
ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন চায় ৫৩ রাজনৈতিক দল
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন কবে হবে তা নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে এক ধরনের সন্দেহ-সংশয় তৈরি হয়েছে। ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচন দিতে চান প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তবে তার এমন আশ্বাসে আস্থা রাখতে পারছে না বেশির ভাগ রাজনৈতিক দল। বিএনপি ডিসেম্বরের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন চায়। ইতোমধ্যে দলের হাইকমান্ড থেকে একরকম সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। বিএনপির দাবির সঙ্গে আরও ৫২টি দলেরও একই সুর। তবে জাপান সফররত প্রধান উপদেষ্টা এক বক্তব্যে বলেন, ‘সব দল নয়, শুধু একটি রাজনৈতিক দলই চলতি বছর ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন চায়।’ অর্থাৎ তিনি বিএনপির প্রতি ইঙ্গিত করে এমন কথা বলেছেন।
এদিকে এ প্রেক্ষাপটে যুগান্তরের পক্ষ থকে নির্বাচনমুখী প্রায় সবকটি দলের দায়িত্বশীল সূত্রের সঙ্গে এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে চাওয়া হয়। ডিসেম্বরে নির্বাচন হলে আপত্তি নেই বলে মতামত দিয়েছে ৩০টি দল। উল্লেখযোগ্য দলের মধ্যে রয়েছে-মাহমুদুর রহমান মান্নার নাগরিক ঐক্য, সাইফুল হকের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, আন্দালিব রহমান পার্থর জাতীয় পার্টি (বিজেপি), নুরুল হক নুরের গণঅধিকার পরিষদ, মুজাহিদুল ইসলাম সেলিমের দল সিপিপি, বজলুর রশীদ ফিরোজের বাসদ এবং ববি হাজ্জাজের এনডিএম। এছাড়া শুক্রবার বিবৃতি দিয়ে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের দাবি জানিয়েছে ১২ দলীয় জোট, এলডিপি ও গণফোরাম। সব মিলিয়ে বিএনপিসহ ৫৩টি দল ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে।
তবে জামায়াতে ইসলামী চায় রোজার আগে ফেব্রুয়ারিতে অথবা রোজার পর এপ্রিলে নির্বাচন। ইসলামী আন্দোলনসহ কয়েকটি ইসলামপন্থি দল চায় মার্চের মধ্যে এবং এনসিপি (জাতীয় নাগরিক পার্টি) মৌলিক সংস্কার ও দৃশ্যমান বিচার শেষে নির্বাচন চায়।
ডিসেম্বরে নির্বাচন চান যারা : গণতন্ত্র মঞ্চের শীর্ষ নেতা ও নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘আমরা মনে করি ডিসেম্বরে ভোট করা যায়। সরকার চাইলে নির্বাচন করতে পারে। আর সেটা যুক্তিসংগতও হবে। আর সংস্কার নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি যে প্রত্যাশা ছিল-তা ৯ মাসের পারফরম্যান্সে নেই।’ তিনি বলেন, এখন সময় দীর্ঘায়িত করলেও বেশি কিছু হবে, এমন মনে হচ্ছে না।
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, ডিসেম্বর তো বটেই তার আগেও নির্বাচন করা সম্ভব। সরকার অপ্রয়োজনীয় কালক্ষেপণের ধারণা তৈরি করছে। নির্বাচন শুধু বিএনপির দাবি নয়, বরং জনগণের দাবি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ১৬ বছর ধরে মানুষ তার পছন্দের প্রার্থীকে নির্বাচন করার জন্য অপেক্ষা করছে। একইসঙ্গে দেশের মধ্যে যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়েছে, নির্বাচনের সূচি ঘোষণার পর তাতেও লাগাম আসবে।