
কিশোর-কিশোরীদের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে সোশ্যাল মিডিয়া: গবেষণা
আধুনিক যুগে ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, ইউটিউব, এক্স (সাবেক টুইটার) এবং টিকটকের মতো সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম কিশোর-কিশোরীদের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছে। এই মাধ্যমগুলোর সম্ভাব্য ক্ষতির দিক নিয়ে উদ্বেগ থাকলেও সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ার বহুমাত্রিক প্রভাব সামনে এনেছে গবেষণা প্রতিষ্ঠান পিউ রিসার্চ সেন্টার। সংযোগ, সৃজনশীলতা, মানসিক স্বাস্থ্যসহায়তা এবং সম্ভাব্য নেতিবাচক দিকগুলোর এক জটিল সমন্বয়ের চিত্র তুলে ধরেছে প্রতিষ্ঠানটি। এতে বোঝা যায়, সোশ্যাল মিডিয়া তরুণদের একদিকে যেমন ক্ষমতায়ন করে, অন্যদিকে তা চ্যালেঞ্জও তৈরি করে।
পিউ রিসার্চ সেন্টারের সমীক্ষা অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের ৭৪ শতাংশ কিশোর-কিশোরী জানিয়েছে, সোশ্যাল মিডিয়া তাদের পরিবার ও বন্ধুদের সঙ্গে আরও বেশি সংযুক্ত থাকতে সাহায্য করে। দূরত্ব থাকা সত্ত্বেও এই প্ল্যাটফর্মগুলো সম্পর্ক রক্ষা ও নতুন সম্পর্ক তৈরিতে ভূমিকা রাখছে। একই সঙ্গে, এই মাধ্যমগুলো সৃজনশীলতার প্রকাশের ক্ষেত্রেও বড় ভূমিকা রাখছে বলে মনে করছে ৬৩ শতাংশ কিশোর–কিশোরী। তারা বলেছে, সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে নিজেদের প্রতিভা, চিন্তা ও মতামত প্রকাশ করা সহজ হয়েছে। প্রান্তিক গোষ্ঠীর তরুণদের ক্ষেত্রেও সোশ্যাল মিডিয়া একটি ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে। বিশেষ করে বিভিন্ন বর্ণের এলজিবিটিকিউ প্লাস তরুণদের জন্য টিকটক, ডিসকর্ড ও ইনস্টাগ্রামের মতো প্ল্যাটফর্মগুলো নিরাপদ পরিবেশ গড়ে তুলেছে। ট্রেভর প্রজেক্টের এক পৃথক সমীক্ষায় দেখা গেছে, এই মাধ্যমগুলোতে তারা নিজেদের কথা শোনাতে ও বোঝাতে সক্ষম হচ্ছে, যা তাদের মানসিক সুস্থতায় উল্লেখযোগ্য অবদান রাখছে।
সাধারণত, সোশ্যাল মিডিয়াকে মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর বলে মনে করা হয়। তবে, এই ধারণার বিপরীতে পিউ রিসার্চের প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ৩৪ শতাংশ কিশোর মানসিক স্বাস্থ্যসংক্রান্ত তথ্য জানার জন্য সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে এবং ৬৩ শতাংশ মনে করে যে এটি এমন তথ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস। এই তথ্যগুলো ইঙ্গিত দেয়, মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে যে সামাজিক সংকোচ রয়েছে, সোশ্যাল মিডিয়া তা ভাঙতে সাহায্য করছে। অর্থাৎ, সোশ্যাল মিডিয়া মানসিক স্বাস্থ্যবিষয়ক সচেতনতা বৃদ্ধিতে ও সহায়তা পাওয়ার ক্ষেত্রে সহায়ক হতে পারে।