আকারে যে চিকিৎসা ভিসা দেওয়া হচ্ছিল তা তিনি পাননি। এরপরই চিকিৎসার জন্য চীনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন নাঈম। ভাইকে নিয়ে উড়াল দেন দক্ষিণ চীনের ইয়ুননান প্রদেশের রাজধানী কুনমিংয়ে।
নাঈম ভর্তি হন কুনমিংয়ের তংরেন হাসপাতালে। প্রাথমিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তার অস্ত্রোপচার হয়। ইতোমধ্যে নাঈমের শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়েছে বলে জানান তার ভাই রাশেদিন।
তিনি বলেন, “চিকিৎসা ব্যয় ছিল প্রায় ৬০ হাজার ইউয়ান বা ১০ লাখ টাকা (১ ইউয়ান সমান ১৬.৯৫ টাকা), যা বাংলাদেশের শীর্ষ বেসরকারি হাসপাতালের খরচের সমান হলেও সেবার মান ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন।
“ডাক্তার নিজেই বিছানা পরিষ্কার করেছেন ও ড্রেসিং করেছেন। নার্সরা রাতে প্রায় ১০ বার রোগীর খোঁজ নিয়েছেন। এখানে ডাক্তার-নার্সদের আন্তরিকতা সত্যিই অসাধারণ।”
চীন-বাংলাদেশ কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে চীনা সরকারের আমন্ত্রণে প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদারের নেতৃত্বে ২৩ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল গত ৬ থেকে ৯ অগাস্ট কুনমিং সফর করে। প্রতিনিধি দলটি সেখানকার বিভিন্ন হাসপাতাল পরিদর্শন করে।
ঢাকা থেকে কুনমিং মাত্র ঘণ্টা আড়াইয়ের পথ, তবে দিনে ফ্লাইট রয়েছে মাত্র একটি। সেখানে বেশ কিছু অত্যাধুনিক হাসপাতাল রয়েছে, যার মধ্যে পাঁচটিকে বাংলাদেশি রোগীদের জন্য বিশেষভাবে উন্মুক্ত করেছে চীন সরকার।
মার্চ থেকে অগাস্টের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত ছয় শতাধিক বাংলাদেশি চিকিৎসা ভিসা পেয়েছেন।
কানের চিকিৎসার জন্য আসা এক রোগী বললেন, “এখানে রোবটিক প্রযুক্তিতে দক্ষ চিকিৎসকরা কাজ করছেন। সকাল থেকে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে এবং সবকিছুই সন্তোষজনক।”