
এক মাস রোজ এক ঘণ্টা হাঁটলে শরীরে কী পরিবর্তন হবে, জানেন?
ব্যায়ামের জন্য রোজ একটা ঘণ্টা সময় বের করা কঠিন বটে। তবে হালকা বা মাঝারি ব্যায়াম হিসেবে হাঁটাহাঁটি বেশ ভালো। এক ঘণ্টা দৌড়ানো বা ভারী ব্যায়াম করার চেয়ে হাঁটা অনেকটাই সহজ। এমনকি জয়েন্টে ব্যথার মতো সমস্যা থাকলেও আপনি নিয়মিত হাঁটতে পারবেন। আর তাতে উপকারও মিলবে। আদতে রোজ এক ঘণ্টা হাঁটলে এক মাসে দেহে কী ধরনের পরিবর্তন আসে, জেনে নেওয়া যাক।
এক ঘণ্টা হাঁটলে বেশ কিছু ক্যালরি খরচ হয়। তার মানে হেঁটে ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন আপনি। কমবে শরীরের বাড়তি মেদ। শরীর তো সুস্থ থাকবেই, মনের ওপরও ইতিবাচক প্রভাব পড়বে এ চর্চায়। জীবনধারা হয়ে উঠবে স্বাস্থ্যকর। এ প্রসঙ্গে বিস্তারিত জানালেন রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতাল লিমিটেডের মেডিসিন বিভাগের অ্যাসোসিয়েট কনসালট্যান্ট ডা. তাসনোভা মাহিন।
পেশি ও হাড় হবে দৃঢ়
এক মাস যদি আপনি এক ঘণ্টা করে হাঁটেন, তাহলে আপনার পায়ের পেশি পাবে দৃঢ়তা। পায়ের হাড় হয়ে উঠবে মজবুত। হাড়ক্ষয়ের ঝুঁকি কমবে। দেহের ভারসাম্য রাখার ক্ষমতা বাড়বে। ধীরে ধীরে হাঁটার গতিও বাড়াতে পারবেন। হাঁটতে হাঁটতেই ট্রেকিংয়ের মতো রোমাঞ্চকর কোনো কাজের জন্যও নিজেকে প্রস্তুত করতে পারেন।
ভালো ঘুম, প্রফুল্ল মন
নিয়ম করে হাঁটলে রাতে আপনার ভালো ঘুম হবে। তবে সন্ধ্যার পর দ্রুত বা মাঝারি গতিতে না হাঁটাই ভালো। তাতে আবার রাতের ঘুমে ব্যাঘাত ঘটতে পারে। হাঁটলে ভালো লাগার হরমোনও নিঃসৃত হয়। তাই নিয়মিত হাঁটলে মনও ভালো থাকবে। কাজকর্মে উদ্দীপনা পাবেন। ইতিবাচক অনুভব করবেন। অল্পতেই ক্লান্ত হয়ে পড়ার প্রবণতা কমবে। নিয়ম করে হাঁটতে পারলে লক্ষ্যপূরণের একটা আনন্দও অনুভব করবেন।
হৃৎপিণ্ডের সুস্থতা
হাঁটলে হৃদ্রোগের ঝুঁকি কমে। তবে সে জন্য সপ্তাহে অন্তত দেড় শ মিনিট মাঝারি গতিতে হাঁটতে হয়। রোজ এক ঘণ্টা হাঁটলেও আপনার হৃদ্রোগের ঝুঁকি কমবে। খেয়াল রাখবেন, পুরো সপ্তাহের ৪২০ মিনিটের মধ্যে অন্তত ১৫০ মিনিট যেন মাঝারি গতিতে হাঁটা হয়। মাঝারি গতিতে হাঁটার অর্থ হলো, এভাবে হাঁটার সময় আপনার হৃৎপিণ্ডের গতি ও শ্বাসপ্রশ্বাসের হার বাড়বে। এ সময় আপনি কথা বলতে পারবেন, কিন্তু সুরেলা কণ্ঠে কিছু বলতে পারবেন না। মাঝারি গতিতে হাঁটার মোট সময়টা সপ্তাহে ১৫০ মিনিটের বেশি হলে আরও ভালো। বাকি সময় কিছুটা কম গতিতে হাঁটলেও ক্ষতি নেই। মনে রাখবেন, হৃৎপিণ্ডের গতি এভাবে বাড়তে দেওয়ার মাধ্যমে আপনি ভারী কাজ বা ভারী ব্যায়াম করার জন্যও শরীরকে উপযোগী করে তুলছেন।