ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচারের জনক শেখ মুজিব : শেখ হাসিনা সেটিকে লৌহ কঠিন করেছেন

যুগান্তর মোবায়েদুর রহমান প্রকাশিত: ১৬ মার্চ ২০২৫, ১০:৩৮

বিগত সাড়ে ১৫ বছর বাংলাদেশের মানুষ এক নিষ্ঠুর ফ্যাসিবাদী স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করেছেন। এই সাড়ে ১৫ বছরে সেই সংগ্রাম সফল না হলেও সেই সংগ্রামে প্রতিটি বিরোধীদলীয় নেতাকর্মী অব্যাহতভাবে পিষ্ট হয়েছেন জুলুমের স্টিমরোলারে। এই সাড়ে ১৫ বছরে বিএনপি, জামায়াত, গণতন্ত্র মঞ্চসহ বিরোধীদলীয় অসংখ্য নেতাকর্মী গ্রেফতার হয়েছেন, লাখ লাখ নেতাকর্মীর মাথায় সর্বক্ষণ হুলিয়া জারি রয়েছে। এসব বিরোধী দলের এমন কোনো নেতা নেই, যাকে কোনো না কোনো সময় অন্যায়ভাবে বিনা অভিযোগে কারাগারের অন্ধ প্রকোষ্ঠে থাকতে হয়নি। অন্যদিকে ২০১২ সাল থেকে সৃষ্টি হয়েছে অসংখ্য আয়নাঘর। জার্মান ডিক্টেটর হিটলারের কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পের আদলে সৃষ্টি করা হয়েছে এসব আয়নাঘর। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিবের বক্তব্য মোতাবেক সাড়ে ৩ হাজার মানুষ এসব আয়নাঘরে মধ্যযুগীয় বর্বরতার শিকার হয়েছেন। গুম কমিশনের চেয়ারম্যানের বক্তব্য মোতাবেক এখনো ৩৩৩ জন হতভাগ্য আদম সন্তান ফিরে আসেননি। সম্ভবত তারা আর এই দুনিয়ায় নেই।


এই নিকৃষ্ট ফ্যাসিবাদী স্বৈরাচারী শাসন শুধু শেখ হাসিনাই চালননি, বরং এই ফ্যাসিবাদী স্বৈরাচার, গুম এবং বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড শুরু করেছিলেন তার পিতা শেখ মুজিবুর রহমান। আজ যেটা র‌্যাব, সেটি শেখ মুজিবের আমলে সৃষ্ট রক্ষীবাহিনীর নবতর সংস্করণ। ভারতের সেন্ট্রাল রিজার্ভ পুলিশের (সিআরপির) আদলে সৃষ্ট বাংলাদেশের রক্ষীবাহিনীকে ট্রেনিং দিয়েছেন ভারতের সেনা কমান্ডার জেনারেল উবান। রক্ষীবাহিনীর হাতে জাসদ, তোয়াহার কমিউনিস্ট পার্টি, আব্দুল হকের কমিউনিস্ট পার্টি, সিরাজ সিকদারের সর্বহারা পার্টি, নিষিদ্ধ ঘোষিত মুসলিম লীগ, নেজামে ইসলাম ও জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীসহ ২৭ হাজার নেতাকর্মীকে ঠান্ডা মাথায় বিচারবহির্ভূতভাবে হত্যা করা হয়েছে শেখ মুজিবের আমলে।


আমি আজকের কলামে দেখাতে চেষ্টা করব শেখ মুজিব শুধু একজন স্বৈরাচারী ডিক্টেটরই ছিলেন না, তিনি রাজনৈতিক বক্তব্য প্রদানেও মিথ্যাচারের আশ্রয় নিয়েছিলেন। হিটলার যেমন গণতন্ত্রের পথ ধরে ক্ষমতায় গিয়ে সেই গণতন্ত্রেরই কণ্ঠ রোধ করেছিলেন, তেমনি শেখ মুজিবও গণতন্ত্রের পথ ধরে ক্ষমতায় গিয়ে গণতন্ত্রের টুঁটি সম্পূর্ণ চেপে ধরেন। পাকিস্তান সৃষ্টির আগে এবং বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর শেখ মুজিব যেসব উক্তি করেছেন, সেগুলোর একটির সঙ্গে আরেকটি সম্পূর্ণ বিপরীত। আসুন, আমরা দেখি পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার আগে এবং বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর তার চরম পরস্পরবিরোধী উক্তি।



শেখ মুজিব তার ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনীর’ ১৫ নং পৃষ্ঠায় লিখেছেন, “তখন রাজনীতি শুরু করেছি ভীষণভাবে। সভা করি, বক্তৃতা করি। খেলার দিকে আর নজর নাই। শুধু মুসলিম লীগ, আর ছাত্রলীগ। পাকিস্তান আনতেই হবে, নতুবা মুসলমানদের বাঁচার উপায় নাই। খবরের কাগজ ‘আজাদ’, যা লেখে তাই সত্য বলে মনে হয়।” আলোচ্য পুস্তকের ২১ নং পৃষ্ঠায় শেখ মুজিবের পিতা তাকে বলেছিলেন, ‘বাবা রাজনীতি কর আপত্তি করব না, পাকিস্তানের জন্য সংগ্রাম করছ, এ তো সুখের কথা, তবে লেখাপড়া করতে ভুলিও না। আমার মনে হয়, পাকিস্তান না আনতে পারলে মুসলমানদের অস্তিত্ব থাকবে না।’


পাকিস্তান কায়েমের পক্ষে শেখ মুজিব রীতিমতো ফ্যানাটিক ছিলেন। আলোচ্য পুস্তকের ৩৬ পৃষ্ঠায় বলা হয়েছে, ‘অখণ্ড ভারতে যে মুসলমানদের অস্তিত্ব থাকবে না এটা আমি মনপ্রাণ দিয়ে বিশ্বাস করতাম। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে হিন্দু নেতারা খেপে গেছেন কেন? ভারতবর্ষেও মুসলমান থাকবে এবং পাকিস্তানেও হিন্দুরা থাকবে। সকলেই সমান অধিকার পাবে। অনেক সময় হিন্দু বন্ধুদের সাথে ঘণ্টার পর ঘণ্টা এ নিয়ে আলোচনা হত। কিছুতেই তারা বুঝতে চাইত না। ১৯৪৪-৪৫ সালে ট্রেনে, স্টিমারে হিন্দু ও মুসলমানদের মধ্যে তুমুল তর্ক-বিতর্ক হত। সময় সময় এ বিতর্ক এমন পর্যায়ে আসত যে, মুখ থেকে হাতের ব্যবহার হবার উপক্রম হয়ে উঠত। এখন আর মুসলমান ছেলেদের মধ্যে মতবিরোধ নাই। পাকিস্তান আনতে হবে, এই একটাই স্লোগান সকল জায়গায়।’


সেই শেখ মুজিব বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর পাকিস্তান প্রতিষ্ঠায় তার ভূমিকা সম্পর্কে সম্পূর্ণ ডিগবাজি মারেন। ১৯৭৪ সালের ১৮ জানুয়ারি আওয়ামী লীগের দ্বি-বার্ষিক কাউন্সিল অধিবেশনে তিনি সবাইকে চমকে দিয়ে তার ভাষণে বলেন, ‘১৯৪৭ সালে ফাঁকির স্বাধীনতা আমাদের উপর চাপিয়ে দেয়া হয়। ১৯৪৭ সালে নতুন করে বাংলাকে পরাধীন করে। বাংলাদেশ পাকিস্তানের কলোনিতে পরিণত হয়। ১৯৪৭ সালের পূর্বে আমরা যারা স্বাধীনতা সংগ্রামে যোগদান করেছিলাম, তখন আমাদের স্বপ্ন ছিল আমরা স্বাধীন হবো। কিন্তু সাতচল্লিশ সালেই আমরা বুঝতে পেরেছিলাম যে, আমরা নতুন করে পরাধীনতার শৃঙ্খলে আবদ্ধ হয়েছি।’

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও