You have reached your daily news limit

Please log in to continue


পাঠাগারে পোড়ানো অক্ষরের বয়ান

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কথা ধার করে বলতে হয়, “পাঠাগার শুধু বইয়ের সংগ্রহশালা নয়, বরং তা মানবসভ্যতার শত শত বছরের ইতিহাসের হৃদয়-স্পন্দন।” অর্থাৎ পাঠাগার তাবৎ বিশ্বপরিমণ্ডলের আদ্যোপান্তের জ্ঞান, বিজ্ঞান ও ইতিহাসের ধারক, বাহক, সংগ্রহ ও সংরক্ষণশালা। জ্ঞানচর্চার সঙ্গে সঙ্গে জ্ঞানের বিকাশে বিশ্ববিদ্যালয়ের চেয়ে কম ভূমিকা পাঠাগারের নয়, বরং পাঠাগার বা সমৃদ্ধ লাইব্রেরির ওপরেই একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা ও জ্ঞান চর্চার মানদণ্ড বিচার করা হয়।

এক্ষেত্রে প্রমথ চৌধুরীর কথা প্রণিধানযোগ্য। তিনি তার ‘বই পড়া’ প্রবন্ধে বলেছেন, “এ দেশে লাইব্রেরির সার্থকতা হাসপাতালের চাইতে কিছু কম নয়, এবং স্কুল-কলেজের চাইতে কিছু বেশি।” তিনি পাঠাগারকে স্কুল-কলেজের ওপরে স্থান দিয়েছেন। কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন, পাঠাগারে মানুষ “স্বেচ্ছায় স্বচ্ছন্দচিত্তে স্বশিক্ষিত হবার সুযোগ পায়; প্রতি লোক তার স্বীয় শক্তি ও রুচি অনুসারে নিজের মনকে নিজের চেষ্টায় আত্মার রাজ্যে জ্ঞানের পথে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে।”

সরকারি, বেসরকারি কিংবা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কেন্দ্রিক পাঠাগার গড়ে তোলার ইতিহাস নতুন নয়। বইপ্রেমী বা জ্ঞানপিপাসু মানুষদের সামাজিক উদ্যোগে পাঠাগার স্থাপন করার ইতিহাসও বেশ পুরনো। পাঠাগার প্রতিষ্ঠায় আদি থেকে যেমন একদল নিরলস পরিশ্রমী মানুষ কাজ করে গেছেন, তেমনি অন্য আরেকদল মানুষ পাঠাগারের দরজায় তালা ঝোলাতেও সংঘবদ্ধ হয়েছেন। এসব সংঘবদ্ধ মানুষের সংখ্যা খুব বেশি, এমন নয়। আবার পাঠাগারবান্ধব মানুষের সংখ্যাও অনেক হবে, তাও ভাবা যায় না। তবে এ বিষয়ে সমাজের বৃহৎ অংশের দৃষ্টিভঙ্গি ‘ভালো’, কিন্তু তারা এর সঙ্গে সেভাবে সম্পৃক্ত নন।

নানা সংকটের মুখোমুখি হয়েও অদ্যাবধি আমাদের মতো জ্ঞানচর্চা বিমুখ দেশে কতিপয় স্বপ্নবাজ মানুষ পাঠাগার আন্দোলনকে ধরে রেখেছেন। তথ্য প্রযুক্তি ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আসক্ত এই সময়েও তারা পাঠাগার ও বইপড়া নিয়ে নতুন প্রজন্মকে উদ্বুদ্ধ করার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন, এটাই বা কম কিসে! এটা নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবি রাখে। কিন্তু আমরা তার মূল্যায়ন তো দূরের কথা, মৌখিক প্রশংসাইবা করছি কতটুকু?

সমাজে পাঠাগার গড়ে তোলা সহজ, কিন্তু পাঠাগারকে পাঠাগার হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা খানিকটা কষ্টসাধ্য। বন্ধুর পথ জেনেই বইকে সঙ্গী করে আবদুল্লাহ আবু সায়ীদদের মতো মহৎ মানুষেরা বাংলাদেশে জ্ঞানভিত্তিক সমাজ নির্মাণের কথা ভেবেছেন এবং ওই অনুযায়ী নিজেদের কর্মপন্থা নির্ধারণ করেছেন। মাওলানা খেরাজ আলী ও পলান সরকার পাঠাগারকে নিয়ে যেতে চেয়েছেন মানুষের দুয়ারে, বই পৌঁছে দিয়েছেন ঘরে ঘরে। তাদেরই উত্তরাধিকার বহনকারী পাঠাগার সংগঠকরা নিভৃতে গ্রামে-গঞ্জে-শহরে বইপাঠ ও বইপাঠের উন্মুক্ত পাঠস্থান গড়বার লড়াই জারি রেখেছেন। উল্লেখযোগ্যভাবে সামাজিক, রাজনৈতিক ও রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা না থাকলেও দেশের কতিপয় বিদ্যোৎসাহী মানুষ পাঠাগার নিয়ে চিন্তার পাশাপাশি যথাযথ কাজটুকু করার চেষ্টা করছেন। এই প্রচেষ্টাকে যখন আমাদের সাধুবাদ জানানোর কথা, ওই সময়েই উল্টো আমাদের উদ্বেগ দিনকে দিন বাড়ছে। কেন জানি আমরা পাঠাগারগুলোর শুভার্থী না হয়ে, বিনাশকারী হিসেবে আবির্ভূত হচ্ছি। বিশেষত ধর্মাশ্রয়ী এবং রাজনৈতিক দূরভিসন্ধির কতিপয় মানুষ এর বিরুদ্ধে খড়গ হস্তে নেমেছে। পাঠাগার বিরোধিতা ইদানিং বেড়েছে।

জুলাই পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে পাঠাগারগুলোর নিরাপত্তা নিয়ে বেশ আশঙ্কা দেখা দেয়। গেল বছরের ৫ অগাস্ট থেকে দেশের নানা প্রান্তরে বেশ কিছু পাঠাগার ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের শিকার হওয়ায় উদ্বিগ্ন সময় পার করছেন পাঠাগার কর্মীরা। কয়েকটি ঘটনার কথা উল্লেখ না করলেই নয়। গণআন্দোলনে আওয়ামী সরকার পতনের পরপরই রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলার ‘বেলগাছি লাইব্রেরি ও পাঠক ক্লাব’ আক্রান্ত হয়। আক্রমণের শিকার হয় ১৮৮৫ সালে ত্রিপুরার রাজা বীরচন্দ্র মানিক্য বাহাদুরের দান করা জমিতে প্রতিষ্ঠিত কুমিল্লার কান্দিরপাড়ের টাউন হল গণপাঠাগার। ভাঙচুর ও লুটপাটের শিকার হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলের ‘সত্যেন বোস পাঠাগার’।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন