একটি অসম যুদ্ধের একাকী যোদ্ধা ইরান

বিডি নিউজ ২৪ এম. টি. ইসলাম প্রকাশিত: ২৫ জুন ২০২৫, ১৩:২৬

বিখ্যাত চীনা সমরবিদ সান জু তার ‘যুদ্ধের কৌশল’ (দ্য আর্ট অব ওয়ার) বইয়ে লিখেছেন, “যে যুদ্ধে তুমি জিততে পারবে না, সে যুদ্ধে যেও না।” এই বাক্যটি একদিকে যুদ্ধজয়ের একটি কৌশলগত বুদ্ধিমত্তা প্রকাশ করে, অপরদিকে এর অন্তর্নিহিত তাৎপর্য আরও গভীর। প্রথমত, কেবল তখনই যুদ্ধে নামা উচিত, যখন জয়ের বাস্তব সামর্থ্য ও প্রস্তুতি থাকে। দ্বিতীয়ত, সব যুদ্ধ লড়াইয়ের উপযুক্ত নয়—সব যুদ্ধে জড়ানো দূরদর্শী সিদ্ধান্ত নাও হতে পারে।


গত ২২ জুন রাতে যুক্তরাষ্ট্র ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় বিমান হামলা চালানোর পর প্রশ্ন উঠেছে—ইরান কি এই অসম যুদ্ধে আরও এগোবে? আবার প্রশ্ন জাগে—ইরান চাইলেই কি এই যুদ্ধ থামাতে পারবে?


ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ইরানের এই যুদ্ধ এখন আর কেবল তেহরানের ওপর নির্ভর করছে না। যুদ্ধ শুরু করেছে ইসরায়েল, আর এর মূল নির্দেশদাতা হচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। এখন আবার যুদ্ধবিরতির ঘোষণাও দিচ্ছেন তিনি।


শুধু তাই নয়, একদিন আগেই যখন তিনি ইরানে ‘শাসনব্যবস্থা পরিবর্তনের’ সম্ভাবনা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন, পরদিনই তার কণ্ঠে শোনা যায় ভিন্ন সুর। ‘দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট’ জানায়, নেদারল্যান্ডসের হেগে নেটো সম্মেলনে যোগ দিতে যাওয়ার সময় এয়ার ফোর্স ওয়ানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প বলেন—যুক্তরাষ্ট্র ইরানের শাসনব্যবস্থার পরিবর্তন চায় না। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, এতে বিশৃঙ্খলার ঝুঁকি রয়েছে।


যখন মধ্যপ্রাচ্যের প্রায় সব মুসলিম দেশ ফিলিস্তিন ইস্যুতে নীরব, তখন শিয়া সংখ্যাগরিষ্ঠ ইরান বরাবরই সোচ্চার থেকেছে। এর প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েল চালিয়েছে বিমান হামলা। তবে এই পুরো ঘটনার নেপথ্য নায়ক হচ্ছেন ডনাল্ড ট্রাম্প।



গত সপ্তাহের শেষে যখন তিনি বি-টু বোমারু বিমান পাঠিয়ে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালালেন, তখনও বললেন—এটি দীর্ঘমেয়াদি যুদ্ধে জড়ানোর উদ্দেশ্যে নয়, বরং তেহরানের পারমাণবিক কর্মসূচি ধ্বংসে মিত্র ইসরায়েলকে সহযোগিতার অংশ।


তবে বিস্ময়করভাবে মাত্র দুদিন পরই, সোমবার, ট্রাম্প ঘোষণা দিলেন যুদ্ধবিরতির। তার এই আকস্মিক ঘোষণা নিছক কূটনৈতিক কৌশল নয়—সম্ভবত আলোচনার টেবিলে ইরানকে ফিরিয়ে আনার একটি চাপ সৃষ্টি। যদিও এই কিছুদিন আগে যখন তিনি তেহরানের সঙ্গে আলোচনায় ছিলেন, তখনই ইসরায়েল ইরানের ওপর হামলা চালানো শুরু করেছে।


একটি পুরোনো প্রবাদ আছে—‘যুদ্ধে প্রথম নিহত হয় সত্য।’ সাম্প্রতিক দিনগুলোতে ডনাল্ড ট্রাম্পের অবস্থান ও ভাষ্য সেই প্রবাদকেই যেন নতুন করে প্রমাণ করছে। চীনা সমরবিদ সান জুকে উদ্ধৃত করে, যেখানে তিনি জয়-পরাজয় নিয়ে কথা বলেছেন, তা দিয়ে শুরু করেছিলাম, কিন্তু প্রকৃতপক্ষে যুদ্ধে সত্য নিহত হয় এবং শেষপর্যন্ত কেউ জয়ী হয় না, মানবতার মৃত্যু ঘটে।


ইরানে ইসরায়েলি হামলা কেবল একটি তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া নয়; বরং এটি আঞ্চলিক এবং বৈশ্বিক রাজনীতিতে একাধিক দরজা খুলে দিয়েছে। প্রথমত: ইরানের ‘প্রকৃত বন্ধু’ কারা—অর্থাৎ, ইরান আক্রান্ত হলে কে পাশে দাঁড়াবে—সেই হিসাব এখন অনেকটাই পরিষ্কার। দ্বিতীয়ত: ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধ কি মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য রাষ্ট্রেও ছড়িয়ে পড়বে? তৃতীয়ত: ট্রাম্প রেজিম পরিবর্তন তার উদ্দেশ্য নয় বলে ঘোষণা দিয়েছেন, তবু ইসরায়েল ও তার মিত্ররা কি ইরানে সরকার পরিবর্তনের লক্ষ্যে সরাসরি হস্তক্ষেপ করবে? চতুর্থত: এই যুদ্ধ কি আরও বিস্তৃত হয়ে এক আন্তর্জাতিক রূপ নেবে?


এই সম্ভাবনাগুলোর মধ্যে প্রথমটি ইতোমধ্যেই বাস্তব রূপ নিতে শুরু করেছে। গত কয়েক দিনে ইরানের সরকার ও সাধারণ জনগণ বুঝতে পেরেছে—এই সংকটে তাদের তথাকথিত মিত্ররা আসলে কতটা পাশে আছে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও