১৯৭১: ইতিহাসে বিস্মৃত অন্যরকম মুক্তিযোদ্ধা

বিডি নিউজ ২৪ সালেক খোকন প্রকাশিত: ০৯ মার্চ ২০২৫, ২১:৪১

শুধু অস্ত্র হাতেই নয়, একাত্তরে নানাজন নানানভাবে মুক্তিযুদ্ধকে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন, ত্বরান্বিত করেছিলেন স্বাধীনতা অর্জনকে। ইতিহাসে প্রায় বিস্মৃত তেমন কিছু যোদ্ধার কথা তুলে ধরতেই এ লেখার অবতারণা।


মুক্তিযুদ্ধ তখন চলছে। নিরীহ নিরপরাধ বাঙালিদের নির্মমভাবে হত্যা করছে পাকিস্তানি সেনারা। তাদের ভয়ে জীবন নিয়ে দলে দলে মানুষ আশ্রয় নেয় সীমান্তের ওপারে, ভারতে। খোলা হয় শরণার্থী শিবির। প্রায় এক কোটি বাঙালিকে বাঁচিয়ে রাখার দায়িত্ব এসে পড়ে ইন্দিরা গান্ধী সরকারের ওপর। ভারতের কিছু রাজ্যের মানুষ এতে নাখোশ হয়। শরণার্থীদের ফিরিয়ে দিতে আর মুক্তিযুদ্ধে সাহায্য না করতে নানাভাবে তারা সরকারকে চাপ দিতে থাকে।


ঠিক ওই সময়েই পরিকল্পনা হয় বাংলাদেশ থেকে দিল্লি পর্যন্ত ‘বিশ্ব বিবেক জাগরণ পদযাত্রা’ আয়োজনের। এতে অংশ নেন বিভিন্ন জেলা থেকে আগত বাংলাদেশের ৩৮ জন শিক্ষিত যুবক। ভারত সরকারের কাছ থেকে স্বীকৃতি আদায়, শেখ মুজিবুর রহমানের মুক্তির দাবিতে বিভিন্ন দূতাবাসে স্মারকলিপি প্রদান, পাকিস্তানি সেনা কর্তৃক গণহত্যা ও হত্যাযজ্ঞের বর্ণনা তুলে ধরে স্বাধীনতার পক্ষে জনমত গড়ে তোলাই ছিল এর উদ্দেশ্য।


পদযাত্রীরা বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে জনসভা করতেন। গণহত্যা সম্পর্কে নিজেদের অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে আহ্বান জানাতেন বাংলাদেশের পক্ষে দাঁড়াতে। তাদের সকলের হাতে হাতে শোভা পেত— ‘আমাদের এক কথা, বাংলাদেশের স্বাধীনতা’, ‘মুজিবের মুক্তি চাই’ সংবলিত প্ল্যাকার্ড ও জাতীয় পতাকা। ১৫ অক্টোবর থেকে শুরু হয়ে পদযাত্রাটি চলে ১৭ ডিসেম্বর ১৯৭১ পর্যন্ত। দেশি-বিদেশি গণমাধ্যমগুলোতে গুরুত্বের সঙ্গে প্রচারিত হতে থাকে পদযাত্রার খবর। ওই খবর ব্যাপক আলোড়নও তোলে। এভাবে মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার পক্ষে বিশ্ব জনমত গড়তে ‘বিশ্ব বিবেক জাগরণ পদযাত্রা’ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল।



পদযাত্রী দলের ডেপুটি লিডার-০২ ছিলেন কামরুল আমান। বর্তমানে থাকেন ঢাকার মিরপুরে। বাবার চাকরির সুবাদে একাত্তরে ছিলেন নারায়ণগঞ্জে। পাকিস্তানি সেনাদের গণহত্যা আর বর্বরতা তিনি দেখেছেন খুব কাছ থেকে। পাকিস্তানি আর্মিরা নারায়ণগঞ্জ দখলে নিলে কামরুল চলে যান কলকাতায়। পরে কাজ শুরু করেন যশোরের বেনাপোলে, বাংলাদেশ ভলান্টিয়ার সার্ভিস কোরে। তাদের মাধ্যমেই তিনি রিক্রুট হন ‘বিশ্ব বিবেক জাগরণ পদযাত্রা’র দলে।


তার ভাষায়, “বাংলাদেশের অস্থায়ী সরকারের সঙ্গে পদযাত্রাটি এগিয়ে নেওয়ার সার্বিক পরিকল্পনায় যুক্ত হয় ‘অখিল ভারত শান্তি সেনা মণ্ডল’ নামের একটি সংগঠন। এটি গঠিত হয় মহাত্মা গান্ধীর অহিংস নীতিতে বিশ্বাসী আটটি সংগঠনের সম্মিলনে। এদের সহযোগিতা করে গান্ধী পিস ফাউন্ডেশন। পদযাত্রার মূল উদ্যোক্তা ভারতের অহিংস সর্বদয় নেতা জয়প্রকাশ নারায়ণ এবং আহ্বায়ক ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের দীনেশ চন্দ্র মুখার্জি।


বনগ্রাম থেকে ১৪ অক্টোবর ১৯৭১-এ আমরা ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার বহরমপুরে পৌঁছি। সেখানে ঐতিহাসিক পলাশীর প্রান্তরের মাটি ছুঁয়ে স্বাধীনতার জন্য শপথ নিই।”


পদযাত্রীদের নাম জানালেন কামরুল, “লিডার আবদুল খালেক। তিনি ছিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিজিক্সের ছাত্র। ডেপুটি লিডার-০১ খুলনার একরামুল ইসলাম। আমি ছিলাম ডেপুটি লিডার-০২। বাকিরা হলেন— রফিকুল ইসলাম, খলিলুর রহমান, মুরারী মোহন সরকার, বিনয় কুমার বিশ্বাস, আজিজুর রহমান, মোহাম্মদ আবু বকর, পরিতোষ কুমার মণ্ডল, আবদুল লতিফ (১), আবদুল লতিফ (২), সৈয়দ রবিউল হক, দুলাল মণ্ডল, ওহিদুজ্জামান চাকলাদার, তুষার কান্তি সুর, শেখ আনোয়ার কামাল, সুভাষ চন্দ্র বসু, অমিত দেব, ক্ষীতিশ চন্দ্র মণ্ডল, আনন্দ মোহন রায়, প্রদীপ কুমার শীল, আবদুস সামাদ, আনোয়ারুল কাদির, পরিতোষ কান্তি কবিরাজ, দেলোয়ার হোসেন, অনিল কুমার বিশ্বাস, মইন উদ্দিন, সহিদুল ইসলাম, বিশ্বনাথ সাহা, সমীর কুমার বসু, ওমেদ আলী, আবু বকর সিদ্দিকী, শামসুল হক, মতিলাল দাস, অহিভূষণ চক্রবর্তী, সনৎ কুমার বিশ্বাস, আশরাফ হোসেন ও দিলীপ কুমার নাগ।”

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও