অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ১০০ দিন : প্রত্যাশা কতখানি পূরণ হলো?
স্বাধীন ও সার্বভৌম একটি দেশ হওয়া সত্ত্বেও গণতন্ত্র, সুশাসন, স্থিতিশীলতা, অসাম্প্রদায়িকতা, মানসম্মত শিক্ষা, সর্বসাধারণের নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির ক্রয় ক্ষমতা ও সর্বোপরি সামাজিক ন্যায়বিচারের নিশ্চয়তা প্রভৃতি বিষয়াবলী যেন আজকাল বাংলাদেশে রূপকথার কল্পকাহিনির মতো ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে।
অনেকটাই যেন প্লেটোর রিপাবলিক পড়ে আদর্শ রাষ্ট্র কল্পনা করছি কিংবা মার্ক্সের কমিউনিস্ট মেনিফেস্টো পড়ে সাম্য প্রতিষ্ঠিত এক সমাজের চিন্তা করছি। আবার ব্যাপারটিকে যদি ধনতান্ত্রিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিবেচনা করি তাহলে হয়তো আমরা মোনাকো বা লুক্সেমবার্গের মতো সমৃদ্ধ এক ভূ-স্বর্গের আকাঙ্ক্ষা করছি।
যাই হোক, প্লেটোর আদর্শ রাষ্ট্র, মার্কসের কমিউনিস্ট মেনিফেস্টো অথবা লুক্সেমবার্গের মতো কোনো একটি রাষ্ট্র—আদতে কোনোটিই সম্ভব নয়। কিন্তু চরম আশাবাদী মনোভাব বাঙালির চিরকালই ছিল। বাস্তবতার নিরিখে নিজের আকাঙ্ক্ষাকে মূল্যায়ন করে তা প্রয়োজনমতো কমিয়ে অথবা বাড়িয়ে নেওয়ার মতো সক্ষমতা এই অতি আবেগী জাতির মাঝে চিরকালই অনুপস্থিত।
প্রসঙ্গত, ইউনূস সরকারের ওপর বাঙালি জনসাধারণ যেভাবে আস্থা ও প্রত্যাশার পসরা সাজিয়ে বসেছে, অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে শেষাবধি তা আর হালে পানি পাবে না। এ কথার সাথে অনেকেই একমত না হতে পেরে হাস্যকর বলে উড়িয়ে দিতে পারে। কিন্তু আমি বলব, বাস্তব চিত্র এর খুবই কাছাকাছি। এ যেন অথৈ সাগরে খড়কুটো ধরে বাঁচারই আকুতি।
আমাদের পাহাড়সম চাহিদা ও জনপ্রত্যাশার চাপে ইউনূস সরকার পিষ্ট হতে বসেছে। কেননা এই সরকারের উপদেষ্টাদের কণ্ঠে নিয়মিতই অসহায়ত্ব ও কিঞ্চিৎ ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ দেখা যাচ্ছে। বাইরে বসে যারা দেশের একপেশে কট্টর সমালোচনা কিংবা ভাসানীর মতো জনপ্রিয় অথচ বস্তুগত দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে স্বল্পমেয়াদি সফল নেতা হিসেবে কৃতিত্ব অর্জন করার প্রয়োজনীয়তা আমি দেখি না। তাহলে এই মুহূর্তে করণীয় কী?