এবারও কি আমরা ডেঙ্গুর কাছে পরাজিত হবো?

ঢাকা পোষ্ট কাকলী হালদার প্রকাশিত: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৯:৪৫

দেশে উদ্বেগজনকভাবে আবারও বাড়ছে ডেঙ্গু জ্বরের প্রকোপ এবং বদলে গিয়েছে ডেঙ্গু জ্বরের প্যাটার্নও। ২০২৪ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন মোট ২৭ হাজার ৭০৫ জন এবং মারা গিয়েছেন ১৪৩ জন।


ডেঙ্গুর এই আউটব্রেকের সময় সর্দি কাশি আর অল্প জ্বর (১০০-১০১ ডিগ্রি ফারেনহাইট) হলেও রোগীর ডেঙ্গু হতে পারে। তীব্র জ্বর বা শরীরে র‍্যাশ নাও হতে পারে। ডেঙ্গু একটি ভাইরাসজনিত রোগ। স্ত্রী এডিস মশার কামড়ের মাধ্যমে ডেঙ্গু ভাইরাস মানবদেহে সংক্রমিত হয় এবং ৫- ১৩ দিনের মধ্যে সাধারণত ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণগুলো দেখা দেয়। কয়েক প্রজাতির এডিস মশা (স্ত্রী মশা) ডেঙ্গু ভাইরাসের প্রধান বাহক এবং এদের মধ্যে এডিস ইজিপ্টি মশা অন্যতম।


ডেঙ্গু ভাইরাসের চারটি সেরোটাইপ (ডেন-১, ডেন-২, ডেন-৩, ডেন-৪) আছে। যেকোনো একটি সেরোটাইপ দিয়ে প্রথমবার সংক্রমণ হলে ডেঙ্গু ক্লাসিক্যাল ফিভার হয় এবং সেই নির্দিষ্ট সেরোটাইপের বিরুদ্ধে রোগী আজীবন অ্যান্টিবডি/প্রতিরোধী ক্ষমতা অর্জন করে। কিন্তু ভিন্ন সেরোটাইপগুলোর বিরুদ্ধে সাময়িক প্রতিরোধী ক্ষমতা অর্জন করে।


পরবর্তীতে ওই একই রোগীর ভিন্ন যে কোনো সেরোটাইপের ডেঙ্গু ভাইরাস দিয়ে সংক্রমণ হলে রোগীর মারাত্মক জটিলতা (ডেঙ্গু শক সিনড্রোম বা ডেঙ্গু হেমোরেজিক ফিভার) হতে পারে। মানুষের দেহের রোগপ্রতিরোধ ব্যবস্থা ডেঙ্গুর প্রতিটি সেরোটাইপের বিরুদ্ধে ভিন্নরকম অ্যান্টিবডি তৈরি করে। একটি সেরোটাইপের বিরুদ্ধে তৈরি হওয়া অ্যান্টিবডি অন্যান্য সেরোটাইপের বিরুদ্ধে পুরোপুরিভাবে সুরক্ষা প্রদান করে না।



ডেঙ্গু ক্লাসিক্যাল ফিভার:


অল্প বা তীব্র জ্বর সেইসাথে সর্দিকাশি, হাড্ডি-মাংসপেশি-জয়েন্টে প্রচণ্ড ব্যথা, কোমর ব্যথা, তীব্র মাথাব্যথা, চোখে বিশেষ করে চোখের পেছনের দিকে ব্যথা, পেটে ব্যথা, বমি বা বমি ভাব, ত্বকে লাল র‍্যাশ বা ডায়রিয়া থাকলেও ডেঙ্গু সন্দেহ করতে হবে এবং দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। বমি বা ডায়রিয়া দিনে ৩ বার বা তার বেশি হলে, মুখে একদমই কিছু খেতে না পারলে অবশ্যই  হাসপাতালে যেতে হবে। তবে বর্তমান ডেঙ্গুতে সব লক্ষণগুলো নাও থাকতে পারে। প্রচণ্ড শরীর ব্যথার কারণে ডেঙ্গুকে ব্রেকবোন ফিভার বলা হয়।


ক্রিটিকাল ফেইজ বা মারাত্মক ডেঙ্গু (ডেঙ্গু হেমোরেজিক ফিভার এবং ডেঙ্গু শক সিনড্রোম):


সাধারণত জ্বর থাকা অবস্থায় ডেঙ্গু রোগী মারা যায় না বা জটিলতা শুরু হয় না। বরং বিপদ শুরু হয় আসলে ৪ দিন পরে জ্বর কমার পর। আগে সাধারণত ৫-৬ দিনের সময় ক্রিটিকাল ফেইজ শুরু হতো, কিন্তু এখন ৩ দিনের শুরুতেই অনেক রোগী শকে চলে যাচ্ছে। বাচ্চাদের ক্ষেত্রে ২ দিন পরেও হতে পারে। আবার অল্প জ্বর থাকা অবস্থায়ও অনেকে খারাপ হয়ে যাচ্ছে। তাই জ্বর কমে গেলেই আরও সতর্ক হতে হবে কারণ এসময় রক্তে প্লাটিলেটও দ্রুত কমতে শুরু করে।


ব্লাড প্রেশার মাপতে হবে প্রথম দিন থেকেই। দিনে ৪-৫ বার মাপতে হবে। যদি ব্লাড প্রেশার সিস্টোলিক বা উপরেরটা ১০০ এর নিচে নেমে যায় এবং ডায়স্টলিক বা নিচেরটা ৬০ এর নিচে নেমে যায় তাহলে সতর্ক হয়ে যেতে হবে। এই দুটোর পার্থক্য বা পালস প্রেশার যদি ২০-এর কম হয় তাহলে রোগী শকে বা খারাপ হয়ে যাচ্ছে বলে ধরে নিতে হবে। এ ক্ষেত্রে রোগীকে অবশ্যই দ্রুত নিকটস্থ হাসপাতালে নিতে হবে।


এছাড়াও রোগীর তীব্র পেটে ব্যথা, পেট ফুলে যাওয়া, রোগীর হাত ও পা ঠান্ডা হয়ে যাওয়া, দাঁতের মাড়ি, নাক বা শরীরের অন্য কোনো স্থান থেকে রক্তপাত, কাশি বা বমির সঙ্গে রক্ত, অস্থিরতা, নেতিয়ে পড়া, প্রচণ্ড দুর্বলতায় অজ্ঞান হয়ে যাওয়া, ফ্যাকাসে হয়ে যাওয়া, প্রস্রাব কম হওয়া বা লাল হয়ে যাওয়া, কালো পায়খানা, বুকে-পেটে-হাতে-পায়ে পানি, খিঁচুনি, শ্বাসকষ্ট হলে বিপদ চিন্তা করতে হবে।


হাতের আঙুলের নখে জোরে চাপ দিয়ে কিছুক্ষণ ধরে রাখলে নখ সাদা হয়ে গেলে ছাড়ে দেওয়ার পরে এবার নখের রঙ ফিরতে যদি ২ সেকেন্ডের (ক্যাপিলারি রিফিল টাইম) বেশি লাগে তাহলে রোগী শকে আছে বলে চিন্তা করতে হবে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও