You have reached your daily news limit

Please log in to continue


নামের আগে ‘মোহাম্মদ’ ও পরে ‘খান’ থাকলেই জেলে ঢোকাও!

আসিফ খান ১৯ বছর পর জেল থেকে ছাড়া পেয়ে যখন মহারাষ্ট্রের জালগাঁওয়ে নিজের বাড়িতে পা রাখলেন, তখন সময়টা ছিল আবেগে মোড়া। ৭০ বছর বয়সি মা হোসনা বানু বাসির খান নিজের চোখকে বিশ্বাসই করতে পারছিলেন না। ছেলেকে জড়িয়ে ধরে তার কান্না থামছিল না; কিন্তু সেই কান্নার মধ্যে মিশেছিল এক গভীর ভয়। এই সুখ যদি আবার হারিয়ে যায়। এরপরে আবার আসিফকে জেলে নিয়ে যাওয়া হলে? হ্যাঁ, এই চিন্তাই তার মাথায় তখন ঘুরছিল। আসিফের বয়স যখন মাত্র ৩৩, তখন তাকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। তিনি তখন মুম্বাইয়ের এক কনস্ট্রাকশন কোম্পানিতে সিভিল ইঞ্জিনিয়ার হিসাবে কাজ করতেন। তার স্ত্রী ও তিন সন্তান ছিল, প্রায় দুই দশক পর যখন তিনি ফিরলেন, তখন তার জীবন থেকে যৌবন হারিয়ে গেছে। সন্তানেরা বাবাকে ছাড়াই অনেক বড় হয়ে গেছে, তারা বাবাকে চেনেই না। আরও কষ্টই লাগবে জানলে যে, আসিফের খালাসের ঠিক দুদিন আগে তার বড় ছেলের কন্যাসন্তান হয়েছিল। আসিফের নাতনি হয়েছিল। পরিবার ভেবেছিল এই শিশু তাদের জন্য সৌভাগ্য নিয়ে এসেছে; কিন্তু আসিফের বাড়ি ফেরার দিনই জন্ডিসে আক্রান্ত হয়ে সেই সদ্যজাত শিশুটি মারা যায়। মুক্তির আনন্দ একমুহূর্তে বদলে গিয়েছিল গভীর দুঃখে। ৩৩ বছরের আসিফ তখন ৫২ বছরের। আসিফের মায়ের কথায় আসিফ নির্দোষ ছিল; কিন্তু ওর জীবনের ১৯টা বছর হারিয়ে গেল। সেই ক্ষতি পূরণ কি হবে কোনোদিন? কিংবা ২০০৬ সালের মুম্বাই ট্রেন বিস্ফোরণ মামলায় অভিযুক্ত ১২ জনকেই কদিন আগে বোম্বে হাইকোর্ট নির্দোষ বলে ঘোষণা করেছে; কিন্তু প্রায় দুদশক জেলে কাটানোর পর পাওয়া এই মুক্তি কি আদৌ মুক্তি, এটা কি আদৌ ন্যায়বিচার? নাকি বিচারব্যবস্থার এক চরম ব্যর্থতার চূড়ান্ত নিদর্শন? এই ঘটনা শুধু কয়েকজন ব্যক্তির জীবন নষ্ট হওয়ার গল্প নয়, বরং এটা ভারতের বিচারব্যবস্থার গভীরে থাকা এক ভয়ংকর রোগের প্রতিচ্ছবি, যেখানে নামের পরে খান বা আগে মোহাম্মদ থাকলেই যেন সন্ত্রাসবাদী তকমা লাগিয়ে দেওয়া, জেলে পুড়ে দেওয়াটা খুব সহজ হয়ে যায়।

কদিন আগে জলগাঁওয়ের রায়ও বের হলো। তাতে তারাও নির্দোষ ঘোষিত হলেন; কিন্তু হিন্দু সন্ত্রাসবাদীরা? তারা কিন্তু কেউ জেলে ছিলেন না। তারা বহু আগেই জেলের বাইরে চলে গেছেন একে একে বেল পেয়ে। এখানে শুধু মুসলিম ১২ জনই জেলে ছিলেন। আদালতের ভাষায়-এগুলো ‘ফলস অ্যাপিয়ারেন্স অব হ্যাভিং সলভ্ড কেস’, যা সমাজকে ভুল রিসোরেন্স দেয়। অথচ আসল অপরাধীরা অধরাই থেকে গেছে, অধরাই থেকে যায়। আদালত আরও বলেছেন, একটা মামলার সমাধান হয়ে গেছে-এমন একটা মিথ্যা চেহারা তৈরি করে বিচার পাইয়ে দেওয়ার ভান করলে তা সমাজকে ভুল বার্তা দেয়। এর ফলে আসল অপরাধীরা আড়ালে থেকে যায় এবং সমাজের প্রতি প্রকৃত হুমকিটা বজায় থাকে। এ ধরনের প্রতারণামূলক সমাধান বিচারব্যবস্থার ওপর মানুষের বিশ্বাসকে নষ্ট করে দেয়।

কোর্ট বলছে, এই অন্যায় নতুন কিছু নয়। একই চিত্রনাট্য সারা ভারতে, যা অবিচারের প্রতিধ্বনী। ভারতের সাম্প্রতিক ইতিহাসে চোখ বুলালে দেখা যাবে, সন্ত্রাসবাদের অভিযোগে মুসলিম যুবকদের গ্রেফতার করা, বছরের পর বছর বিনাবিচারে জেলে আটকে রাখা এবং অবশেষে প্রমাণের অভাবে আদালত থেকে তাদের নির্দোষ খালাস পাওয়ার ঘটনা একটা নিয়মিত চিত্রনাট্যে পরিণত হয়েছে। তারা ঢুকছেন ১৮-২০ বছর বয়সে, বের হচ্ছেন ৫০-৬০ কিংবা ৬৫-৭০ বছর বয়সে। এই প্রতিটি মামলার গল্প একই রকম। একটা সন্ত্রাসবাদী হামলা, তদন্তকারী সংস্থার ওপর দ্রুত অপরাধী ধরার চাপ, কয়েকজন মুসলিম যুবককে গ্রেফতার। কঠোর সন্ত্রাসবিরোধী আইনের প্রয়োগ এবং অবশেষে দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের পর মুক্তি।

২০০২ সালের সেপ্টেম্বরে গুজরাটের অক্ষরদাম মন্দির হামলাতেও ঘটেছে একই রকম বিচারের ঘটনা। ২০০৬ সালের মালেগাঁও বিস্ফোরণ কিংবা ২০১১ সালে গুজরাটের সুরাটে যেটা ঘটেছিল। সেখানে মুসলিমদের শিক্ষা বিষয়ে আয়োজিত সেমিনারে যোগ দেওয়ার অপরাধে ১২৭ জন মুসলিম ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়। পরে ১৯ বছর ধরে মামলা চলার পর সুরাটের আদালত এদের সবাই নির্দোষ বলে খালাশ দেন। সেবার আদালত তার রায়ে বলেছিলেন, প্রসিকিউশন কোনো বিশ্বাসযোগ্য, সন্তোষজনক প্রমাণ আনতে পারেনি। তাহলে? ওই দীর্ঘ বিচার প্রক্রিয়া চলাকালীন পাঁচজন অভিযুক্ত সেখানে মারাও গেছেন। বাকিদের জীবন সম্পূর্ণ তছনছ হয়ে গেছে। এই মামলাগুলো থেকে যে ভয়ঙ্কর প্যাটার্নটা বেরিয়ে আসছে, তা হলো কঠোর আইন, দীর্ঘ কারাবাস এবং অবশেষে উচ্চ আদালতে খালাস। এই চক্রটা বারবার ফিরে ফিরে আসছে আর প্রতিবার ভুক্তভোগী হচ্ছে একটা নির্দিষ্ট সম্প্রদায়ের মানুষ।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন