রাজনীতির বাজারে নতুন পার্টির ধুম!

বিডি নিউজ ২৪ চিররঞ্জন সরকার প্রকাশিত: ০৪ মে ২০২৫, ২০:৫২

এ বছর আলুর বাম্পার ফল হয়েছে। মাঠভরা আলু আর ‘ঠেলাভরা’ দাম দেখে দেশের মানুষ দিশেহারা। কিন্তু এর চেয়েও বিস্ময়কর ও বর্ণাঢ্য বাম্পার ফলন দেখা যাচ্ছে রাজনীতির খেতখামারে— নতুন রাজনৈতিক দলের বৃষ্টির মতো সৃষ্টি! ২০২৪ সালের ৫ অগাস্টের গণ-অভ্যুত্থানের পর হঠাৎ যেন রাজনীতিতে এক অদ্ভুত ‘ফুল ফোটানো বসন্ত’ নেমে এসেছে— এটা কোনো আদর্শিক নয়, নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের জাগরণ!


দল, আরো দল, আরো নতুন দল। রাত ২টায় হঠাৎ ঘুম ভেঙে কেউ যদি ভাবে, ‘আরে! আমি এখনো দল গঠন করিনি?’— সকালে উঠে সঙ্গে সঙ্গে ফেইসবুক লাইভ দিয়ে নতুন পার্টির উদ্বোধন করে ফেলতে পারেন! পোস্টার, স্লোগান, হ্যাশট্যাগ সব একবেলাতেই তৈরি করা সম্ভব।


শান্তি-স্বস্তি-নিরাপত্তা থাক বা না থাক, দেশের রাজনৈতিক আকাশে এখন দল-নামক ফুলের মৌসুমি ঝলকানি। বসন্তকালে যেমন গাছে গাছে নতুন পাতা গজায়, তেমনি আমাদের দেশেও উঁকি দিচ্ছে একেকটা রাজনৈতিক চারা। দেশের অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে, এটা আর কোনো স্বাভাবিক রাষ্ট্র নয়, একটা বিশাল ‘পলিটিক্যাল নার্সারি’। আর যারা এসব দল গড়ে তুলছে, তারা যেন জাত মালির নতুন প্রজাতি— কেউ ছাত্রনেতা, কেউ ব্যবসায়ী, কেউ হুট করেই ‘সুশীল’ হয়ে উঠেছেন, সবাই যেন হাতের মুঠোয় একটা করে দল নিয়ে নেমে পড়েছেন ‘উন্নয়ন ও ন্যায়বিচারের বাজারে’।


বর্তমানে গণতন্ত্র এমন এক ‘স্মার্ট’ ফরম্যাটে পৌঁছেছে, যেখানে যার মোবাইলে ২০০০ টাকার মতো বিকাশ ব্যালান্স, সে-ই এখন আত্মবিশ্বাস নিয়ে দল খুলে ফেলে। উদ্দেশ্য পরে আসুক, দলটা আগে থাক। কেউ যদি বলে, ‘আপনার রাজনীতিতে আসার কারণ কী?’—উত্তর আসে, ‘ভাই, দল তো খুলছি, এখন একটা উদ্দেশ্য দাঁড় করাচ্ছি... টাইম লাগবে একটু।’


গড় হিসেবে প্রতিমাসে জন্ম নিচ্ছে তিনটি করে রাজনৈতিক দল। যেন ‘পলিটিক্যাল ফার্টিলিটি রেট’ এখন জাতিসংঘের হিসাবেও রেকর্ডযোগ্য হতে পারে! আগে মানুষ সন্তান নিত ভবিষ্যতের জন্য, এখন কেউ কেউ নেয় দল— দল মানে স্বপ্ন, সম্ভাবনা, ফান্ড, লাইভ শো আর আমন্ত্রণপত্র!



‘একটি দল, একটি স্বপ্ন, একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট’— এই নতুন স্লোগানেই জমে উঠেছে রাজনীতির হাট। কেউ ভাবছে না এসব দল আদৌ টিকে থাকবে কিনা। সবার লক্ষ্য আপাতত একটি ইউটিউব চ্যানেল, একটা লোগো, আর অন্তত দুটো প্রেস ব্রিফিং।


রাজনীতির এই ঋতুতে কেউ পেঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না, কেউ নিজ দলের সদস্যই সামলাতে পারছে না— তবে নতুন দল গড়ার উৎসাহে কারও ঘাটতি নেই! সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে যদি কারও মাথায় হঠাৎ দল গড়ার ভাব আসে, দুপুরের মধ্যেই তিনি ফেইসবুক লাইভে গিয়ে বলে দেন, “আজ আমরা ইতিহাস গড়লাম— নতুন রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম ‘জন-প্রেরণা মুক্তি আন্দোলন’ (জেপিএমএ) ঘোষণা করছি।”


এই সময়ে জন্ম নেওয়া সবচেয়ে আলোচিত রাজনৈতিক দলের নাম জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)— যাদের নেতৃত্বে রয়েছেন গত বছর গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া তুখোড় ছাত্রনেতারা। তাদের একজনের সফেদ পাঞ্জাবি ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। দামি ও সফেদ পাঞ্জাবি তিনি পরতে পারবেন না এমনটা যারা বলছেন, তারা কিন্তু কাজটা ঠিক করছেন না। তবে ওই সফেদ পাঞ্জাবিওয়ালার শত শত গাড়ি নিয়ে শক্তি প্রদর্শনের ঘটনাটা ভুলবার নয়।


নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন বাতিলের দাবিতে আয়োজিত সমাবেশে এনসিপির আরেক নেতার বক্তব্য রাখাটা ব্যাপক ক্ষুব্ধ করেছে বহু মানুষকে। তার এমন বক্তব্য রাখা নিশ্চয়ই কাউকে কাউকে খুশিও করছে। তবে দল হিসেবে এনসিপি নিজেদের যে মধ্যপন্থা অনুসারী বলে পরিচিত করাতে চায়, তা প্রশ্নবিদ্ধ করছে এই রকম নেতার ভূমিকা।


অনেকের কাছে এনসিপি মানে নতুন নতুন চমক। তারা সরকারে থেকেও নেই, আবার না থেকেও আছে! কখনও জুলাই ঘোষণাপত্রের জন্য আল্টিমেটাম দেওয়া, কখনও দুর্নীতির অভিযোগে দলের নেতাকে বিদায় করা, কখনও নিজেরা নিজেরা ফেইসবুকে ঝগড়া করার মধ্য বেশ আলোচনায় আছেন।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও