তিতুমীরের শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ, যানবাহন না পেয়ে মানুষের ভোগান্তি
যশোরের কেশবপুরের বাসিন্দা জাহাঙ্গীর আলম। বোন আকলিমা আক্তারকে রাজধানীর মহাখালীর ক্যানসার হাসপাতালে এনেছিলেন চিকিৎসা করাতে। আকলিমার কেমোথেরাপি চলছে। আজ সোমবার একটি কেমোথেরাপি শেষ করে বাড়িতে ফিরবেন। কিন্তু দুপুরে হাসপাতাল থেকে বের হয়ে তাঁরা দেখেন, সড়কে কোনো বাস চলছে না।
রাজধানীর সরকারি তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় করার দাবিতে আজ টানা পঞ্চম দিনের মতো সড়কে নেমেছেন কলেজটির শিক্ষার্থীরা। দুপুর সোয়া ১২টার দিকে তাঁরা মহাখালী থেকে গুলশানগামী সড়ক বন্ধ করে দেন। এতে সড়কের উভয় পাশে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। বিভিন্ন গন্তব্যের উদ্দেশ্যে রওনা দেওয়া মানুষেরা ভোগান্তিতে পড়েন। তাঁদেরই একজন যশোরের কেশবপুরের বাসিন্দা জাহাঙ্গীর আলম।
মহাখালীতে তিতুমীর কলেজের সামনে আজ দুপুর দেড়টার দিকে এই প্রতিবেদকের কথা হয় জাহাঙ্গীর আলমের সঙ্গে। দুই হাতে ব্যাগপত্র নিয়ে মহাখালীর আমতলী মোড়ের দিকে হেঁটে যাচ্ছিলেন তিনি। সঙ্গে ছিলেন ক্যানসারে আক্রান্ত বোন।
জাহাঙ্গীর প্রথম আলোকে বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা রাস্তা আটকে রেখেছেন। কোনো বাস চলছে না। রিকশা নিতে চেয়েছিলাম। বলল, মহাখালী পর্যন্ত যেতে পারবে না। কলেজের সামনে নামিয়ে দেবে। ভাড়া ৪০ টাকা চাইল। পরে হেঁটেই রওনা দিয়েছি। কিন্তু বোনের কষ্ট হচ্ছে। হাসপাতাল থেকে কলেজের সামনে পর্যন্ত দুবার জিরিয়ে নিয়েছে।’
সরেজমিনে দেখা যায়, দুপুর ১২টা ২০ মিনিটের দিকে তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা তাঁদের কলেজ ফটকের সামনে বাঁশ ফেলে সড়ক অবরোধ করেন। এ সময় মহাখালী থেকে গুলশানে যাওয়ার এবং গুলশান থেকে মহাখালী আমতলীর দিকে আসার—উভয় পাশের রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। শিক্ষার্থীরা অসুস্থ রোগী বহনকারী অ্যাম্বুলেন্স বা বাহন বাদে আর কোনো যানবাহন চলাচল করতে দিচ্ছিলেন না। এ সময় অনেক মানুষকেই হেঁটে গন্তব্যে রওনা দিতে দেখা গেছে। কারও হাতে ছিল জিনিসপত্রের বড় ব্যাগ-বস্তা, কারও কোলে ছিল সন্তান। কেউবা বয়স্ক মা-বাবাকে হাতে ধরে হাঁটিয়ে নিচ্ছিলেন। রাস্তা বন্ধ থাকায় ভোগান্তিতে পড়া এসব লোকজনের কেউ কেউ ক্ষোভ প্রকাশ করেন।