‘বৃষ্টির আশীর্বাদে’ ল্যাংড়া, আম্রপালিসহ আমের উৎপাদন ভালো
সাতক্ষীরা সদরের ফিংড়ি এলাকায় প্রায় ৩০ বিঘার আমের বাগান বেলাল হোসেনের। সেই বাগান থেকে আমও পাড়া শুরু করেছেন। এ জেলায় আম পাড়া শুরু হয় সবার আগে। এবারও হয়েছে। তবে আমের দাম নিয়ে ততটা খুশি নন তিনি। কারণ, গত বছরের (২০২৪) চেয়ে এবার দাম কম পাচ্ছেন, দাবি তাঁর। উদাহরণ দিয়ে বেলাল বললেন, ‘গতবার গোবিন্দভোগ বেইচেছি মণপ্রতি ২ হাজার ৮০০ থেকে ৩ হাজার ৫০০ টাকা। এবার তা ২ হাজার ২০০ থেকে ২ হাজার ৫০০–এর মধ্যে বেচতি হচ্ছে। এবার ভালো দাম নেই কিন্তু বাগান কিনতি হয়েছে বেশি দরে।’
‘বাগান কেনা’ বলতে আম বাগানের মালিকের কাছ থেকে ভাড়ায় বাগান নেওয়া বোঝায়। গত বছর আমের বাজার ছিল চড়া। তাই এবার ভাড়া দেওয়ার সময় মালিকেরা ভাড়া হেঁকেছেন বেশি। বেলাল হোসেন এই ৩০ বিঘার প্লট কিনেছেন ৭ লাখ ২০ হাজার টাকায়। গতবার অন্য এলাকায় বাগান কিনেছিলেন। তখন দাম অন্তত ৩০ শতাংশ কম ছিল। এবারের এই বাড়তি ভাড়ার সঙ্গে বাগান পরিচর্যা, শ্রমিকের খরচসহ নানা খরচ আছে। কিন্তু সেই তুলনায় লাভ খুব বেশি হবে না, অন্তত আগাম জাতের আমে।
গোবিন্দভোগ, হিমসাগর, গুটির মতো আমগুলো আগাম জাতের। সেগুলো মে মাসের প্রথম সপ্তাহে বাজারে চলে এসেছে। এরপর আসবে নাবি বা দেরিতে ফলন হওয়া ল্যাংড়া, আম্রপালি, ফজলি, আশ্বিনি, বারি-৪ আম।
দেশের সর্বত্র আম হয়। তবে উত্তরের জেলা চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী, নওগাঁ, দক্ষিণ-পশ্চিমের সাতক্ষীরা ও মেহেরপুর এবং পার্বত্য তিন জেলা রাঙামাটি, বান্দরবান ও খাগড়াছড়িতে আমের উৎপাদন বেশি হয়। এসব এলাকার একাধিক চাষি, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা এবং ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এবার শুষ্ক মৌসুমে বৃষ্টি কম হয়। তাতে সেচের জন্য বাড়তি খরচ হয়েছে। এখন আগাম জাতের আমের উৎপাদন মোটামুটি ভালো হলেও খরচের তুলনায় বাজারে দাম কম পাচ্ছেন। কিন্তু এপ্রিল ও মে মাসে বৃষ্টি হয়েছে মোটামুটি ভালো। আর তাতে নাবি জাতের আম পুষ্ট হয়েছে। ওই জাতের আমগুলো লাভের মুখ দেখাবে, আশা আম ব্যবসায়ীদের।