যদি আপনি পাহাড়প্রেমী হন, নিশ্চয় এভারেস্টের নাম শুনলে আপনার চোখ জ্বলজ্বল করবে। পৃথিবীর সর্বোচ্চ শিখর হওয়ায় এটি বিশ্বের অভিযাত্রীদের জন্য এক অবিস্মরণীয় চ্যালেঞ্জ। কিন্তু এবার নেপাল সরকার সবার জন্য নতুন এক বার্তা দিয়েছে। দেশটির সরকার পর্বতারোহীদের সব সময় এভারেস্টের পেছনে না ছুটে তাদের অজানা পাহাড়গুলোও দেখার আহ্বান জানিয়েছে। সম্প্রতি নেপাল সরকার ঘোষণা করেছে, দেশের দূরবর্তী পশ্চিমাঞ্চলের ৯৭টি পাহাড়ে চূড়ায় ওঠার ফি আগামী দুই বছরের জন্য সম্পূর্ণ মওকুফ থাকবে।
এই ৯৭টি পাহাড়ের মধ্যে ২০টি নেপালের একেবারে সুদূর পশ্চিম প্রদেশে এবং ৭৭টি কার্নালি প্রদেশে অবস্থিত। এই অঞ্চলগুলোকে নেপালের কম উন্নত ও দরিদ্র এলাকা হিসেবে ধরা হয়। এই পাহাড়গুলোর উচ্চতা ৫ হাজার ৯৭০ থেকে ৭ হাজার ১৩২ মিটার পর্যন্ত। অনেক অভিযাত্রী এই পাহাড়গুলোকে এভারেস্ট বা মানাসলুর মতো বিখ্যাত শিখরের সঙ্গে তুলনা করে এড়িয়ে যান। কিন্তু প্রকৃতিপ্রেমীদের জন্য এই পাহাড়গুলোও কম চ্যালেঞ্জিং নয়। বরফে ঢাকা চূড়া, পাহাড়ি নদী, সবুজ বনাঞ্চল এবং নেপালের গ্রামীণ জীবন—সবকিছুই একসঙ্গে পাওয়া যায় এসব পাহাড়ে।
কেন এই উদ্যোগ
নেপালের সরকারের লক্ষ্য দুটি। প্রথমত, এভারেস্টের ওপর চাপ কমানো। প্রতিবছর হাজার হাজার অভিযাত্রী এভারেস্টে ওঠার চেষ্টা করেন। এতে ট্রাফিক জ্যাম হয়, নিরাপত্তাঝুঁকি বেড়ে যায় এবং পরিবেশদূষণ বাড়ে। দ্বিতীয়ত, দেশের দরিদ্র পশ্চিমাঞ্চলের অর্থনীতি উন্নয়ন। এই অঞ্চলে পর্যটন বাড়লে হোটেল, হোমস্টে, গাইডিং, খাবারের ব্যবসা—সব ক্ষেত্রে নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। এভারেস্ট অভিযাত্রা আরও নিরাপদ করতে সরকার এরই মধ্যে কিছু নতুন নিয়ম চালু করেছে। এগুলোর মধ্যে আছে সব অভিযাত্রীর ট্র্যাকিং ডিভাইস পরিধান বাধ্যতামূলক, ৮ হাজার মিটার উচ্চতার শিখরে সিঙ্গেল ক্লাইম্বার নিষিদ্ধ এবং শীর্ষ মৌসুমে ফি ১১ হাজার থেকে ১৫ হাজার ডলার বাড়ানো হয়েছে।
এ ছাড়া একটি নতুন প্রস্তাবও বিবেচনা করছে দেশটির সরকার। সেটি হলো, যাঁরা এভারেস্টে উঠতে চান, তাঁদের আগে কমপক্ষে একটি ৭ হাজার মিটার উচ্চতার নেপালি শিখর জয় করতে হবে। যদিও এটি নিয়ে বেশ সমালোচনা রয়েছে।