উপদেষ্টারা কি যাবেন না জেলে ও কৃষকদের কাছে

প্রথম আলো নাহিদ হাসান প্রকাশিত: ১৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১:৪২

বাংলাদেশ তথা ভারতবর্ষের রাজনীতিতে জেলে-কৃষকেরাই নেতৃত্বে ছিলেন। ফকির মজনু শাহ, নূরলদীন, ভবানী পাঠক, দেবী চৌধুরানী, টিপু পাগলারা ছিলেন কৃষকনেতাই। এটি ছিল ব্রিটিশের অধীন কংগ্রেস ও মুসলিম লীগ তৈরি হওয়ার আগপর্যন্ত। তার পর থেকে (শেরেবাংলা ও মাওলানা ভাসানী ছাড়া) যত পার্টি তৈরি হয়েছে, সবাই কৃষকবিরোধী ভূমিকা নিয়েছে। উনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থানে গ্রামের জেলে ও তাঁতির যেমন নেতৃত্ব ছিল, চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানে তা নেই। এই অভ্যুত্থানকে তাঁদের ঘরে নিয়ে যাওয়ার উপায় কী?

২.
সেই ১৯৫৪ সালে হক-ভাসানীর যুক্তফ্রন্টের নির্বাচনী ইশতেহারে বলা ছিল, ‘২। বিনা ক্ষতিপূরণে জমিদারি ও সমস্ত খাজনা আদায়কারী স্বত্ব উচ্ছেদ ও রহিত করে উদ্বৃত্ত জমি ভূমিহীন কৃষকদের মধ্যে বিতরণ এবং খাজনা হ্রাস ও সার্টিফিকেট মারফত খাজনা আদায় রহিত করা হবে।’


জমিদারি প্রথা বিলুপ্ত হয়েছে সেই ১৯৫০ সালে। এখনো হাট–ঘাটে ১৯৫০ সালের আগের নিয়মটাই চালু আছে। খাজনা আদায়কারী স্বত্বগুলো উচ্ছেদ এখনো হয়নি। 


সরকারের কাছ থেকে যে ঘাট বা হাট ১০ লাখে ইজারা নেওয়া হয়, তারপর সরকারি দলের নেতা ও কর্মকর্তাদের ৫০ থেকে ৬০ লাখ ঘুষ দিয়ে একজন ইজারা নেন। তারপর তিনি এক থেকে দেড় কোটিতে সাব–ইজারা দেন। তারপর সাব–ইজারাদারেরা ৫ থেকে ৬ কোটি টাকা জনগণের কাছ থেকে তোলেন। অর্থাৎ জনগণের গেল ৫ থেকে ৬ কোটি, কিন্তু রাষ্ট্র পেল মাত্র ১০ লাখ টাকা। 


জমিদারেরা যেমন ব্রিটিশের লাঠিয়াল ছিলেন, এই ইজারাদারেরা ৫৩ বছর ধরে রাজনৈতিক দলগুলোর লাঠিয়াল। তাই কেউ হাট-ঘাটের ইজারা তুলে দেওয়ার পক্ষে কথা বলবেন না। 



৩.
রাষ্ট্রের সেবা ও জবাবদিহি জনমানুষের কাছাকাছি নিয়ে আসার জন্য স্বশাসিত এবং সচ্ছল স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা বাস্তবায়ন জরুরি। স্থানীয় সরকারই হবে রাষ্ট্রীয় কর্মকাণ্ডের মূল ধারক ও বাহক। এ লক্ষ্যে সাংবিধানিক বণ্টন চুক্তির মাধ্যমে, রাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় আয়ের উল্লেখযোগ্য অংশ, জেলা সরকারের আয়ের সঙ্গে যুক্ত করতে হবে। জেলা সংসদে নির্বাচিত প্রতিনিধিরা কেন্দ্রের কোনো রকম হস্তক্ষেপ ছাড়া স্বাধীনভাবে জেলার কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে পারবেন। 


প্রাথমিকভাবে বর্তমান কেন্দ্রীয় প্রশাসনিক ক্যাডার থেকে জেলা ক্যাডার নিয়োগ দিয়ে জেলাগুলোর নিজস্ব প্রশাসন তৈরি করতে হবে। সাংবিধানিকভাবে জেলা সরকার, উপজেলা সরকার ও ইউনিয়ন সরকারের ভেতর কাজের দায়িত্ব এবং বাজেট বণ্টন করে দিতে হবে। পুলিশের সেবাকে জনবান্ধব করার লক্ষ্যে এবং পুলিশ যাতে আর কোনো দিন কেন্দ্রীয় সরকারের দাস হয়ে উঠতে না পারে সেটা নিশ্চিত করতে, পুলিশ প্রশাসনের কেন্দ্রীয় কাঠামো ভেঙে দিয়ে পুলিশকে স্থানীয় সরকারের অধীনস্থ করতে হবে।


৪.
দেশে নাকি মাছ বাড়ছে। তবে জেলের সংখ্যা কমল কেন? নদীতে মাছ নেই। এদিকে মাছ বাড়ল কেমন করে? খাল-বিল সব ভরাট কিংবা দখল। এই মাছ তাহলে কার? ইলিশ সাগর থেকে আসে, তাকে রক্ষার জন্য পুলিশ ঘোরে। শত নদীর দেশে শত জাতের মাছ কোথায় গেল? নদী কার? জেলেদের, না নেতাদের? চিলমারীর জেলেদের কেন মাছ ধরার জন্য ব্রহ্মপুত্রের উজানে আসাম যেতে হয় জেল খাটার ঝুঁকি নিয়ে?


আগে জমি থেকে আমরা তুলা পেতাম, সুতা পেতাম। এখন সুতা কেনা লাগে। তুঁত বোর্ড রেশম পোকা খোলাবাজারে বিক্রি করে না। তাদের সঙ্গে কৃষক বাঁধা। সুতা না থাকলে কাপড় আসবে কেমন করে? রেশম পোকার চাষই নেই। কৃষক বন্দী থাকলে তাঁতিও বন্দী থাকেন। সেই ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্টের ৪ নম্বর প্রতিশ্রুতি ছিল: কৃষিতে সমবায় প্রথা প্রবর্তন এবং সরকারি সাহায্যে কুটির শিল্পের উন্নয়ন। তার বাস্তবায়ন কোথায়? 

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও