
বাদ পড়ল সঞ্চয়পত্রের সুদ, কমল কর্মসূচির সংখ্যাও
সংস্কারের অংশ হিসেবে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার সামাজিক নিরাপত্তা খাতে এক ধাক্কায় কর্মসূচির সংখ্যা ৪৫ কমিয়ে ফেলেছে। আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির সংখ্যা ১৪০ থেকে কমিয়ে ৯৫–তে নামিয়ে আনা হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে অর্থনীতিবিদেরা অভিযোগ করে আসছিলেন, সামাজিক নিরাপত্তা খাতের বরাদ্দকে ফুলিয়ে–ফাঁপিয়ে দেখানো হচ্ছিল।
বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় সঞ্চয়পত্রের সুদ থেকে শুরু করে পেনশন বাবদ বরাদ্দকেও সামাজিক নিরাপত্তা খাতের বরাদ্দ হিসেবে দেখানো হতো। অন্তর্বর্তী সরকার নতুন বাজেটে সঞ্চয়পত্রের সুদকে এ খাত থেকে বাদ দিয়েছে। পেনশন বাবদ বরাদ্দের কথাও বাজেট বক্তব্যে আলাদা করে উল্লেখ করেছেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘সামাজিক নিরাপত্তা খাতের ব্যাপ্তি ও গুরুত্ব বিবেচনায় আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরে ১ লাখ ১৬ হাজার ৭৩১ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করছি। পেনশন ছাড়া সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনীর জন্য বরাদ্দের পরিমাণ দাঁড়াবে ৮১ হাজার ২৯৭ কোটি টাকা।’ পেনশন বাবদ বরাদ্দ রয়েছে ৩৫ হাজার কোটি টাকার বেশি। এ খাতে আগামী অর্থবছরের বরাদ্দ মোট বাজেটের ১৪ দশমিক ৭৮ শতাংশ। আর মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ১ দশমিক ৮৭ শতাংশ। অথচ এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) মান অনুযায়ী, একটা দেশের সামাজিক নিরাপত্তা খাতে বরাদ্দ হওয়া উচিত জিডিপির ৫ শতাংশ।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের তথ্য–উপাত্ত অনুযায়ী, আগামী অর্থবছরের বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির বরাদ্দ থেকে সঞ্চয়পত্রের সুদ বাবদ সরকার যে ভর্তুকি দেয়, তা বাদ দেওয়া হয়েছে। অর্থ বিভাগের কর্মকর্তারাও এত দিন ব্যাখ্যা দিয়ে আসছিলেন যে মানুষ ব্যাংকে আমানত হিসেবে অর্থ না রেখে সঞ্চয়পত্র কিনলে যে বেশি সুদ পায়, তা বহন করতে হয় সরকারকে। ফলে এটাও সামাজিক নিরাপত্তা খাতের অংশ।