বাঙালির ঐতিহ্যের মধ্যে অন্যতম হলো, দুপুরে খাওয়ার পর একটু পান মুখে দেওয়া। এর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে এক ধরনের মধুর স্মৃতি। বয়স্করা এক সময় সাজিয়ে রাখতেন পানপাতা, হাত পাতলেই হাসিমুখে দিতেন পান।
এই পানপাতা একটু ভিন্নভাবে কীভাবে খেতে পারেন, তা জানাব আজ। জেনে নিন মন জুড়ানো পানপাতার শরবতের রেসিপি। তাপমাত্রা যতই বেড়ে যাক না কেন, এর এক চুমুকেই ফিরে আসবে প্রশান্তি।
উপকরণ
- দুধ: ১ লিটার
- মিষ্টি পানপাতা: ৮ টি
- মৌরি: ৩ টেবিল চামচ
- তালমিছরি: ১/২ কাপ
- গুলকান্দ (এক ধরনের পান মসলা): ৪ টেবিল চামচ
- পেস্তা বাদাম: ২ টেবিল চামচ
- খুরমা: ৮-১০টি
প্রণালি
প্রথমেই মিষ্টি পানপাতা ভালোভাবে ধুয়ে নিন। পাতা কুচিয়ে রাখতে হবে, যাতে এর রং এবং গন্ধ পুরোপুরি বের হতে পারে। দুধ জ্বাল করে ফ্রিজে ঠান্ডা করে রাখুন। শরবতের জন্য ঠান্ডা দুধ দরকার, কারণ গরমে ঠান্ডা দুধের মতো কিছুই শান্তি দিতে পারে না। মৌরি এক ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখুন। এটি নরম হয়ে গেলে ব্লেন্ড করলে সহজেই পেস্ট হয়ে যাবে।
এখন একটি ব্লেন্ডারে পানপাতা কুচি, ভেজানো মৌরি, পেস্তা বাদাম, গুলকান্দ, খুরমা এবং তালমিছরি দিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করুন। পেস্ট তৈরির সময় যদি পানি প্রয়োজন হয়, তবে ঠান্ডা পানি ব্যবহার করবেন। এতে পানপাতা দিয়ে তৈরি শরবত হবে আরও বেশি সতেজ ও সবুজ। বলে রাখি, এই পেস্টটি আপনি চাইলে ফ্রিজে রেখে সাত দিন পর্যন্ত সংরক্ষণ করতে পারবেন।
পেস্ট তৈরির পর ঠান্ডা দুধের সঙ্গে এই পেস্ট মিশিয়ে আবার ব্লেন্ড করুন এবং ছেকে নিন। গ্লাসে বরফ কুচি দিয়ে শরবত ঢালুন এবং তার ওপর গোলাপের পাপড়ি ছড়িয়ে সাজিয়ে পরিবেশন করুন। দেখতে আরও বেশি সুন্দর লাগবে।
আপনার কাছে যদি পান মসলা গুলকান্দ না থাকে, তবে চিন্তা করবেন না। গোলাপের পাপড়ি, চিনি, এলাচ, মৌরি, এবং খেজুর একসঙ্গে থেঁতো করে নিলেই তৈরি হয়ে যাবে আপনার নিজের হাতে তৈরি গুলকান্দ বা পান মসলা। এটি হবে সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক এবং আদি স্বাদের।
এভাবে যদি পানপাতার শরবত তৈরি করেন, তাহলে গরমের মধ্যে এক ভিন্ন অভিজ্ঞতার স্বাদ নিতে পারেন। এই শরবত শুধু শরীরকেই নয়, মনকেও প্রশান্তি দেবে।