
৮ কারণে বাংলাদেশে ইউটিউবে আয় অন্য দেশের তুলনায় কম
বিশ্বজুড়ে লাখ লাখ কনটেন্ট ক্রিয়েটর ইউটিউবকে কেন্দ্র করেই গড়ে তুলেছেন নিজেদের ক্যারিয়ার। অনেকে ইউটিউব থেকে আয় করে কোটি কোটি ডলারের সাম্রাজ্যও গড়ে তুলেছেন। তবে আশ্চর্যের বিষয় হলো, বাংলাদেশের কনটেন্ট নির্মাতারা ভালো মানের ভিডিও তৈরি করলেও, একই পরিমাণ ভিউ পেয়ে ইউরোপ, যুক্তরাষ্ট্র বা মধ্যপ্রাচ্যের নির্মাতাদের তুলনায় অনেক কম আয় করেন। এর পেছনে বেশ কিছু কারণ রয়েছে।
১. কম সিপিএম (CPM)
ইউটিউবে কনটেন্ট নির্মাতাদের আয়ের প্রধান উৎস হলো বিজ্ঞাপন। ইউটিউব বিজ্ঞাপনদাতাদের কাছ থেকে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ নেয় এবং সেই অর্থের একটি অংশ কনটেন্ট নির্মাতাকে দেয়। এই হারকে বলা হয় সিপিএম বা কস্ট পার মাইল (Cost Per Mille) অর্থাৎ প্রতি হাজার বিজ্ঞাপন ভিউয়ের জন্য কত টাকা বা ডলার পাওয়া যায়।
২. দর্শকদের ক্রয়ক্ষমতা ও ভোক্তা বাজার
যেসব দেশে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বেশি, সেখানে বিজ্ঞাপনদাতারাও বেশি টাকা খরচ করতে রাজি। কারণ, বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে সে দেশের মানুষ পণ্য কিনবে, এমন সম্ভাবনা বেশি। তবে বাংলাদেশের জনসংখ্যা অনেক হলেও অধিকাংশ মানুষের ক্রয়ক্ষমতা সীমিত। ফলে আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ড বা উচ্চমূল্যের পণ্য বিক্রেতারা বাংলাদেশে বিজ্ঞাপন দিতে আগ্রহী নন। এ কারণে ইউটিউবের অ্যালগরিদম বাংলাদেশের ভিডিওতে কম দামি বিজ্ঞাপন দেখায়, ফলে আয় কম হয়।
৩. ইউটিউব মনিটাইজেশন পলিসি ও বিজ্ঞাপন কাঠামো
ইউটিউবের মনিটাইজেশন পলিসি দেশভেদে ভিন্ন হতে পারে। যেসব দেশে ইউটিউবের বিজ্ঞাপন কাঠামো সুসংগঠিত এবং সরকারি সহযোগিতা পাওয়া যায়, সেখানে ইউটিউবও বেশি বিনিয়োগ করে। বাংলাদেশে এখনো অনেক অনলাইন বিজ্ঞাপন ব্যবস্থাপনা অপ্রাতিষ্ঠানিক। অনেক বিজ্ঞাপনদাতা এখনো ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের গুরুত্ব বোঝেন না। ফলে ইউটিউবের আয়ের প্রক্রিয়াটি এখানেও অনেকটা সীমাবদ্ধ।
৪. স্পনসরশিপ ও ব্র্যান্ড ডিলের সীমাবদ্ধতা
উন্নত দেশগুলোতে ইউটিউবাররা ইউটিউব অ্যাড ছাড়াও বিভিন্ন কোম্পানির স্পনসরশিপ, অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এবং ব্র্যান্ডের চুক্তির মাধ্যমে বিশাল অঙ্কের অর্থ আয় করেন। তবে বাংলাদেশে এ সুযোগ এখনো সীমিত। বড় কোম্পানিগুলো ইউটিউবারদের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর বা স্পন্সর বানাতে দ্বিধায় ভোগে অথবা খুব কম বাজেট রাখে।