চোখ রাঙাচ্ছে করোনাভাইরাস, আমাদের ঝুঁকি কতখানি?

ঢাকা পোষ্ট কাকলী হালদার প্রকাশিত: ১১ জুন ২০২৫, ১২:০১

রাহুল, একজন স্কুলশিক্ষক। খোলা জানালার পাশে দাঁড়িয়ে বাইরে তাকিয়ে ছিল। হঠাৎ হাঁচির শব্দে পেছন ফিরে তাকায়—তার ছোট মেয়ে তানি কাঁথা মুড়ি দিয়ে বিছানায় শুয়ে আছে। তাপমাত্রা একটু বেশি। ‘এত ঠান্ডা লাগলো কী করে?’ রাহুল জিজ্ঞাসা করল।


‘স্কুলে অনেকেই সর্দি-কাশি নিয়ে এসেছিল বাবা। ক্লাসেও মাস্ক পরেনি কেউ।’


রাহুলের বুকের মধ্যে কেমন যেন চিনচিনে ব্যথা অনুভব হলো।


সেদিন রাতেই খবরের ভেসে উঠে—‘নতুন রূপে আবার ফিরে এসেছে করোনাভাইরাস। ঢাকা শহরের বেশ কিছু এলাকায় আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। কিছু রূপ আগের চেয়ে বেশি সংক্রামক হলেও উপসর্গ মৃদু।’


রাহুলের স্মৃতিতে ফিরে এলো ২০২০ সালের দিনগুলো। লকডাউন, বাজারের দীর্ঘ লাইন, পিপিই কিটে ঢেকে থাকা ডাক্তাররা, অক্সিজেনের অভাব—সবকিছু যেন দুঃস্বপ্নের মতো। তবে এবারের করোনা আগের মতো হঠাৎ ঝাঁপিয়ে পড়ছে না, বরং নিঃশব্দে, ধীরে ধীরে, চুপিসারে ছড়িয়ে পড়ছে। যেন ছায়া।


পরদিন সকালেই তানি’র করোনা পরীক্ষা করানো হলো। রিপোর্ট পজিটিভ। রাহুল জানে, এখন ভয় না পেয়ে সচেতন হতে হবে। তানির স্কুলে ফোন করে জানাল, আবার যেন সবাইকে মাস্ক পরতে বলা হয় এবং যারা সর্দি-কাশি হয়েছে তারা যেন বাসায় থাকে।


এরপর সে নিজেই একটা ছোট পোস্টার বানিয়ে স্কুলের গেটের সামনে লাগিয়ে দিলো:


‘করোনা আবার ফিরছে, কিন্তু আমরা প্রস্তুত। মাস্ক পরুন, দূরত্ব বজায় রাখুন। নিজেকে আর আশেপাশের মানুষকে নিরাপদ রাখুন।’


গল্পটা ছোট, কিন্তু বাস্তব। কারণ, করোনা নামক ছায়াটা আবারও ঘনিয়ে আসছে। আমরা যদি আগের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে এবার সতর্ক থাকি—তবে আগামীর ছায়া থেকে নিজেকে আর আমাদের সমাজকে রক্ষা করা সম্ভব।



অন্যান্য ভাইরাসের মতোই করোনাভাইরাস মিউটেশন করে প্রতিনিয়ত তার রূপ পাল্টাচ্ছে। আর এর ফলে নতুন নতুন ভেরিয়েন্ট উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। সম্প্রতি, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) NB.1.8.1 নামক একটি নতুন কোভিড ভেরিয়েন্টকে ‘ভেরিয়েন্ট আন্ডার মনিটরিং’ (VUM) হিসেবে ঘোষণা করেছে।


NB.1.8.1 (কোড নাম ‘Nimbus’) হলো অমিক্রন সাবভেরিয়েন্ট JN.1-এর পরবর্তী বা উপধরন নতুন রূপ। প্রথমে চীনের কিছু অঞ্চলে এর উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেলেও বর্তমানে এটি সারা বিশ্বে তার উপস্থিতি বাড়াচ্ছে। VUM মানেই যে মারাত্মক বা খুব বিপজ্জনক এমনটা নয় বরং এটি WHO -র ‘ওয়াচলিস্ট’ বা পর্যবেক্ষণ ক্যাটাগরি। এর সম্ভাব্য সংক্রমণ ক্ষমতা, রোগলক্ষণ, রোগের তীব্রতা এবং প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিয়ে বিভিন্ন দেশের বিজ্ঞানীরা গবেষণা করছেন।


তবে এখনো পর্যন্ত NB.1.8.1 ভেরিয়েন্ট অন্যান্য অমিক্রন স্ট্রেনের তুলনায় মারাত্মক রোগ সৃষ্টি করে বলে কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। যদিও কিছু দেশে এই ভেরিয়েন্টের সংক্রমণে হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রে বাড়িতেই এর চিকিৎসা সম্ভব।


এটা প্রথম শনাক্ত হয় ২০২৫ সালের জানুয়ারি মাসে। বর্তমানে ২০টিরও বেশি দেশে শনাক্ত (UK, USA, China, India, Thailand এবং অন্যান্য) শনাক্ত হয়েছে।


এই ভেরিয়েন্ট অত্যন্ত সংক্রামক, দ্রুত ছড়াচ্ছে কারণ গবেষণা বলছে, এটি মানুষের ACE2 রিসেপ্টরের সাথে শক্তভাবে যুক্ত হতে পারে বলেই যথেষ্ট সংক্রমণ বাড়াতে সক্ষম। বেশি সংক্রামক হলেও এখন পর্যন্ত গুরুতর অসুস্থতা বা মৃত্যুর হার বেশি বলে জানা যায়নি।


ভেরিয়েন্ট নতুন হলেও কোভিডের আগের মতোই সাধারণ লক্ষণ দেখা যাচ্ছে এবারও। গলা ব্যথা, জ্বর, ক্লান্তি, কাশি, শরীর ব্যথা। এর সাথে কারও কারও বমি, ডায়রিয়া বা হজমজনিত সমস্যাও দেখা যাচ্ছে।


বাংলাদেশ এবং আশেপাশের দেশগুলোয় অমিক্রনের কয়েকটা সাব-ভেরিয়েন্ট লক্ষ্য করা যাচ্ছে।


JN.1—BA.2.86 থেকে উদ্ভূত, শক্তিশালী সংক্রমণ ক্ষমতা আছে। হালকা থেকে মাঝারি জ্বর, সর্দি, নাক বন্ধ, গলা ব্যথা, মাথাব্যথা, অতিরিক্ত ক্লান্তি ও হজম সমস্যা দেখা যায়।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও