ইলিশ ঘিরে সংকট সীমিত রপ্তানিতে নয়
ভরা মৌসুমেও এবার দেশে ইলিশ আহরণ কম বলে খবর মিলছে। দামও গেলবারের তুলনায় বেশি। এ অবস্থায় দুর্গাপূজা উপলক্ষে ভারতে ইলিশ রপ্তানি হবে না বলে জানিয়েছিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা। এটাকে গণ-অভ্যুত্থান-পরবর্তী সরকারের রাজনৈতিক অবস্থান বলেও অনেকে ভাবছিলেন। ভারতে ইলিশ না দেওয়ার পক্ষে এটাও বলা হয়েছিল, এ দেশের হিন্দু সম্প্রদায়ও দুর্গাপূজা পালন করবে। এ অবস্থায় রপ্তানি হলে ‘দামি মাছ’টি আরও দুষ্প্রাপ্য হয়ে উঠবে দেশে। সরকারের এমন অবস্থানের মধ্যেই অবশ্য ভারতের ব্যবসায়ীরা ইলিশ আমদানির আবেদন জানান। শেষে সরকারের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জানাল, এবারও ৩ হাজার টন ইলিশ ভারতে রপ্তানির অনুমতি তারা দিচ্ছে।
পাঁচ বছর ধরেই পূজার সময়টায় বিশেষত ভারতীয় বাঙালিদের আগ্রহের পরিপ্রেক্ষিতে কিছু ইলিশ ওখানে রপ্তানি হচ্ছে। এটাকে বিগত সরকারের ‘রাজনৈতিক বিবেচনার প্রকাশ’ বলেও মনে করা হচ্ছিল। ভারতও এতে হয়ে পড়ে অভ্যস্ত। তাই ইলিশ না পাঠানোর পক্ষে যখন অবস্থান নেয় নতুন সরকার, তখন বেশ হতাশার সৃষ্টি হয়, বিশেষত পশ্চিমবঙ্গে। এরই মধ্যে কিছু ইলিশ যে চোরাইপথে যাচ্ছিল না, তা নয়। বাংলাদেশে আহরিত ইলিশ মিয়ানমার হয়ে ভারতে চলে যাওয়ার ঘটনাও কম নেই। ইলিশে ইলিশে তফাত করা অবশ্য কঠিন। তবু ‘পদ্মার ইলিশ’ নিয়ে ভারতীয় বাঙালিদের আলাদা আকর্ষণ রয়েছে। একটু বেশি দাম দিয়েও, বিশেষত পূজার সময় সেটা কিনতে তারা প্রস্তুত। তবে ওখানে যেসব নিম্ন আয়ের মানুষ আছে, তারা নিশ্চয়ই ভারতে আহরিত ইলিশ কিনতেও হিমশিম খায়। তাদের সবারই কিছুটা সুবিধা হয় বাংলাদেশ থেকে অন্তত পূজার সময় কিছু ইলিশ গেলে। তাতে উৎসবে দাম আরও বেড়ে যাওয়ার প্রবণতাটা হয়তো কমে। এবারও সেই সুযোগ থেকে তাদের বঞ্চিত হতে হচ্ছে না। ভারতের ইলিশ আমদানিকারকেরাও সরকারের নতুন সিদ্ধান্তে খুশি হবেন। এ ‘সাপ্লাই চেইনে’ অন্তর্ভুক্ত অন্যরাও।
- ট্যাগ:
- মতামত
- ইলিশ রক্ষা
- ইলিশ রপ্তানি