জাতি হিসেবে আমরা শিক্ষায় মনোনিবেশ করছি না, পিছিয়ে পড়ছি বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে

ডেইলি স্টার মাহফুজ আনাম প্রকাশিত: ৩০ মে ২০২৫, ১৩:০৯

সম্প্রতি একদল শিক্ষার্থীর হামলার শিকার হয়েছেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এএসএম আমানুল্লাহ। গত ২২ মে দ্য ডেইলি স্টারের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২২ সালের ডিগ্রি পরীক্ষায় অটোপাসের দাবিতে আন্দোলনরত একদল শিক্ষার্থী তার ওপর এই হামলা চালিয়েছে।


করোনা মহামারি ও দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত এই শিক্ষার্থীদের জন্য জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ইতোমধ্যে 'গ্রেস মার্ক' দিয়েছে। তারপরও তাদের পরীক্ষা এতই খারাপ হয়েছে যে, পাস নম্বরও পায়নি। তাদের উত্তরপত্র পুনর্মূল্যায়নের আবেদন করার সুযোগও দেওয়া হয়েছিল। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের ওপর হামলা চালিয়েছেন, যাতে তিনি ভয়ে তাদের দাবি মেনে নেন।


এই কলাম লেখা পর্যন্ত হামলায় সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে কোনো কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার কথা শোনা যায়নি।


গণঅভ্যুত্থানের পরপরই গত বছর আগস্টে সচিবালয় সংলগ্ন এলাকায় গিয়ে শিক্ষার্থীদের একই ধরনের 'অটোপাস'র দাবি তুলতে দেখা গেছে।


গত ১৬ মে দ্য ডেইলি স্টারের প্রতিবেদনেই উঠে এসেছে, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের কারণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি), জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি), খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট) এবং বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) প্রশাসনিক কার্যক্রমে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে অচলাবস্থার কারণে ক্লাস, টিউটোরিয়াল ও পরীক্ষা বন্ধ রয়েছে—ফলে প্রায় ৭০ হাজার শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ হুমকির মুখে।


গণঅভ্যুত্থানের পর এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় সব শীর্ষ প্রশাসনিক কর্তাদের সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। ডেইলি স্টারের প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, শেখ হাসিনার শাসনামলে নিয়োগপ্রাপ্ত ৪৭টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হয় পদত্যাগ করেছেন, না হয় ৫ আগস্টের পর তাদের সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি), জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি), রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি), চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) এবং বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) উপাচার্য।


তাদের উত্তরসূরি নিয়োগ দেওয়া হয়েছে অন্য রাজনৈতিক ধারা থেকে। নতুন ৪৭ জন উপাচার্যের মধ্যে প্রায় ৩০ জনেরই সম্পৃক্ততা রয়েছে বিএনপি বা জামায়াতপন্থী শিক্ষক সংগঠনের সঙ্গে।


কাজেই, আমরা যে পরিবর্তন দেখতে পাচ্ছি, সেটা কেবল হাত বদলের, পদ্ধতিগত কোনো পরিবর্তন নয়।


৪৭টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য কেন রাজনীতিবিদদের মতো পালিয়ে গেছেন? তারা কি একাডেমিকভাবে এতটাই যোগ্যতাহীন ও বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে দেউলিয়া ছিলেন যে, দেশের শীর্ষ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান হতে তাদের একমাত্র বিকল্প ছিল তোষামোদ করা?


রূঢ় বাস্তবতা হলো, সব না হলেও বেশিরভাগ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগের ক্ষেত্রে একাডেমিক যোগ্যতার চেয়ে বেশি বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে রাজনৈতিক পরিচয়।


শেখ হাসিনা প্রায় সব প্রতিষ্ঠানের রাজনীতিকরণ করেছেন। তবে সবচেয়ে ক্ষতিকর ছিল বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর রাজনীতিকরণ, বিশেষ করে উপাচার্যের পদ।


শিক্ষকরা যখন থেকে দেখলেন, একাডেমিক পেপার লেখা, মৌলিক গবেষণা করা, একাডেমিক মান বজায় রাখা, সৃজনশীল মনের বিকাশের জন্য উন্মুক্ত একাডেমিক পরিবেশ তৈরি করার পরও তাদের পেশাগত উন্নতির পথ তৈরি হয় না—তখনই সমস্যার শুরু হয়।


তারা স্পষ্ট বাস্তবতায় দেখতে পেয়েছেন, বিদেশি স্কলারশিপ পাওয়া, উচ্চপদ এবং দুঃখজনকভাবে উপাচার্য হওয়ার সবচেয়ে নিশ্চিত উপায় হলো রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত হওয়া। আর শিক্ষকরা যখন থেকে এই পথে হাঁটতে শুরু করলেন, তখন থেকেই আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভগ্নদশা শুরু।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও