ইয়াসির আরাফাতের ‘বোন’ ইন্দিরা বনাম নেতানিয়াহুর ‘বন্ধু’ মোদী

বিডি নিউজ ২৪ আলমগীর খান প্রকাশিত: ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৭:৩৭

ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী ও ফিলিস্তিন মুক্তি সংস্থার নেতা ইয়াসির আরাফাতের ভাইবোনতুল্য সম্পর্ক থেকে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর মধ্যকার দোস্তি— ভূরাজনৈতিক ক্ষেত্রে একটি আদর্শগত টেকটনিক বদল; যা এক ব্যাপক ও দীর্ঘমেয়াদী অনাকাঙ্ক্ষিত প্রভাবের ইঙ্গিত বহন করছে।


১৯৮৩ সালে নয়াদিল্লিতে আয়োজিত তৎকালীন জোট নিরপেক্ষ আন্দোলনের সম্মেলন থেকে ফিলিস্তিনি নেতা আরাফাত যখন ক্ষুব্ধ হয়ে বক্তৃতা না করেই ফিরে যাওয়ার জন্য রওয়ানা দিয়েছিলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা তখন ফিদেল ক্যাস্ত্রোকে অনুরোধ করেন তাকে ঠেকাতে। ক্যাস্ত্রো খুব বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে আরাফাতকে জিজ্ঞেস করেন, তিনি ইন্দিরার বন্ধু কিনা। উত্তরে আরাফাত বলেন, ‘বন্ধু, বন্ধু! সে আমার বড় বোন। তার জন্য আমি যে কোনো কিছু করব।’ ক্যাস্ত্রো বলেন, ‘তাহলে ছোট ভাইয়ের মতো কাজ করুন, বিকেলের অধিবেশনে থাকুন।’


এভাবেই কাজ হাসিল করেন ক্যাস্ত্রো, বোন ইন্দিরার অনুরোধে সম্মেলনে থেকে যান ভাই আরাফাত। বিংশ শতাব্দী ছিল এমনই সব বিরাটকায় নেতানেত্রীদের কাল। যাদের বিরাট হৃদয়ের ছোট ছোট কাহিনিগুলো গল্পের মতো বইপত্রে ও মুখেমুখে ছড়ানো। এখন বড় বড় দেশের সংকীর্ণমনা নেতাদের বড় বড় কুকাহিনিতে ভরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলো। এখনকার বড় নেতাদের মধ্যে ট্রাম্প, মোদী ও নেতানিয়াহুর কথা বলতেই হয়। আমাদের শেখ হাসিনাও ওই বড় নেতাদের একজন বলে কথিত ছিলেন কিছুদিন আগপর্যন্ত। এদের কথা ও অঙ্গভঙ্গি শিশুদের শুনতে ও দেখতে না দেয়াই ভালো। কিন্তু না দেয়ার তো উপায় নেই, মোদী যখন নেতানিয়াহুকে ‘বন্ধু’ বলে জড়িয়ে ধরেন তা তো এখন কাগজের পাতার আগেই হাতের মুঠোতে চলে আসে— তাই নিয়ে এ আলোচনা।



গুজরাটে দুই হাজার মানুষ হত্যার দায় আছে মোদীর কাঁধে। আর নেতানিয়াহু তো পঁয়তাল্লিশ হাজার ফিলিস্তিনি হত্যার দায় নিয়ে আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধী অভিহিত হয়েছেন। এই দুই বন্ধুই ইতিহাসে প্রথম স্থান অধিকার করেছেন এভাবে— মোদী ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী যিনি ২০১৭ সালে ইসরায়েল ভ্রমণ করেন আর নেতানিয়াহু ইসরায়েলের প্রথম প্রধানমন্ত্রী যিনি পরের বছর প্রতিদান হিসেবে ভারত ভ্রমণ করেছেন। অথচ স্বাধীন ভারতের প্রতিষ্ঠাতা মহাত্মা গান্ধী ও জওহরলাল নেহেরু উভয়েই ছিলেন ফিলিস্তিনের অকৃত্রিম বন্ধু এবং ইসরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ঘোর বিরোধী। ইন্দিরা গান্ধী থেকে শুরু করে তাদের উত্তরসূরিরা সবাই সেই রীতি বজায় রেখেছিলেন।


মহাত্মা গান্ধী ১৯৩৮ সালে দ্য জু’জ শীর্ষক লেখাটিতে ইহুদি প্রশ্নে জোর দিয়ে বলেছেন, “তারা কেন যেসব দেশে তাদের জন্ম ও যেখানে তারা আয়-রোজগার করে সেসব দেশকেই নিজেদের দেশ বলে মনে করতে পারছে না? ফিলিস্তিন তো আরবদের যে অর্থে ইংল্যান্ড ইংরেজদের অথবা ফ্রান্স ফ্রেঞ্চদের। আরবদের ঘাড়ের ওপর ইহুদিদেরকে চাপিয়ে দেয়া তো অন্যায় ও অমানবিক।”


১৯৪৭ সালে ভারত প্রস্তাব দিয়েছিল একটি অখণ্ড ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের যেখানে ইহুদি জনগোষ্ঠীও তাদের নাগরিক সমঅধিকার নিয়ে বসবাস করবে। ওই বছর জাতিসংঘে ইসরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার বিরুদ্ধে ভোট দেয় দেশটি। নিজের উপনিবেশবিরোধী দীর্ঘ সংগ্রামের আদর্শের আলোকে ভারত সহজেই অনুধাবন করে ইসরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পেছনের ঔপনিবেশিক বর্ণবাদী দখলদারি চরিত্রটি। ওইসময় ফিলিস্তিনকে সমর্থনের দিক থেকে ভারত প্রথম ছিল নানাভাবে। ১৯৭৪ সালে ভারত প্রথম অনারব দেশ যে ফিলিস্তিন মুক্তি সংস্থাকে (পিএলও) ফিলিস্তিন জনগণের একমাত্র বৈধ প্রতিনিধি হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। আবার প্রথম অনারব দেশ হিসেবে ভারত ১৯৮৮ সালে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রেরও স্বীকৃতি দেয়। যদিও ১৯৫০ সালে তারা ইসরায়েল রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দিয়েছিল, তবে দেশটির সঙ্গে কোনো কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করেনি। ১৯৯২-এর আগে তারা দিল্লিতে ইসরায়েলি দূতাবাস স্থাপনের অনুমতি দেয়নি।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও