৬৫ কোটি টাকার কাজ ১৩৫ কোটিতেও হচ্ছে না

যুগান্তর নড়াইল প্রকাশিত: ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:৫০

ভুল নকশায় সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু করার পর বর্ষাকালে পানি বেড়ে গেলে দেখা যায়, নকশায় ত্রুটি, উচ্চতা জটিলতা। এরপর বদলেছে নকশা, বদলেছে ঠিকাদার। বেড়েছে ব্যয় দ্বিগুণেরও বেশি, বেড়েছে সময় পাঁচ দফা। তবুও যেন শেষ হচ্ছে না নড়াইল-কালিয়া আঞ্চলিক মহাসড়কের ২১তম কিলোমিটারের শেষ প্রান্তে নবগঙ্গা নদীর ওপর কালিয়া সেতুর নির্মাণ কাজ।


জানা যায়, নড়াইল-কালিয়া জেলা মহাসড়কের (জেড-৭৫০২) ২১তম কিলোমিটারে কালিয়া উপজেলার পাশ দিয়ে প্রবাহিত নবগঙ্গা নদীর উপর কালিয়া সেতু নির্মাণের জন্য ২০১৭-১৮ অর্থবছরে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় সেতু নির্মাণের সিদ্ধান্ত হয়। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স মো. জামিল ইকবাল এবং মো. মঈন উদ্দীন (বাশী)-জেভি যৌথভাবে সেতুটি নির্মাণের কাজ পায়। চুক্তিমূল্য ৬৫ কোটি ৩ লাখ ৮৯ হাজার ৩৪৪ টাকা ব্যয়ে দৈর্ঘ্য ৬৫১.৮৩ মিটার এবং ১০.২৫ মিটার প্রস্থ সেতুটির কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছিল ২০১৮ সালের ১৮ এপ্রিল। ২০১৯ সালের ৩০ জুনের মধ্যে নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার মেয়াদকাল থাকলেও নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মাত্র ২২ শতাংশ কাজ করতে সক্ষম হয়। এরপর নতুন একটি পিলার সংযোজন করে নকশা পরিবর্তন করে দ্বিতীয় দফা মেয়াদ বাড়িয়ে কাজ শুরু হয়। স্রোতের কারণে নির্মীয়মাণ ৯ নম্বর পিলারে বালুবোঝাই বাল্কহেডের ধাক্কায় পিলারটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এরপর ২০২১ সালের ৬ সেপ্টেম্বর একটি বালুবোঝাই বাল্কহেডের আঘাতে ৯ নম্বর পিলারটি নদীতে হারিয়ে যায়। এ সময় তৃতীয় দফা নকশা পরিবর্তনের প্রয়োজন পড়ে। শেষ সময় অর্থাৎ, ৪র্থ বার মেয়াদ বৃদ্ধির সময় বাধে নকশা জটিলতা। সেতুর ছাদের কিছু অংশ নির্মাণ কাজ শেষে দেখা যায় সেতুর নিচ দিয়ে নৌযান চলাচল করতে পারছে না। পরে ৯ নম্বর পিলার বাদ দিয়ে ৮-১০ নম্বর পিলারের মাঝে ৯০ মিটারের স্টিলের স্প্যান বসিয়ে নতুন নকশা করে ডিপিপি করা হয়। এ নকশা পরিবর্তনে নতুন করে ২৮ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়। এরপর মূল অংশের ৪টি পায়ার ও ৩টি স্প্যান বসানোর কাজ অসম্পূর্ণ রেখেই ৬১ কোটি টাকায় সড়ক বিভাগ প্রথম মেয়াদের চুক্তি শেষ করে ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে। পরে নকশা পরিবর্তন করে উঁচু করে সেতু নির্মাণের জন্য নতুন নকশা অনুমোদনের জন্য একনেক সভায় তোলা হয় ।


এরপর ২০২৩ সালের ৫ সেপ্টেম্বর জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় ভুল নকশায় নিচু সেতু নির্মাণ করায় চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেন তখনকার প্রধানমন্ত্রী। এরপর সেতু নির্মাণে সঠিকভাবে নকশা তৈরির নির্দেশ দিয়ে অবশিষ্ট কাজের জন্য দ্বিতীয়বার এ সেতু প্রকল্পে অতিরিক্ত বাজেটের অনুমোদন দেওয়া হয়। দ্বিতীয়বার কংক্রিট অ্যান্ড স্টিল টেকনোলজিস্ট লিমিটেড ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সেতুর বাকি অংশ নির্মাণে চুক্তিবদ্ধ হন। পঞ্চম মেয়াদে সড়ক বিভাগের তত্ত্বাবধানে বাকি কাজের মেয়াদ ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছিল। এখন ষষ্ঠবারের মতো ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে সময়। যদিও সওজ বিভাগ বলছে, জটিলতা কাটিয়ে নতুনভাবে কাজ শুরু হয়েছে। আগামী বছর (২০২৫) জুনের মধ্যেই সেতু নির্মাণের বাকি কাজ শেষ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এভাবে কয়েক দফায় সময় ও অর্থ বেড়ে এখন ব্যয় ১৩৫ কোটি ৯২ লাখ টাকায় দাঁড়িয়েছে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন এ নদীর ওপর দিয়ে চলাচলকারী লাখ মানুষ। সরেজমিন দেখা যায়, মূল সেতুর নদীর দুই তীরবর্তী অংশের সংযোগ সড়কসহ ১৫টি পায়ার এবং ১১টি স্প্যান বসানোর কাজ শেষ হলেও মধ্যবর্তী অংশের ৩টি স্প্যান বসানোর কাজ এখনো বাকি। নতুন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিদেশ থেকে আমদানি করা ৮৬ দশমিক ৭৩ মিটার স্টিল আর্চ স্প্যানসহ আরও দুটি স্প্যান এবং বাড়তি পায়ারের পাইলিংয়ের কাজ চলছে।


সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও