জুলাই অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র কি ঐক্যের পথ প্রশস্ত করবে

প্রথম আলো মো. সাহাবুল হক প্রকাশিত: ০৯ জানুয়ারি ২০২৫, ১৩:৪০

যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে ৪৬ জন প্রেসিডেন্টের মধ্যে তৃতীয় প্রেসিডেন্ট টমাস জেফারসন। জেফারসন ছিলেন একাধারে উদ্ভাবক, কূটনীতিক, আইনজীবী, স্থপতি, রাজনীতিক, আইন প্রণয়নকারী ও দার্শনিক। সব ছাপিয়ে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রের প্রাথমিক খসড়া প্রণয়নকারী। খসড়া প্রণয়ন কমিটিতে আরও চারজন সদস্য ছিলেন। প্রাথমিকভাবে জেফারসনকেই দায়িত্ব দেওয়া হয় প্রাথমিক খসড়া তৈরি করার জন্য। তখন তাঁর বয়স ছিল মাত্র ৩৪ বছর। 


ঘোষণাপত্র লেখায় মনোনিবেশ করার জন্য জেফারসন তাঁর নিজ বাসা ছেড়ে ফিলাডেলফিয়ায় তিনতলা একটি বাড়ি ভাড়া নিয়েছিলেন। ওই বাড়িতে বসেই দেশটির স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রের প্রথম খসড়া সম্পন্ন করেছিলেন।


ঘোষণাপত্রটি কংগ্রেস কর্তৃক গৃহীত হয় ১৭৭৬ সালের ৪ জুলাই। এই দিনটি যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতা দিবস। যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতার এ ঘোষণা বানচাল করার জন্য তৎকালীন ব্রিটিশ সরকার সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছিল, কিন্তু তা সফল হয়নি। সে ইতিহাস বেশ লম্বা। 


ফিলাডেলফিয়ার যে বাড়িতে বসে জেফারসন সে দেশের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র লিখেছিলেন, সেটি ‘দ্য ডিক্লারেশন হাউস’ হিসেবে আজও পরিচিত। যে চেয়ার ও টেবিলে বসে জেফারসন স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র লিখেছিলেন, সেগুলো আজও অবিকৃতভাবে রয়েছে। টমাস জেফারসন সে দেশের ফাউন্ডিং ফাদারদের একজন। উল্লিখিত বর্ণনা এ কারণে দেওয়া হলো, মার্কিন জাতি তাদের স্বাধীনতার ঘোষণাকে কত গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে, সেটি দেখানোর জন্য। 



দুই.


দেশে বর্তমানে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র নিয়ে রাজনীতির অঙ্গনে রীতিমতো বইছে লু হাওয়া। কয়েক সপ্তাহ আগেও এটা নিয়ে খুব একটা উচ্চবাচ্য ছিল না। বিষয়টি সামনে এল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা যখন ঘোষণা করলেন গত ৩১ ডিসেম্বর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে তাঁরা জুলাই ছাত্র গণ-অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র পাঠ করবেন। এর দুই দিন পর প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম সংবাদ সম্মেলন করে জানালেন, ছাত্রদের ঘোষণাপত্র পাঠের সঙ্গে সরকারের কোনো সম্পর্ক নেই এবং এটি হচ্ছে ‘প্রাইভেট ইনিশিয়েটিভ’। 


এটা নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলো বিভিন্ন রকম প্রতিক্রিয়া দেখাতে শুরু করল। এর এক দিন পর প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব জানালেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র তৈরি করবে সরকার। গণ-অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনসহ অংশগ্রহণকারী সব শিক্ষার্থী, রাজনৈতিক দল ও পক্ষের মতামতের ভিত্তিতে ঘোষণাপত্রটি প্রস্তুত করা হবে। এতে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পরিপ্রেক্ষিতে ঐক্যের ভিত্তি ও জনগণের অভিপ্রায় ব্যক্ত হবে (প্রথম আলো, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪)। অর্থাৎ সরকার সবাইকে নিয়ে গণ-অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র তৈরি করবে। এটি তখন আর কোনো একটি গ্রুপের কিংবা পক্ষের ‘প্রাইভেট ইনিশিয়েটিভ’ থাকল না। এটি রূপান্তরিত হতে যাচ্ছে ‘পাবলিক ইনিশিয়েটিভে’। এটি নিঃসন্দেহে একটি ভালো উদ্যোগ। 


বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ১৫ জানুয়ারির মধ্যে জুলাই অভ্যুত্থানের ঘোষণা দেওয়ার দাবি তুলেছে। সরকারের পক্ষ থেকেও এ ব্যাপারে ইতিবাচক বার্তা দেওয়া হয়েছে। এই ঘোষণাপত্রে সবার মতামতকে গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন। জুলাইয়ের ছাত্র-গণ-অভ্যুত্থানে দল-মত, ধর্ম-বর্ণনির্বিশেষে সবাই অংশ নিয়েছিল।


বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) পক্ষ থেকে ইতিমধ্যে দাবি তোলা হয়েছে জুলাই ঘোষণাপত্রে গত ১৬ বছরে তাদের ওপর যে নির্মম নির্যাতন চলেছে, সেটি অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। অবশ্যই। শুধু বিএনপি নয়, বিগত স্বৈরাচারের আমলে বিরোধী দলের যেসব নেতা-কর্মীর ওপর নির্যাতন চলেছে, গুম, খুন, জখম হয়েছে, নির্বিচার গুলি চলেছে, হাজার হাজার হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলা দিয়ে কারাগারে রাখা হয়েছে, সেগুলোও ঘোষণাপত্রে তুলে ধরতে হবে। আয়নাঘরের নির্মম নির্যাতনের কথা আসতে হবে। 

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও