
দল নিষিদ্ধের রাজনীতি
স্বাধীন বাংলাদেশে দল হিসেবে পরোক্ষভাবে আওয়ামী লীগ ‘নিষিদ্ধ’ হয়েছিল মূলত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাসনামলেই—১৯৭৫ সালের ২৫ জানুয়ারি বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগ-বাকশাল গঠনের মধ্য দিয়ে। কেননা ‘বাকশাল’ গঠনের সময়ে সকল রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করা হয়। অতএব সেই যুক্তিতে তখন আওয়ামী লীগও কার্যত নিষিদ্ধ। যদিও আওয়ামী লীগের লোকেরা তখন ‘বাই ডিফল্ট’ বাকশালের সদস্য। ফলে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ এই অর্থে যে, ‘বাকশাল’ গঠনের পরে আওয়ামী লীগ নামে কোনো দল ছিল না—রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান যতক্ষণ না রাজনৈতিক দলের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়ে দেশে বহুদলীয় গণতন্ত্রের পথ উন্মুক্ত করেন।
এর আগে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ হয়েছিল মুক্তিযুদ্ধের প্রাক্কালে ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ। পরদিন পত্রিকার খবর: ‘জাতির উদ্দেশে এক বেতার ভাষণে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান শেখ মুজিবুর রহমানের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতা ও পাক জাতীয় পতাকার প্রতি অবমাননার অভিযোগ এনেছেন। জেনারেল ইয়াহিয়া বলেছেন, শেখ মুজিবর রহমান ও তার অনুগামীরা পাকিস্তানের শত্রু। তিনি বলেছেন তারা পাকিস্তানকে ভাঙতে চান। এটা একটা অপরাধ, যার শাস্তি অনিবার্য। রাজনৈতিক তৎপরতা নিষিদ্ধ করবার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আওয়ামী লীগকেও রাজনৈতিক দল হিসেবে সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। পাকিস্তানের সংহতি, ঐক্য ও নিরাপত্তা রক্ষা এবং সরকারের কর্তৃত্ব পুনঃপ্রতিষ্ঠায় সশস্ত্র বাহিনীকে তাদের কর্তব্য সম্পাদনে আদেশ দেওয়া হয়েছে।