উপাচার্য নিয়োগ হোক উন্নত বিশ্বের আদলে

যুগান্তর ড. মো. আজিজুর রহমান প্রকাশিত: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯:২২

আমি যখন এ কলামটি লিখছি, তখন বিশ্ববিখ্যাত সাময়িকী টাইমস হায়ার এডুকেশনের ওয়েবসাইটে যুক্তরাজ্য ও অস্ট্রেলিয়ার পাঁচটি স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এবং সমপর্যায়ের প্রেসিডেন্ট পদের জন্য দরখাস্ত আহ্বান করে প্রকাশিত বিজ্ঞাপন আমার চোখের সামনে। এর মধ্যে রয়েছে যুক্তরাজ্যের হার্টফোর্ডশায়ার বিশ্ববিদ্যালয়, এসেক্স বিশ্ববিদ্যালয় ও উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় এবং অস্ট্রেলিয়ার ওলংগং বিশ্ববিদ্যালয় ও ক্যাথলিক ইনস্টিটিউট অফ সিডনির উপাচার্য বা প্রেসিডেন্ট নিয়োগের বিজ্ঞাপন।


এ বিজ্ঞপ্তিগুলো গত ২০ দিনের মধ্যে প্রকাশিত এবং এখনো আবেদন করার সময়সীমা পার হয়নি। অন্য চাকরির সাইটগুলোয় অনুসন্ধান করে বিশ্বব্যাপী প্রায় শতাধিক উপাচার্য পদে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি চোখে পড়ল। টাইমস হায়ার এডুকেশনের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ওই বিজ্ঞাপিত উপাচার্য পদের আবেদন প্রক্রিয়া খুব সহজ। আবেদনকারীকে শুধু একটি কাভার লেটার ও জীবনবৃত্তান্ত একটি লিংকের মাধ্যমে আপলোড করতে হবে।


উন্নত বিশ্বে উপাচার্য পদটিকে কীভাবে দেখা হয় এবং একজন উপচার্যকে কী কী কাজ করতে হয়, সেটা পরিষ্কার করতে যুক্তরাজ্যের এসেক্স বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগের বিজ্ঞাপনের ভাষা ও প্রক্রিয়া একটু তুলে ধরতে চাই। সেই অনলাইন বিজ্ঞাপনটিতে প্রথমে উপাচার্য কী ধরনের পদ ও ওই পদের দায়িত্ব সম্পর্কে সংক্ষেপে ধারণা দেওয়া হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে-উপাচার্য হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাহী প্রধান। উপাচার্যের দায়িত্ব হলো বিশ্ববিদ্যালয়ের সব প্রশাসনিক ও একাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনা করা এবং সব শিক্ষক, স্টাফ এবং ছাত্রদের নেতৃত্ব দেওয়া। শিক্ষা ও গবেষণায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কাউন্সিল কর্তৃক নির্ধারিত মিশন, উদ্দেশ্য এবং পারফরম্যান্স সূচকগুলো পূরণ করার লক্ষ্যে উপাচার্য কাজ করবেন এবং তার কাজের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিলের কাছে দায়বদ্ধ থাকবেন।



এরপর উপাচার্যের মূল দায়িত্বগুলো কী হবে তা মোট ১২টি পয়েন্টে উল্লেখ করা হয়েছে। এর ১ম পয়েন্টে বলা হয়েছে, উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ের মিশন এবং এর শিক্ষক, স্টাফ এবং ছাত্রদের দৃশ্যমান এবং মূল্যবোধভিত্তিক নেতৃত্ব প্রদান করবেন, যা বিশ্ববিদ্যালয়কে পৃথিবীর দ্রুত পরিবর্তনশীল শিক্ষার পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাইয়ে চলতে সক্ষম করবে। ২য় পয়েন্টে বলা হয়েছে, উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য একটি আকর্ষণীয়, স্বতন্ত্র, স্পষ্ট এবং ইমপ্যাক্ট আছে এরকম একটি মিশন তৈরি করবেন। ৩য় পয়েন্টে বলা হয়েছে, উপাচার্য আত্মবিশ্বাস এবং সৃজনশীলতার সঙ্গে শিক্ষা ও গবেষণা উভয় ক্ষেত্রেই উৎকর্ষ সাধনের জন্য সমানভাবে গুরুত্ব দিয়ে কাজ করবেন।


উপাচার্যের মূল দায়িত্বের ৪র্থ পয়েন্টে বলা হয়েছে, উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্জন ও কৃতিত্ব প্রচারে উৎসাহী হয়ে কাজ করবেন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের খ্যাতি রক্ষা এবং আঞ্চলিক, জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে এর প্রোফাইলকে উন্নত করার জন্য আন্তরিকভাবে চেষ্টা করবেন। এর পরের পয়েন্টটিতে বলা হয়েছে, উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, স্টাফ এবং ছাত্রদের এসেক্স বিশ্ববিদ্যালয়ের স্পিরিট অনুশীলন করতে, ভালো ফলাফল অর্জন করতে এবং গবেষকদের গ্রাউন্ডব্রেকিং গবেষণা করতে উৎসাহিত করবেন। অন্য দায়িত্বগুলোর মধ্যে রয়েছে-কৌশলগত ব্যবস্থাপনা, একাডেমিক স্বাধীনতা এবং বাকস্বাধীনতাকে উন্নীত করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ; দেশে-বিদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, শিল্পপ্রতিষ্ঠান ইত্যাদির সঙ্গে জ্ঞান বিনিময়; সহযোগিতামূলক কাজের জন্য ফলপ্রসূ অংশীদারত্ব গড়ে তোলা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট, একাডেমিক কাউন্সিল, ছাত্র প্রতিনিধি এবং ছাত্র সংসদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করা, যাতে অসাধারণ একাডেমিক স্ট্যান্ডার্ড এবং গভর্নেন্স অর্জিত হয়।


ওই উপাচার্য নিয়োগের বিজ্ঞাপনটিতে উপাচার্যের মূল দায়িত্বের ১২টি পয়েন্টের পর উপাচার্য পদের জন্য আবেদনকারীর মোট দশটি যোগ্যতার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এর মধ্যে আছে আবেদনকারীর শক্তিশালী উপস্থাপনা এবং নেটওয়ার্কিং দক্ষতা; জনসম্মুখে এবং মিডিয়ায় কথা বলার আত্মবিশ্বাস; বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে এবং বাইরে উভয় ক্ষেত্রেই বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে কার্যকরভাবে কাজ করার রাজনৈতিক বিচক্ষণতা; আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে কাজ করার জন্য বুদ্ধিমত্তা, বোঝাপড়া এবং সাংস্কৃতিক সংবেদনশীলতা; আঞ্চলিক, জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিত্ব করার জন্য ভ্রমণ করার ইচ্ছা; বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বার্থ এবং প্রভাবকে আরও এগিয়ে নিতে অন্যান্য সংস্থার সঙ্গে ফলপ্রসূ অংশীদারত্বের ট্র্যাক-রেকর্ড; গবেষণা ও উন্নয়ন তহবিল সংগ্রহের বিদ্যমান প্রোগ্রামগুলোর বিকাশ ঘটানো ও নেতৃত্ব দেওয়া; বিশ্ববিদ্যালয়ের এলামনাই ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের সঙ্গে পারস্পরিক উপকারী সম্পর্ক গড়ে তোলার ক্ষমতা; বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র প্রতিনিধি এবং ছাত্র ইউনিয়নকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মিশন ও উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে অত্যন্ত মূল্যবান অংশীদার হিসাবে বিবেচনা করা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শাসন, নেতৃত্ব এবং ব্যবস্থাপনা ব্যবস্থার কার্যকারিতা বাড়ানোর জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিলের সঙ্গে কাজ করার জন্য উন্মুক্ত এবং সহযোগিতামূলক পদক্ষেপ। যুক্তরাজ্যের হার্টফোর্ডসায়ার বিশ্ববিদ্যালয় ও উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় এবং অস্ট্রেলিয়ার ওলংগং বিশ্ববিদ্যালয়ে কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া উপাচার্য বা প্রেসিডেন্ট নিয়োগে প্রায় একই ধরনের যোগ্যতার কথা বলা হয়েছে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও