
বনরক্ষীদের ঘুষের বলি টেংরাগিরি বনাঞ্চল ও দেশের গুরুত্বপূর্ণ মৎস্যভান্ডার
বরগুনার তালতলী উপজেলার সংরক্ষিত টেংরাগিরি বনাঞ্চলের বনরক্ষীদের বিরুদ্ধে ঘুষের বিনিময়ে বনের গাছ কাটতে দেওয়া এবং বনসংলগ্ন নদীতে অবৈধ খুঁটা জাল দিয়ে মাছ শিকারে সহায়তা করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্থানীয় জেলেদের সঙ্গে ঘুষের টাকার দর-কষাকষি নিয়ে বনরক্ষীদের একটি ভিডিও সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনার পর সরেজমিনে গিয়ে এ অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে।
টেংরাগিরি বনাঞ্চলটি সুন্দরবনের পর দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শ্বাসমূলীয় বনাঞ্চল। বনটি বরগুনার তালতলী থেকে কুয়াকাটা পর্যন্ত বিস্তৃত। এই বনাঞ্চলের আয়তন ১৩ হাজার ৬৪৪ একর। দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম এই শ্বাসমূলীয় বন স্থানীয়ভাবে ফাতরার বন নামে পরিচিত। পায়রা, বলেশ্বর ও বিষখালী—দক্ষিণের এই তিন বড় নদ-নদী এখান থেকে বঙ্গোপসাগরে পতিত হয়েছে। দেশের নদ-নদীতে সাগর থেকে উঠে আসা বিভিন্ন প্রজাতির মাছের ৬০ ভাগ এখান দিয়ে আসা-যাওয়া করে। এই বনাঞ্চলের ১ দশমিক ৯ কিলোমিটার দূরে গোড়াপদ্মা উপকূলীয় সবুজবেষ্টনী এবং ৮ দশমিক ৫ কিলোমিটার পশ্চিমে পাথরঘাটা উপজেলায় হরিণঘাটা সংরক্ষিত বনাঞ্চল অবস্থিত। বনাঞ্চল থেকে বঙ্গোপসাগরের দূরত্ব দেড় কিলোমিটার। মাছের প্রজনন ও চলাচলের গুরুত্বপূর্ণ এই অংশে শত শত জেলে বন বিভাগকে ম্যানেজ করে ছোট ফাঁসের জাল দিয়ে প্রতিদিন মাছ ধরায় একদিকে দেশের বিশাল মৎস্যভান্ডার শূন্য হচ্ছে, অপর দিকে হুমকির মুখে পড়ছে শ্বাসমূলীয় এই বনাঞ্চল।