You have reached your daily news limit

Please log in to continue


রাজনীতিতে দক্ষিণপন্থার উত্থান নিয়ে ভাবনা-দুর্ভাবনা

একটি জাতীয় দৈনিকের পক্ষ থেকে সম্প্রতি বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের একটি সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়। আরও অনেক প্রশ্নের সঙ্গে বিএনপির মহাসচিবের কাছে একটি প্রশ্ন ছিল, ‘আওয়ামী লীগের দীর্ঘ ফ্যাসিবাদী শাসনের অবসানের পর দেশের রাজনীতিতে দক্ষিণপন্থীদের উত্থান হতে যাচ্ছে। বিশ্লেষকদের কেউ কেউ বিষয়টি আলোচনায় এনেছেন। আপনি কী দেখেন?’

মির্জা ফখরুল জবাবে বলেন, ‘আমিও দেখছি। সে জন্য আমি উদ্বিগ্ন। আমি বাংলাদেশকে সব সময় একটা সত্যিকার অর্থে উদারপন্থী গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ হিসেবে দেখতে চাই এবং এখানে গণতন্ত্র হবে সবচেয়ে বড় বিষয়। সেই জায়গায় যদি এখন এমন এমন রাজনৈতিক শক্তির উত্থান হয়, যারা গণতন্ত্রেই বিশ্বাস করে না। পরিষ্কার ঘোষণা দিয়ে করে না। আবার তারা নিজেরা জোর করে চাপিয়ে দিতে চায় মতবাদকে, এটা নিঃসন্দেহে অ্যালার্মিং সিচুয়েশন। কিছু কিছু দলের মধ্যে এমনও কথা আছে যে মহিলাদের তারা কিছুতেই সামনে আনতে চায় না। মহিলাদের তারা রাজনৈতিক ক্ষমতা তো দূরের কথা, তারা সামাজিক ক্ষমতায়নও করতে চায় না। এসব দলের যদি উত্থান হয় এই দেশে, তাহলে তো পিছিয়ে যাওয়া ছাড়া কোনো পথ থাকবে না।’

মির্জা ফখরুলের বক্তব্যে স্পষ্ট যে তিনি দক্ষিণপন্থীদের উত্থানজনিত পরিস্থিতিকে অ্যালার্মিং বা উদ্বেগজনক মনে করছেন। তিনি চান বাংলাদেশ একটি উদার গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে টিকে থাকুক, যেখানে নারীর ক্ষমতায়ন ও মৌলিক অধিকার সুরক্ষিত থাকবে। যদি এমন রাজনৈতিক শক্তির উত্থান ঘটে; যারা নারী অধিকার মানে না, গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না, তাহলে বাংলাদেশ অবশ্যই পিছিয়ে পড়বে। আর এই পরিস্থিতির জন্য তিনি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দায়ী করেছেন। কারণ, বিরোধী দল দমন করে দীর্ঘমেয়াদি শাসনের চেষ্টাই এমন পরিণতির দিকে নিয়ে যাচ্ছে। তবে দক্ষিণপন্থার উত্থানের পেছনে বিএনপির কোনো দায় আছে কি না, সেটা নিয়েও আলোচনা হওয়া উচিত। জামায়াতের সঙ্গে বিএনপির দহরম-মহরমের বিষয়টি কোনোমতেই এড়িয়ে যাওয়ার মতো নয়।

অবশ্য আওয়ামী শাসনামলে কারও কারও মধ্যে এমন শঙ্কা ও আলোচনা ছিল যে বিএনপি কিংবা অন্য সেন্ট্রিস্ট দলগুলোকে ধ্বংস করে দিলে রাজনৈতিক শূন্যতা তৈরি হবে, যার সুযোগ নেবে উগ্র দক্ষিণপন্থীরা। বিষয়টি কখনো খুব গুরুত্ব দিয়ে ভাবা হয়েছে বলে মনে হয় না।

এখন পরিস্থিতি কী দাঁড়িয়েছে? গণতন্ত্র ও দুর্নীতি শব্দ দুটি একসঙ্গে উচ্চারণ করে এমন প্রচারণা কোনো কোনো মহল থেকে সুকৌশলে চালানো হচ্ছে, যাতে মানুষের মনে গণতান্ত্রিক রাজনীতির ওপরই বিরূপতা তৈরি হচ্ছে। মনে করা হচ্ছে গণতান্ত্রিক রাজনীতি মানে লুটপাট, দুর্নীতি। ফলে জনগণের একাংশ এখন তথাকথিত ‘সৎ শাসক’ বা ধর্মীয় নেতৃত্বকেই বিকল্প হিসেবে ভাবছে বলেও প্রচার করা হচ্ছে।

দেশে ধর্মকে ব্যবহার করে রাজনীতি করা অনেক দল আছে। এই ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক শক্তিগুলোর মধ্যে এমনও দল আছে, যারা নারীদের সামাজিক ও রাজনৈতিক ক্ষমতায়নে বিশ্বাসই করে না। তারা এমন এক শাসনব্যবস্থার স্বপ্ন দেখে, যা বাংলাদেশের সংবিধান বা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সঙ্গে সাংঘর্ষিক। তারা মূলত ইসলামি শাসনে বিশ্বাস করে। যেই শাসনে গণতন্ত্রের কোনো স্কোপ নেই।

গত বছরের গণ-অভ্যুত্থানের পর বাংলাদেশের রাজনীতিতে ডানপন্থীদের উত্থানের বিষয়টি আর আড়ালে নেই। সভা-সমাবেশে কিংবা সংস্কার ও নির্বাচনের মতো ইস্যুগুলোতে বেশ সক্রিয় ভূমিকায় দেখা যাচ্ছে ইসলামপন্থীদের। গত ১৯ জুলাই স্বাধীন বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করেছে ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল জামায়াতে ইসলামী।

সেই সমাবেশে দলটির নায়েবে আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেছেন, ‘আগামী দিনের জাতীয় সংসদে শুধুমাত্র ইসলাম চলবে। কোরআন এবং সুন্নাহর আইন চলবে। মানুষের তৈরি করা কোনো মতবাদকে জাতীয় সংসদে আর যেতে দেওয়া যাবে না।’

জুন মাসের ২৮ তারিখে একই জায়গায় মহাসমাবেশ করে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। সংস্কার, জুলাই হত্যাকাণ্ডের বিচার ও পিআর পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের দাবি জানায় তারা। ৩ মে নারী সংস্কার কমিশন বাতিলসহ চার দফা দাবিতে মহাসমাবেশ করে কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক সংগঠন হেফাজতে ইসলাম। এ ছাড়া সংস্কার, নির্বাচনসহ নানা বিষয়ে সরকারের সঙ্গে আলোচনায় গুরুত্ব পেতে দেখা গেছে ধর্মভিত্তিক দল ও সংগঠনগুলোকে।

এর আগে ২০১৩ সালের ৫ মে মতিঝিলের শাপলা চত্বরে ইসলামপন্থীরা নতুন শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হলেও শেখ হাসিনার সরকার তাদের কঠোর হাতে দমন করেছিল। ওই ঘটনায় হত্যা ও গুমের অভিযোগ আছে। এরপর অনেক দিন ইসলামপন্থীরা কণ্ঠস্বর জোরালো করলেও আলোচনায় তেমন একটা স্থান পায়নি।
পরিস্থিতি যেদিকে গড়াচ্ছে তাতে ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলগুলোর উত্থানের বিষয় আলোচনায় না আসার মতো নেই। জনমনে এমন ধারণা দেওয়া হচ্ছে যে আওয়ামী লীগ-বিএনপি গণতন্ত্রের নামে লুটপাট করবে, দুর্নীতি করবে, চাঁদাবাজি করবে। সুতরাং আমরা সৎ মানুষের শাসন চাই, ধর্মীয় শাসন চাই। যেন ধর্মভিত্তিক রাজনীতি যাঁরা করেন তাঁরা সবাই বুঝি খুবই সৎ মানুষ! দেশের বিভিন্ন স্থানে জামায়াতের বিরুদ্ধে কি চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠছে না? সুযোগ না পেয়ে সৎ থাকা আর সুযোগ পেয়ে সৎ থাকার মধ্যে পার্থক্য আছে নিশ্চয়ই।

ক্ষমতাচ্যুত হওয়ায় আওয়ামী লীগ এখন সেভাবে আলোচনায় নেই। ক্ষমতার রাজনীতির আলোচনায় এগিয়ে আছে বিএনপি। এখন বিএনপিকে আওয়ামী লীগের সঙ্গে দুর্নীতির ইস্যুতে ব্র্যাকেটবন্দী করার পেছনে সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা থাকাই স্বাভাবিক। দক্ষিণপন্থীদের উত্থান নিয়ে বিএনপির মহাসচিবের উদ্বেগও তাই স্বাভাবিক।

এই উদ্বেগ আরও অনেকের মধ্যেই দেখা যাচ্ছে। লেখক, গবেষক ও বামপন্থী রাজনীতিক বদরুদ্দীন উমর বলেছেন, বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে দেশে দক্ষিণপন্থীদেরই রাজত্ব চলছে। দক্ষিণপন্থীরাই বাংলাদেশের রাজনীতি কবজা করে রেখেছে।

আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে তিনটি প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচনের কারণে দেশে রাজনীতির স্বাভাবিক গতি ব্যাহত হয়েছিল এবং ভিন্নমত দমিয়ে রেখে একধরনের কর্তৃত্ববাদী ব্যবস্থা চালু হয়েছিল। বিএনপি ছাড়াও জামায়াত ও ইসলামপন্থী অনেক দল সভা-সমাবেশ করতে পারেনি। মামলা-হামলা এবং গ্রেপ্তারে দলগুলো কাবু হয়ে পড়েছিল। মানুষের পুঞ্জীভূত ক্ষোভ থেকেই একপর্যায়ে গণ-অভ্যুত্থান সংঘটিত হয়।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন