
লাইক-কমেন্টের ফাঁদে মৃত্যু: সোশ্যাল মিডিয়া যখন জীবনের হুমকি
প্রযুক্তির হাত ধরে জীবন বদলেছে। দূরত্ব ঘুচেছে, দ্রুততা বেড়েছে। কিন্তু সব উন্নতির মাঝেও কোথাও যেন জমে উঠেছে এক অদৃশ্য অন্ধকার। সোশ্যাল মিডিয়ার এই চমকপ্রদ জগৎ আজ শুধু যোগাযোগের নয়, হয়ে উঠছে মানসিক চাপ, আত্মবিশ্বাসহীনতা এমনকি মৃত্যুরও কারণ। ভার্চুয়াল স্বীকৃতির লোভে হারিয়ে যাচ্ছে বাস্তবতা। অনেকে নিজেদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তৈরি করছেন ভাইরাল কনটেন্ট, কেউ আবার হতাশ হয়ে ঠেলে দিচ্ছেন নিজেকে চরম পরিণতির দিকে।
অবাঞ্ছিত প্রতিযোগিতা: ভাইরাল হওয়ার লড়াই
কিছু সেকেন্ডের ভিডিওতে জনপ্রিয়তা পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা অনেকের মধ্যেই তীব্র। কে কতটা সাহসী, কে কতটা ‘ক্রেজি’ এই প্রতিযোগিতায় কখনো উঠে আসে ট্রেনের ছাদে চড়ার ভিডিও, কখনো চলন্ত গাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে নাচ, আবার কখনো নদী বা পাহাড়ের ধারে ঝুঁকিপূর্ণ স্টান্ট। উদ্দেশ্য একটাই ভিউ, লাইক ও ফলোয়ার। কিন্তু অনেক সময় এই বিপজ্জনক কন্টেন্ট শেষ হয় মৃত্যুর খবরে।
সম্প্রতি একটি হৃদয়বিদারক ঘটনা আমাদের সবাইকে ভাবতে বাধ্য করেছে। সম্প্রতি বাংলাদেশের এক তরুণ ট্রেনের সামনে গিয়ে ভিডিও করার চেষ্টা করছিলেন; যা তার জন্য প্রাণঘাতী পরিণতি ডেকে এনেছে। এই ঘটনা যেমন আমাদের শঙ্কিত করে, তেমনি এটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘লাইক’ এবং ‘কমেন্ট’ পাওয়ার তীব্র বাসনাকে কতটা বিপজ্জনক করে তুলছে, তার একটি ভীতিকর প্রমাণ।
সোশ্যাল মিডিয়ার প্রভাব এতটাই ব্যাপক যে অনেক তরুণ জীবনের সবচেয়ে মূল্যবান জিনিস, অর্থাৎ তাদের নিরাপত্তা ও সুস্থতা, ভুলভাবে ট্রেন্ডের জন্য বিপদে ফেলতে প্রস্তুত থাকে। অনেক সময় দেখা যায় লাইক এবং কমেন্টের আক্রমণাত্মক বাসনা তাদের এমন কিছু সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য করে, যা কখনোই নেওয়া উচিত নয়। সোশ্যাল মিডিয়ার আসক্তি আমাদের মানসিক স্বাস্থ্যকেও ক্ষতিগ্রস্ত করে, যেখানে অল্প সময়ের মধ্যে আমাদের শখ, আকাঙ্ক্ষা ও জীবনদর্শন এমন অবস্থা পর্যন্ত পৌঁছায় যে, তা মৃত্যুর দিকে নিয়ে যায়।
- ট্যাগ:
- লাইফ
- কমেন্ট
- সোশ্যাল মিডিয়া
- লাইক
- মৃত্যু ফাঁদ