ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের আমলে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অর্ধেকের বেশি সংসদ সদস্য (এমপি) নির্বাচিত হয়েছিলেন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বা বিনা ভোটে। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি ভোট গ্রহণের আগেই তাঁদের বিজয় নিশ্চিত করেছিল আওয়ামী লীগের ক্ষমতায় বহাল থাকা। বিনা ভোটে এমপি হওয়ার সুযোগ আর রাখতে চায় না বর্তমান নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এ জন্য গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধনের উদ্যোগ নিচ্ছে ইসি।
ইসি সূত্র বলেছে, আরপিও সংশোধনের খসড়ায় বিনা ভোটে নির্বাচিত হওয়ার পথ বন্ধ করার বিধান রাখা হচ্ছে। এ ছাড়া অনিয়ম হলে পুরো আসনের ভোট বন্ধের ক্ষমতা ইসির ফিরে পাওয়া, এক প্রার্থীর সর্বোচ্চ দুটি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা, জোট করলেও নিজ দলের প্রতীকে ভোট করাসহ বেশ কিছু বিধান যুক্ত হচ্ছে খসড়ায়। এ ছাড়া আরপিও থেকে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট গ্রহণের ব্যবস্থা বাতিল হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংজ্ঞায় সশস্ত্র বাহিনীকে যুক্ত করার প্রস্তাবও রয়েছে সংশোধনীতে।
আরপিও সংশোধনের বিষয়ে ১০ জুলাই কমিশন সভা হয়। ওই সভার পর নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেন, আরপিও সংশোধনের প্রস্তাব আলোচ্য-সূচিতে থাকলেও তা শুধু উপস্থাপন করা হয়, বিস্তারিত আলোচনা এগোয়নি। পরবর্তী বৈঠকে শুধু আরপিও সংশোধন অধ্যাদেশ নিয়ে বিশদ আলোচনা হবে।
দশম সংসদ নির্বাচনে ৩০০ আসনের মধ্যে ১৫৩টি আসনেই প্রার্থী নির্বাচিত হয়েছিলেন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়। এ জন্য ওই নির্বাচন বিনা ভোটের নির্বাচন হিসেবে প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে আছে। পরে শুধু সংসদ নয়, স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন নির্বাচনেও বিনা ভোটে অনেক প্রার্থী নির্বাচিত হয়েছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র বলেছে, প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের নেতৃত্বাধীন বর্তমান ইসি বিনা ভোটে বিজয়ের এই সুযোগ রাখতে চায় না। আরপিও সংশোধনীর প্রস্তাব অনুযায়ী, কোনো আসনে একজনমাত্র প্রার্থী থাকলে তাঁকে ‘না’ ভোটের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হবে। নির্বাচনে ‘না’ ভোট বিজয়ী হলে ওই আসনের জন্য আবার তফসিল ঘোষণা করে নতুনভাবে ভোট নেওয়া হবে।