নির্বাচন পর্যন্ত সেনাবাহিনীর মাঠে থাকা প্রয়োজন

কালের কণ্ঠ ড. এস এম জাহাঙ্গীর আলম প্রকাশিত: ৩০ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:২৬

দেশের বিভিন্ন স্থানে ছিনতাই-চাঁদাবাজি চলছেই। আবার খুনখারাবি তো আছেই। দেশের ব্যবসায়ী সমাজ আইন-শৃঙ্খলার অবনতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। এ ছাড়া সাধারণত মানুষও অশান্তিতে আছে।

এমন অবস্থায় আইন-শঙ্খলা রক্ষায় সেনাবাহিনী মাঠে না থাকলে অবস্থা আরো মারাত্মক আকার ধারণ করত। সেনাবাহিনী দেশের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় বাংলাদেশ অন্যান্য সব আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সমন্বিত উদ্যোগে বিভিন্ন ধরনের অপরাধ দমনে সম্পৃক্ত আছে। দেশের সর্বত্রই সেনাবাহিনী আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় কাজ করে যাচ্ছে। এরই মধ্যে কয়েক হাজার অপরাধীকে গ্রেপ্তার করেছে।

সম্প্রতি সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে (গত ১৭ এপ্রিল) এক সংবাদ সম্মেলনে কনেল মো. শফিকুল ইসলাম জানান, দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সরকারের নির্দেশিত দায়িত্বই পালন করে যাচ্ছে সেনাবাহিনী।


রাজধানীসহ দেশের সড়ক-মহাসড়কগুলোতে অবরোধ থাকলে অর্থনীতির সব সেক্টরেই নেতিবাচক প্রভাব পড়ে উল্লেখ করে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, সে ক্ষেত্রে সেনাবাহিনী চেষ্টা করে যত কম সময়ের মধ্যে অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে সঙ্গে নিয়ে অবরোধটাকে মুক্ত করার জন্য। গত দুই মাসে সেনাবাহিনীর হাতে গ্রেপ্তারকৃতদের তথ্য তুলে ধরে জানানো হয়, গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে কিশোর গ্যাং, তালিকাভুক্ত অপরাধী, মাদক ব্যবসায়ী, অপহরণকারী, চোরাচালানকারী, প্রতারক ও দালালচক্র, চাঁদাবাজ, ডাকাত, ছিনতাইকারীরা রয়েছে। অভিযানের সময় সেনাবাহিনী দুই মাসে ৩২০টি অবৈধ অস্ত্র ও ৫৬৪ রাউন্ড গোলাবারুদ উদ্ধার করেছে।

৫ আগস্টের পর থেকে এ পর্যন্ত মোট ৯ হাজার ৩৭০টি অবৈধ অস্ত্র ও দুই লাখ ৮৫ হাজার ৫২ রাউন্ড গোলাবারুদ উদ্ধার করা হয়েছে।



কর্নেল মো. শফিকুল ইসলাম আরো জানান, সেনাবাহিনী গত দুই মাসে ২৩২টি বিভিন্ন ধরনের বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেছে। যার মধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সংক্রান্ত ঘটনা ছিল ৩৭টি, সরকারি সংস্থা ও অফিস সংক্রান্ত ২৪টি, রাজনৈতিক কোন্দল ৭৬টি এবং অন্যান্য বিভিন্ন ধরনের ঘটনা ছিল ৯৫টি।  আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার পাশাপাশি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিভিন্ন সময়ে যাঁরা আহত হয়েছেন, তাঁদের সুচিকিৎসার জন্য সেনাবাহিনী অদ্যাবধি চার হাজার ৩৪০ জনকে দেশের বিভিন্ন সিএমএইচে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছে। তাঁদের মধ্যে ৪৩ জন এখনো চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহতদের সম্মানে সেনাবাহিনী গত ২৩ মার্চ সেনামালঞ্চে ইফতার ও দোয়া মাহফিল আয়োজন করে। ২৫ মার্চ আর্মি মাল্টিপারপাস কমপ্লেক্সে আহত এবং শহীদ পরিবারের সম্মানে সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়। সেনাবাহিনী প্রধান সেখানে উপস্থিত থেকে সবার খোঁজখবর নেন ও চিকিৎসাসহ সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন।


কর্নেল শফিকুল ইসলাম জানান, বিগত সময়ে শিল্পাঞ্চলগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিতে সেনাবাহিনী ১৩৭টি ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেছে এবং ৩১ বার বিভিন্ন মূল সড়ককে অবরোধ থেকে অবমুক্ত করেছে। শিল্পাঞ্চলে জাতীয় নিরাপত্তা বিধানের সময় গত ৯ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের রবিন টেক্স গার্মেন্টসে অস্থিরতা প্রশমনকালে কিছু গার্মেন্টস শ্রমিকের ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনায় ২৪ জন সেনা সদস্য আহত হন। আহতদের মধ্যে ২০ জনকে সিএমএইচে ভর্তি হয়ে বিভিন্ন মেয়াদে চিকিৎসা নিতে হয়েছে। গার্মেন্টসে ঈদ-পূর্ব অস্থিরতা মোকাবেলায় সেনাবাহিনী মালিকপক্ষ, শ্রমিকপক্ষ, মন্ত্রণালয়, শিল্পাঞ্চল পুলিশ ও বিজিএমইএসহ সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে সমন্বয় সাধন করে শ্রমিকদের বেতন-ভাতা পরিশোধে বিশেষ ব্যবস্থা করে, যা শ্রমিকদের মাঝে ঈদ-পূর্ববর্তী গতানুগতিক অস্থিরতা প্রশমনে অত্যন্ত কার্যকরী ভূমিকা রাখে।


এই সেনা কর্মকর্তা জানান, ঈদুল ফিতরে ঘরমুখো মানুষের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ও সুশৃঙ্খল যানবাহন চলাচল নিশ্চিত করতে সেনাবাহিনী ঈদের আগে ও পরে মিলে দুই সপ্তাহের বিশেষ কার্যক্রম গ্রহণ করে। এর অংশ হিসেবে জাতীয় মহাসড়কগুলোতে নির্বিঘ্নে যান চলাচল নিশ্চিত করতে ঢাকাসহ দেশের সব জেলার বাসস্ট্যান্ড, রেলস্টেশন এবং লঞ্চ টার্মিনাল ও সড়কে দিনরাত টহল পরিচালনা, স্পর্শকাতর স্থানে চেকপোস্ট স্থাপন এবং জনগণের মধ্যে সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। যা মানুষের জান-মালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। ফলে সড়ক দুর্ঘটনাসহ অন্যান্য অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড গত বছরের তুলনায় অনেকাংশে হ্রাস পায়। যা জনসাধারণকে নির্বিঘ্নে গন্তব্যে পৌঁছানোসহ পরিবার-পরিজনের সঙ্গে শান্তিপূর্ণ ও আনন্দঘনভাবে ঈদ উদযাপনে সহায়ক ভূমিকা রাখে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

এই সম্পর্কিত

আরও