কমিশন প্রস্তাবিত সাংবাদিকতার অধিকার সুরক্ষা অধ্যাদেশ: প্রেক্ষাপট ও প্রয়োজনীয়তা

প্রথম আলো মামুন অর রশিদ প্রকাশিত: ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ১৫:২৯

কোনো রাজনৈতিক দলের বিবেকবান কট্টর সমর্থকও তাঁর দলের বিপক্ষে যাওয়া ঘটনার পক্ষপাতহীন সংবাদ গণমাধ্যমে দেখতে চান। গণমাধ্যমে সব সময় প্রকৃত সত্য উঠে আসবে—এটিই প্রত্যাশিত। তবে গণমাধ্যমে সমাজের পক্ষপাতহীন চিত্র তুলে ধরা মোটেও সহজ কাজ নয়। এর সঙ্গে অনেকগুলো বিষয় জড়িত। গণমাধ্যমের প্রধান অংশীজন হলো সাংবাদিক। সাংবাদিক নিরপেক্ষ, চাপমুক্ত ও পেশাদার না হলে তাঁর পক্ষে কোনো ঘটনার সত্য বিবরণী প্রকাশ করা সম্ভব নয়। দুঃখজনক হলেও সত্য, বাংলাদেশে এখনো সাংবাদিকতা পেশাটি স্বাধীন কিংবা চাপমুক্ত হতে পারেনি।


এখনো পেশাগত কর্মে নিয়োজিত সাংবাদিকেরা প্রায়ই সহিংসতা, হুমকি ও হয়রানির শিকার হচ্ছেন। বিষয়টি বিবেচনা করে গণমাধ্যম সংস্কার কমিশন ‘সাংবাদিকতার অধিকার সুরক্ষা অধ্যাদেশ, ২০২৫’ জারির প্রস্তাব করেছে। কমিশন স্বপ্রণোদিত হয়ে এই অধ্যাদেশের খসড়াও কমিশনের প্রতিবেদনে সংযুক্ত করেছে। সাংবাদিকতা সুরক্ষা আইন কেন প্রয়োজন, তার সুনির্দিষ্ট কারণ উঠে এসেছে গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে।


বস্তুনিষ্ঠ তথ্য প্রকাশ এবং বাক্‌স্বাধীনতার অধিকার চর্চার কারণে বিভিন্ন সময় বাংলাদেশের সাংবাদিকদের হয়রানি ও শারীরিক আক্রমণের শিকার হতে হয়েছে। সাংবাদিকদের পেশাগত কাজে বাধা দিতে হুমকি, ভীতিপ্রদর্শন, আইনগত হয়রানির মতো ঘটনা প্রায়ই ঘটছে। এসব বেআইনি কার্যক্রম স্বাধীন সাংবাদিকতাকে মারাত্মকভাবে বাধাগ্রস্ত করে।


ক্ষমতাসীন দলের সদস্য কিংবা প্রভাবশালীদের হুমকি ও হামলার ক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী প্রায়ই কোনো সুরক্ষা দেয় না। আর যেখানে রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন সংস্থা বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য জড়িত থাকেন, সেখানে প্রশাসনও নিষ্ক্রিয় দর্শকের ভূমিকা পালন করে এবং আদালতেও প্রতিকার কিংবা সুরক্ষা মেলে না। গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে এসব আশঙ্কার কথা উঠে এসেছে।



দুঃখজনক হলেও সত্য, হত্যার শিকার হওয়া সাংবাদিকদের অধিকাংশের পরিবারই বিচার পায়নি। এক যুগের বেশি সময় সাগর-রুনি দম্পতির বহুল আলোচিত হত্যাকাণ্ডের বিচার না হওয়ায় জনগণের মধ্যে ধারণা তৈরি হয়েছে যে সাংবাদিকেরা মারলে কিছুই হয় না।


গত দেড় দশকে সাংবাদিকেরা তাঁদের অনলাইন ও অফলাইন রিপোর্টিংয়ের জন্য বিভিন্নভাবে যেমন আক্রমণের শিকার হয়েছেন, তেমনি গ্রেপ্তার ও মিথ্যা মামলায় জেলও খেটেছেন। আলোকচিত্র সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজল, সাংবাদিক-গবেষক মোবাশ্বের হাসান, সাংবাদিক গোলাম সারোয়ারসহ বেশ কয়েকজন সাংবাদিক বিভিন্ন মেয়াদে গুমের শিকার হয়েছেন। এ ছাড়া আড়ি পাতার প্রযুক্তি ব্যবহার ও নজরদারির কারণে সাংবাদিকদের ব্যক্তিগত গোপনীয়তার অধিকার মারাত্মকভাবে ক্ষুণ্ন হয়েছে।


সাংবাদিকদের নিরাপত্তা প্রদান একটি বৈশ্বিক বিষয়। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে সাংবাদিকদের আইনগত সুরক্ষা প্রদানে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে এবং হচ্ছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের মিডিয়া ফ্রিডম অ্যাক্ট এ ক্ষেত্রে উল্লেখ্য। এ আইনে গণমাধ্যম ও সাংবাদিকদের সঙ্গে পেশাগতভাবে সম্পর্কিত ব্যক্তিদের ওপর নজরদারি, বিশেষ করে গতিবিধি অনুসরণ ও ব্যক্তিগত যোগাযোগে আড়ি পাতার প্রযুক্তি ব্যবহারের বিরুদ্ধে সুরক্ষা দেওয়া হয়েছে।


শ্রীলঙ্কার গণ–অভ্যুত্থানপরবর্তী সরকার নতুন যে গণমাধ্যম নীতি গ্রহণ করছে, তাতে শারীরিক, যৌন, মানসিক, মৌখিক লাঞ্ছনা (গালাগাল) এবং আইনগত হয়রানি থেকে সাংবাদিকদের সুরক্ষা পাওয়ার অধিকার স্বীকৃতি পেয়েছে। পাকিস্তানেও মিডিয়া ফ্রিডম প্রটেকশন অ্যাক্ট চূড়ান্ত হওয়ার পর পার্লামেন্টে পাস হওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও