
শিশুর শারীরিক-মানসিক বিকাশে মায়ের কাছে থাকা কতটা জরুরি
মা, এই শব্দটির মাঝে জড়িয়ে আছে ভালোবাসা, আত্মত্যাগ, নিরন্তর মমতা ও নিঃস্বার্থ সেবা। একটি শিশুর জন্মের পর তার জীবনের প্রথম শিক্ষক, প্রথম বন্ধুর নাম ‘মা’। জন্ম থেকে শুরু করে প্রাথমিক বিকাশের প্রতিটি ধাপে মায়ের প্রভাব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। একজন মা-ই পারেন শিশুর মনে নিরাপত্তা, ভালোবাসা ও বিশ্বাসের ভিত্তি গড়ে তুলতে। শিশুর মানসিক, শারীরিক ও নৈতিক বিকাশে মায়ের ভূমিকা অনস্বীকার্য।
শিশু যখন জন্ম নেয়, তখন সে হয় একেবারেই অসহায়। মায়ের দেহের উষ্ণতা, বুকের দুধ এবং স্নেহময় চাহনিই তাকে প্রথম জীবনের নিরাপত্তা দেয়। বুকের দুধ শুধু পুষ্টিকর খাদ্যই নয়, এটি শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে এবং তাকে সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে। এছাড়া শিশুর চোখে চোখ রেখে কথা বলা, কোলে নেওয়া, গান শোনানো এসব ছোট ছোট কাজ শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশে এবং আবেগীয় সংবেদনশীলতা তৈরিতে সহায়তা করে।
একজন মা-ই সবচেয়ে আগে বুঝতে পারেন তার শিশুর চাহিদা। সে কাঁদলে কেন কাঁদছে, খিদে পাচ্ছে নাকি কিছুতে অস্বস্তি হচ্ছে এসব মা-ই সহজে বুঝে ফেলেন। তাই শিশুর প্রাথমিক যত্নে মায়ের বিকল্প কেউ হতে পারে না। শিশুর ভাষা শেখার ক্ষেত্রেও মায়ের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মায়ের মুখ থেকে উচ্চারিত প্রতিটি শব্দ, গানের সুর কিংবা গল্প বলার ভঙ্গি শিশুর শ্রবণশক্তি ও ভাষা শেখার প্রক্রিয়াকে দ্রুততর করে তোলে।
শুধু শারীরিক ও মানসিক যত্নই নয়, নৈতিক শিক্ষার সূচনাও মায়ের হাত ধরেই হয়। ছোটবেলা থেকেই মা সন্তানকে সত্য বলা, ভালো-মন্দের পার্থক্য শেখানো, অন্যের প্রতি সহানুভূতিশীল হওয়া, শৃঙ্খলা মেনে চলা এসব শিক্ষায় অভ্যস্ত করে তোলেন। একজন মা সন্তানের মধ্যে মূল্যবোধ ও চরিত্র গঠনের বীজ বপন করেন যা ভবিষ্যতে তার ব্যক্তিত্ব গঠনে দারুণভাবে সাহায্য করে।
- ট্যাগ:
- লাইফ
- শিশুর বিকাশ