বিচ্ছিন্নতা আত্মহত্যার প্রবণতাকে উসকে দিচ্ছে

জাগো নিউজ ২৪ শাহানা হুদা রঞ্জনা প্রকাশিত: ২৯ জানুয়ারি ২০২৫, ২১:২৪

‘মরিতে চাহি না আমি সুন্দর ভুবনে’- কবির এই কথাতেই ফুটে উঠেছে যে মানুষ বাঁচতে চায়, এটাই মানুষের সহজাত প্রবৃত্তি। শত দুঃখ কষ্ট, অভাব-অনটন ও রোগ-শোকের মধ্যে থেকেও মানুষ বেঁচে থাকতে চায়। তাই চিকিৎসকরা বলেন যে রোগী বেঁচে থাকতে চান, তাকে বাঁচানো ডাক্তারের পক্ষে সহজ হয়। কিন্তু কোনো মানুষ যখন নিজেই মৃত্যুকে ডেকে আনেন, তখন বুঝতে হবে তার কোথাও না কোথাও সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে এবং সেই সমস্যা সে নিজে হ্যান্ডেল করতে পারছে না।


আর যখনই কেউ সমস্যা সমাধানে একা হয়ে পড়েন, তখন তার একমাত্র পথ হয় মৃত্যুকে বেছে নেয়া, যা মানুষের স্বভাব বিরুদ্ধ। ফরাসি সমাজবিজ্ঞানী ও আত্মহত্যা বিশেষজ্ঞ ডুরখেইম তাঁর বিখ্যাত কাজ "Le Suicide" এ আত্মহত্যার সামাজিক কারণ নিয়ে বিশ্লেষণ করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, সামাজিক একাকীত্ব, সম্পর্কের অবনতির কারণে মানুষ আত্মহত্যা করতে পারেন, বিশেষ করে যখন তারা নিজেদের বিচ্ছিন্ন বা নিঃস্ব অনুভব করেন।


হয়তো এই একই কারণে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীটি ২৬ জানুয়ারি ভোররাতে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। মেয়েটি হয়তো সম্পর্কের অবনতির কারণে তার প্রেমিককে দেখাতে চেয়েছিল কতটা দুঃখ পেয়ে সে চলে যাচ্ছে। চলে যাওয়ার এই পর্বে বাবা-মা, পরিবার, দায়-দায়িত্ব বা অন্য কোনো আকর্ষণ তাকে বেঁধে রাখতে পারেনি। নিজেকে নিঃস্ব মনে করেই মেয়েটি চলে গেল।


কিছু গবেষক আত্মহত্যাকে একটি "কোপিং মেকানিজম" হিসেবে মনে করেন। তারা বলেন মানুষ জীবনের চাপ, কষ্ট বা সংকট মোকাবেলা করতে না পারলে আত্মহত্যাকে তাদের একমাত্র উপায় হিসেবে বেছে নেয়। যখন মানুষের কাছে উপযুক্ত কোপিং স্ট্রাটেজি বা সাহায্য গ্রহণের সুযোগ থাকে না, তখন তারা আত্মহত্যার পথ বেছে নিতেই পারে।



মানুষ সবসময় যে খুব বড় কোন কারণে মৃত্যুকে বেছে নেয়, তা নয়। মানুষ খুব তুচ্ছ কারণেও আত্মহত্যা করতে পারে। যেমন পছন্দের কাপড় বা খেলনা কিনতে না পেরে, মা-বাবার বকুনি খেয়ে, পরীক্ষায় খারাপ ফলাফল করে, বুলিং এর শিকার হয়ে, বন্ধু বা ভাইবোনের সাথে ঝগড়া করে, প্রেমে ব্যর্থ হয়ে, বেড়াতে যেতে না পেরে। এধরনে র ছোটখাট কারণেও মানুষ মনে করতে পারেন, তার বেঁচে থাকার আর কোন মানেই হয় না। কে তাকে বোঝাবে যে তার এইভাবে চলে যাওয়ারই কোনো মানে হয় না। তাকে বোঝানোর জন্য যে সময় বা পরিবেশ লাগে, তা তৈরি হওয়ার আগেই মানুষটি চলে যায়।


এইভাবে চলে যাওয়ার ঘটনা দেশে বাড়ছে। ২০২৪ সালে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন পর্যায়ে ৩১০ শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছেন। এর মধ্যে ১৮৯ জনই নারী শিক্ষার্থী। তাদের মধ্যে ৪৬.০১ শতাংশই মাধ্যমিক স্তরের। আত্মহত্যা করা সিংহভাগ শিক্ষার্থী মানসিক সমস্যায় ভুগছিলেন। গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যা নিয়ে আঁচল ফাউন্ডেশনের প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।


প্রতিবেদনে বয়স ভিত্তিক তথ্য অনুযায়ী, ১৩ থেকে ১৯ বছরে বয়ঃসন্ধিকালীন সময়ের শুরু থেকে কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে আত্মহত্যার হার সবচেয়ে বেশি। ২০২৪ সালে আত্মহত্যাকারীদের ৬৫.০৭ শতাংশ কিশোর বয়সী। এরপরই রয়েছেন ২০ থেকে ২৫ বয়সীরা, প্রায় ২৪ শতাংশ। শিশুদের মধ্যেও আত্মহত্যার প্রবণতা দেখা গেছে। ১২ বছর বয়সী শিশুর আত্মহত্যার তথ্য উঠে এসেছে, যা প্রায় ৭.০৪ শতাংশ। আত্মহত্যার প্রবণতা নারীদের মধ্যে তুলনামূলক বেশি। আত্মহত্যা করা ৩১০ জনের মধ্যে নারী প্রায় ৬১ শতাংশ। পুরুষের সংখ্যা প্রায় ৩৮.০৪ শতাংশ

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও