অফিসে প্রচুর কাজের চাপ। আপনি এক কাপ গরম কফি খেয়ে তরতাজা হয়ে কাজে হাত দিলেন। বন্ধুবান্ধবদের আড্ডায় মুচমুচে স্ন্যাক্স সহযোগে গরম কফির পেয়ালা হাতে উঠলে আড্ডাটা আরও জমজমাট হয়ে ওঠে। সঙ্গীকে নিয়ে সান্ধ্যভ্রমণে বেরিয়ে কোথাও বসে এক কাপ কোল্ড কফি না খেলে কী আর হয়। অনেকে আবার সকালে ঘুম থেকে উঠে হাতে কফির মগ তুলে না নিলে দিনটাই ভালো যায় না। সেই সকাল থেকে রাত, আনন্দে হোক কিংবা ক্লান্তিতে— কফি আছে থাকা চাই। কিন্তু আপনার ঘন ঘন কফি খাওয়ার যে অভ্যাস, তা যে প্রজনন ক্ষমতার ওপরে প্রভাব ফেলে,সে কথা কি আপনি জানেন? হয়তো তা আপনি জানেন না।
আরও জেনে নিন, আপনার শরীরে ক্যাফিন কতটা ক্ষতিকর—
মানুষের শরীরে দুই রকম সিস্টেম আছে— সিম্প্যাথেটিক ও প্যারাসিম্প্যাথেটিক। সিম্প্যাথেটিক সিস্টেমে অত্যধিক প্রদাহ তৈরি হলে তখন রক্তচাপ বেড়ে যায়, শ্বাসের গতি বাড়ে, নাড়ির গতি বাড়ে এবং শরীরের তাপমাত্রা বাড়তে থাকে।
আবার ঠিক উল্টোটা হয় প্যারাসিম্প্যাথেটিক সিস্টেমের ক্ষেত্রে। ক্যাফিন সিম্প্যাথেটিক ও প্যারাসিম্প্যাথেটিক সিস্টেমের স্বাভাবিক প্রক্রিয়াগুলোকেই সবচেয়ে আগে ক্ষতিগ্রস্ত করে। এমনটিই বলছেন কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালের স্ত্রীরোগ চিকিৎসক মল্লিনাথ মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, যারা প্রতিদিন পাঁচ থেকে ছয় কাপ বা তার বেশি কফি খান, তাদের শরীরে এত বেশি ক্যাফিন ঢোকে, যা সিম্প্যাথেটিক সিস্টেমকে ‘স্টিমুলেট’ করে। অর্থাৎ উদ্দীপনা বাড়ায়। এতে শরীরের তাপমাত্রাও বাড়ে, যার প্রভাব পড়ে জনন অঙ্গের ওপরে। হরমোনের তারতম্য দেখা দেয়, শুক্রাশয়ে শুক্রাণু তৈরির প্রক্রিয়া ও জরায়ুতে ডিম্বাণু তৈরির স্বাভাবিক প্রক্রিয়া নষ্ট হতে শুরু করে।
আর দিনে ২০০ মিলিগ্রামের মতো ক্যাফিন আপনার শরীর নিতে পারে। কিন্তু দৈনিক ক্যাফিনের মাত্রা যদি ৩০০ মিলিগ্রাম ছাড়িয়ে যায়, তা হলে হরমোনের ভারসাম্য বিগড়ে যেতে থাকে। নারীর ইস্ট্রোজেন নামক যৌন হরমোনেরই একটি রূপ এস্ট্রাডিওল হরমোন ও প্রজেস্টেরনের ক্ষরণ এলোমেলো হয়ে যায়।