গণ-অভ্যুত্থান-পরবর্তী রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে দেশের অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন বিষয়ে আধিপত্যবাদী বিদেশি শক্তিগুলোর হস্তক্ষেপের মাত্রা বেড়েছে বলে মনে করছে দেশের বামপন্থী রাজনৈতিক দলগুলো। সম্প্রতি মিয়ানমারের রাখাইনের সঙ্গে ‘মানবিক প্যাসেজ’ নাম দিয়ে করিডর চালুর চেষ্টা এবং চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) বিদেশিদের দেওয়ার আলোচনা এরই ধারাবাহিকতা জানিয়ে এসব উদ্যোগ রুখে দিতে রাজধানী থেকে চট্টগ্রাম বন্দর অভিমুখে রোডমার্চের ঘোষণা দিয়েছে দলগুলো। এই দুই ইস্যুতে রাজনীতির মাঠে নিজেদের চাঙা করার কৌশলও নিয়েছে বামপন্থী এসব দল।
বাম নেতারা বলছেন, রাখাইনের সঙ্গে করিডর চালু ও চট্টগ্রাম বন্দর বিদেশিদের দেওয়া হলে ভূরাজনৈতিক বিবেচনায় বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়বে। তাই এ ধরনের উদ্যোগ থেকে অন্তর্বর্তী সরকারকে সরে আসার দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। এরই মধ্যে বিষয়গুলো নিয়ে মানববন্ধন, বিক্ষোভ, সমাবেশ, সেমিনার করেছে দলগুলো। বন্দর-করিডর রক্ষার প্রচারণা জনদাবিতে পরিণত করতে এবার পালন করা হবে রোডমার্চ।
রোডমার্চের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছে, এনসিটিসহ চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবস্থাপনা বিদেশিদের হাতে দেওয়া বন্ধ করে রাষ্ট্রীয় দায়িত্বে পরিচালনা, রাখাইনে করিডরের মাধ্যমে বাংলাদেশকে সাম্রাজ্যবাদী যুদ্ধচক্রে জড়ানোর উদ্যোগ বন্ধ, মার্কিন, ভারতসহ আধিপত্যবাদী দেশসমূহের সঙ্গে আওয়ামী লীগ সরকারসহ বিগত সব সরকারের আমলে স্বাক্ষরিত সব চুক্তি প্রকাশ এবং জাতীয় স্বার্থবিরোধী অসম সব চুক্তি বাতিলের দাবিতে আজ শুক্রবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে থেকে রোডমার্চ শুরু হবে। সকাল সাড়ে ৯টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে উদ্বোধনী সমাবেশ শেষে রোডমার্চ নারায়ণগঞ্জ-সোনারগাঁও-চান্দিনা-কুমিল্লা হয়ে ফেনী পৌঁছাবে। আগামীকাল শনিবার ফেনী থেকে যাত্রা শুরু করে বিকেলে চট্টগ্রাম বন্দরের সামনে সমাবেশের মধ্য দিয়ে রোডমার্চ শেষ হবে।
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলসহ বাম গণতান্ত্রিক জোটভুক্ত ৬টি বামপন্থী দল, বাংলাদেশের সাম্যবাদী আন্দোলন, ৭ দলীয় জোট ফ্যাসিবাদ বিরোধী বাম মোর্চা একসঙ্গে এই রোডমার্চ কর্মসূচি পালন করছে। এ ছাড়া বিভিন্ন বামপন্থী, গণতান্ত্রিক, প্রগতিশীল রাজনৈতিক দল ও সংগঠন মিলিয়ে ৫০টির অধিক সংগঠন এই কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছে বলে জানিয়েছেন আয়োজকেরা।