সংস্কার প্রশ্নে জাতীয় ঐকমত্য কি সহজ হবে?

www.ajkerpatrika.com মাসুদ কামাল প্রকাশিত: ২০ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:৪৬

সংস্কারের দাবিগুলো শুরু থেকেই উঠছিল। হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকেই বলা হচ্ছিল—এমন একটা ব্যবস্থা চাই, যাতে ভবিষ্যতে যে সরকার আসবে, তারা যেন চাইলেও স্বৈরাচারী হয়ে উঠতে না পারে। প্রত্যাশিত সেই ব্যবস্থা কায়েমের জন্যই সংস্কার। বলা হলো, এই যে আমাদের সংবিধান, কাটা-ছেঁড়া করতে করতে এটাকে এমন একটা পর্যায়ে নিয়ে আসা হয়েছে, এটিই এখন দেশের প্রধানমন্ত্রীকে প্রায় ঈশ্বরের মতো ক্ষমতাবান করে তুলেছে। তিনি যা ইচ্ছা তা-ই করার ক্ষমতা রাখেন। তাঁকে চ্যালেঞ্জ করার কেউ থাকে না। তাই এই সংবিধানকে সংস্কার করতে হবে। অপ্রয়োজনীয় ও আপত্তিকর ধারাগুলো বাদ দিতে হবে, গণতান্ত্রিক কিছু ধারা যুক্ত করতে হবে। সব মিলিয়ে সংবিধানের চেহারাটা এমন দাঁড়াবে, যাতে এই সংবিধানই একজন ব্যক্তিকে গণতান্ত্রিক থাকতে বাধ্য করে। প্রধানমন্ত্রী বা রাষ্ট্রের অন্য যে কেউ, তিনি যেন জবাবদিহির ঊর্ধ্বে না থাকেন।


কেবল সংবিধানেই নয়, সংস্কারের দবি উঠেছে আরও অনেক ক্ষেত্রেই। হাসিনা সরকার রাষ্ট্রক্ষমতায় ছিল টানা ১৫ বছর। এই সময়ে তারা সবকিছুকেই নিজেদের মতো করে সাজিয়ে নিয়েছিল। প্রশাসন, পুলিশ বিভাগ, বিচার বিভাগ—সবকিছুকেই নিজেদের অনুগত করে নিয়েছিল। কাজেই পরিবর্তন আনতে হবে সেসব ক্ষেত্রেও। দাবিগুলো বিশেষ কোনো একটি গোষ্ঠীর ছিল না, ছিল সবার। ড. ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকার দাবিগুলোকে গুরুত্ব দিয়ে শুরুতেই ছয়টি সংস্কার কমিশন গঠন করল। পরে দ্বিতীয় দফায় আরও পাঁচটি বিষয়ের সংস্কার কমিশন গঠন করা হয়। প্রথমে গঠিত কমিশনগুলোকে বলা হলো, এ বছরের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে তাদের রিপোর্ট পেশ করতে। পরে অবশ্য এই সময়সীমা বাড়িয়ে জানুয়ারির শেষ পর্যন্ত করা হয়েছে। ধারণা করছি, আগামী দুই-তিন সপ্তাহের মধ্যে এসব রিপোর্ট আসতে থাকবে।



প্রশ্ন হচ্ছে, কমিশনের রিপোর্ট পেলেই কি সংস্কার হয়ে যাবে? তা যে হবে না, সেটা সবাই জানেন। এরপরও থেকে যাবে বেশ কিছু ধাপ। প্রথমত, প্রশ্ন উঠবে—কমিশনের দেওয়া এই যে সংস্কার প্রস্তাবগুলো, রাজনৈতিক দলগুলো কি মানবে? ড. ইউনূসের এই সরকার তো নিয়মিত কোনো সরকার নয়। একটা নির্বাচন দিয়ে, নির্বাচিতদের হাতে ক্ষমতা তুলে


দিয়ে তারা চলে যাবে। নতুন যাঁরা ক্ষমতায় আসবেন, তাঁরা এক বা একাধিক রাজনৈতিক দলের লোক হবেন। ফলে সংস্কার প্রস্তাবগুলো তাঁদের মানা বা না-মানার বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ।


সরকার অবশ্য বলছে, কমিশনগুলোর কাছ থেকে সংস্কার প্রস্তাব পাওয়ার পর সেগুলো নিয়ে তারা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বসবে। তাদের মতামত নেবে। এ কাজগুলো ঠিকঠাকমতো করার জন্য একটা ‘জাতীয় ঐকমত্য গঠন কমিশন’-এর কথাও বলেছেন ড. ইউনূস। ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি এই ঐকমত্য কমিশনের গঠন ও এর কাজ সম্পর্কে একটা ধারণা দিয়েছেন। জানিয়েছেন, এই কমিশনের কাজ হবে বিভিন্ন প্রস্তাবের বিষয়ে একটা রাজনৈতিক ঐকমত্য তৈরি করা। প্রথমে গঠন করা ছয়টি কমিশনের রিপোর্ট পাওয়ার পরই শুরু হবে এই নতুন কমিশনের কাজ। নতুন এই কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে থাকবেন ড. ইউনূস নিজে। আর তাঁর সঙ্গে সহসভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন অধ্যাপক আলী রীয়াজ।


যত দূর বুঝতে পারছি, ছয়টি কমিশন থেকে পাওয়া সুপারিশগুলো নিয়ে ‘জাতীয় ঐকমত্য গঠন কমিশন’ রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বসবে। যেসব বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে সমর্থন পাওয়া যাবে সেগুলো টিকবে, বাকিগুলো বাদ যাবে। সম্ভবত এই প্রক্রিয়াতেই চূড়ান্ত হবে সংস্কার প্রস্তাব।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও