ইসলামপন্থি দলে অমুসলিম সদস্য নিয়ে বিতর্কের কারণ কী?

বিডি নিউজ ২৪ আমীন আল রশীদ প্রকাশিত: ০৭ নভেম্বর ২০২৪, ২১:৩৯

দুটি সংবাদ শিরোনামে চোখ বুলানো যাক।


১. রংপুরে জামায়াতে ইসলামীর ইউনিয়ন শাখার হিন্দু কমিটি গঠন।


২. দুর্গোৎসবে মুখর চরমোনাই পীরের গ্রাম।


জামায়াতের হিন্দু শাখার কমিটি গঠনের সংবাদটি প্রকাশিত হয়েছে গত ২৬ অক্টোবর। আর চরমোনাই পীরের গ্রামে দুর্গোৎসবের খবরটি প্রকাশিত হয়েছে গত ১২ অক্টোবর। এই খবরটি নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় খুব একটা আলোচনা না হলেও জামায়াতের হিন্দু শাখার কমিটি-সম্পর্কিত খবরটি নিয়ে বিতর্কের ঝড় ওঠে।


একটি ইসলামপন্থি বা ধর্মভিত্তিক দলে যে অমুসলিমরা সদস্য হতে পারেন এবং তাদের কমিটিও হয়— বিষয়টা অনেককেই হয়তো বিস্মিত করেছে। তবে বাংলাদেশের মতো একটি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশে কোনো ধর্মভিত্তিক দলে অমুসলিমদের সদস্য হওয়া বা তাদের জন্য আলাদা কমিটি গঠনের বিষয়টিকে নানাভাবেই দেখার সুযোগ রয়েছে এবং এটির নির্মোহ বিশ্লেষণেরও অবকাশ রয়েছে।


বাংলাদেশের রাজনীতিতে ধর্মভিত্তিক বা ইসলামপন্থি দলগুলোর জনপ্রিয়তা কমছে না বাড়ছে— সেটি অবাধ-সুষ্ঠু-নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন ছাড়া বোঝা কঠিন। তবে জনপরিসরে নানা আলোচনার মধ্য দিয়ে কিছুটা ধারণা লাভ সম্ভব। আবার ধর্মভিত্তিক দলগুলোর মধ্যে সবার সাংগঠনিক কাঠামো, জনসম্পৃক্ততা ও জনপ্রিয়তাও সমান নয়। ওই বাস্তবতা মেনে নিয়ে এটি বলা যায় যে, বাংলাদেশে এ মুহূর্তে যতগুলো ইসলামিক বা ধর্মভিত্তিক দল হিসেবে পরিচিত, তাদের মধ্যে জামায়াতে ইসলামী এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কর্মী ও সমর্থকের সংখ্যা অনেক বেশি।



মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকার কারণে গত অর্ধ শতাব্দী ধরে জামায়াতের ব্যাপারে অন্য রাজনৈতিক দল ও সাধারণ মানুষের মধ্যে যে নেতিবাচক ধারণা ছিল বা এখনও রয়েছে, অন্যান্য ইসলামপন্থি বা ধর্মভিত্তিক দলগুলো সেখানে ব্যতিক্রম। বস্তুত এ কারণে গত ৫ অগাস্টের আগপর্যন্ত বাংলাদেশের অধিকাংশ গণমাধ্যম জামায়াতে ইসলামীর সংবাদ প্রকাশ ও প্রচারের ব্যাপারে একধরনের স্বনিয়ন্ত্রণ আরোপ করত। এখানে সবশেষ ক্ষমতাসীন সরকার ও দলেরও যে চাপ ছিল, তাতেও সন্দেহ নেই। কিন্তু গণঅভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ অগাস্ট আওয়ামী লীগের পতনের পরে গণমাধ্যমে জামায়াতের খবর প্রকাশ ও প্রচারের ক্ষেত্রে ওই স্বনিয়ন্ত্রণ আর নেই।


সম্প্রতি একটি খবর নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় দারুণ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়, সেটি হলো: ‘পীরগাছায় জামায়াতের হিন্দু শাখার কমিটি ঘোষণা’ । খবরে বলা হয়, গত ২৫ অক্টোবর রাতে রংপুরের পীরগাছা উপজেলা জামায়াত অফিসে এ কমিটির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ অন্য সদস্যদের নাম ঘোষণা করেন ইউনিয়ন জামায়াতের আমির আব্দুল জব্বার। উপজেলা জামায়াতের আমির মাওলানা মোস্তাক আহমেদের বরাতে খবরে বলা হয়, কমিটির সভাপতি হয়েছেন মির্জাপুর ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক ভবেশ চন্দ্র বর্মণ এবং সাধারণ সম্পাদক ওষুধ ব্যবসায়ী বিজন চন্দ্র দাস।


জামায়াতের যেকোনো পর্যায়ে কমিটি প্রধানের পদ ‘আমির’। কিন্তু হিন্দু বা অমুসলিম শাখার কমিটির প্রধান সভাপতি। তাছাড়া জামায়াতের গঠনতন্ত্রে অমুসলিম শাখার কমিটির ধরন কী হবে— ওই বিষয়ে সুস্পষ্ট কিছু উল্লেখ নেই। তবে গঠনতন্ত্রের শেষদিকে অমুসলিম সদস্যদের একটি শপথনামা উল্লিখিত রয়েছে।


প্রসঙ্গত, জামায়াতে ইসলামী একটি আন্তর্জাতিক সংগঠন হিসেবে একসময় এর নাম ছিল ‘জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ’। কিন্তু নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত হওয়ার জন্য দলটিকে তাদের নাম পরিবর্তন করে ‘বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী’ নামকরণ করতে হয় এবং এর গঠনতন্ত্রেও পরিবর্তন আনতে হয় দলটিকে।


জামায়াতের গঠনতন্ত্রে ‘হিন্দু শাখা’ বলে কোনো বিধান নেই। তবে অমুসলিম সদস্যের শপথ রয়েছে। ফলে সম্প্রতি যে খবরটি নিয়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে, ওই খবরটি জামায়াতের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কিছুটা ভুল। দলটির গঠনতন্ত্রের পরিশিষ্ট ১১-তে ‘অমুসলিম সদস্য/সদস্যার শপথনামা’ নামে একটি অংশে বলা হয়েছে, কোনো অমুসলিম যদি জামায়াতে ইসলামীর সদস্য হতে চান তাহলে তাকে এই শপথ গ্রহণ করতে হবে।


শপথটি এরকম: ‘আমি.............., পিতা/স্বামী..............পূর্ণ দায়িত্ববোধের সহিত শপথ গ্রহণ করিতেছি যে, ১. আমি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সদস্য/সদস্যা হিসেবে জামায়াতের নিয়ম শৃংখলা ও সিদ্ধান্তসমূহ নিষ্ঠার সাথে মানিয়া চলিব। ২. জামায়াতের রাজনৈতিক সিদ্ধান্তসমূহ বাস্তবায়নকে গুরুত্ব প্রদান করিব। ৩. বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা করিবার জন্য একনিষ্ঠভাবে ভূমিকা পালন করিব। ৪. উপার্জনে অবৈধপন্থা অবলম্বন করিব না।’

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও