রেমিট্যান্স নিয়ে দুশ্চিন্তায় সরকার
দেশে ডলারের দাম বাড়িয়ে দেওয়ায় এবং ঈদ-উল-আজহা উপলক্ষ্যে বেশি টাকা পাঠানোর ফলে জুন মাসে রেকর্ড পরিমাণ রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয় পেয়েছিল বাংলাদেশ। এক মাস না যেতে উল্টো চিত্র দেখা যাচ্ছে। গত এক সপ্তাহে রেমিট্যান্স প্রবাহ উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমে গেছে। মাস শেষে সার্বিক রেমিট্যান্স চিত্রে এর ফল দেখা যাবে।
রেমিট্যান্সের এ নেতিবাচক প্রবাহ দেশের বৈদেশিক মুদ্রার সঞ্চয় বা রিজার্ভের ওপর চাপ তৈরি করবে। এ অবস্থায় বেশ দুশ্চিন্তায় পড়েছে সরকার। নানা কৌশলে যেকোনো মূল্যে রেমিট্যান্স বাড়াতে কাজ শুরু করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। নির্ধারিত রেটের চেয়ে বেশি দামে ডলার কিনতে মৌখিকভাবে নির্দেশ দিচ্ছে তারা।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কোটা সংস্কার নিয়ে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে সৃষ্ট উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ইন্টারনেট বন্ধ থাকাসহ নানা কারণে চলতি মাসে রেমিট্যান্স কমে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। আন্দোলনে সহিংসতায় বহু হতাহতের প্রতিবাদে দেশে ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স না পাঠানোর বিষয়ে ক্যাম্পেইন করছেন অনেক প্রবাসী। তাদের ক্যাম্পেইন যদি সফল হয় আর সরকার বা কেন্দ্রীয় ব্যাংক যদি এর বিপরীতে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে না পারে তাহলে রেমিট্যান্স আহরণে বড় ধরনের ধাক্কা খেতে পারে বাংলাদেশ।
বৈদেশিক মুদ্রার বাজারে স্থিতিশীলতা ফেরাতে গত ৮ মে ‘ক্রলিং পেগ’ পদ্ধতি চালুর পর ডলারের দর এক লাফে ৭ টাকা বেড়ে ১১৭ টাকা হয়। দুই মাসের বেশি সময় ধরে ডলারের দর ১১৭ থেকে ১১৮ টাকায় স্থিতিশীল আছে। দাম বাড়ায় রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়তে থাকে। কিন্তু ছন্দপতন হয় গত সপ্তাহে। কোটা সংস্কার ইস্যুতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের কারণে গত সপ্তাহের ছয় দিনে অন্য সময়ের এক দিনের সমান রেমিট্যান্সও আসেনি।
এদিকে সাধারণত সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে আগের সপ্তাহের রেমিট্যান্সের হালনাগাদ তথ্য প্রকাশ করে বাংলাদেশ ব্যাংক। কিন্তু আজ ২৮ জুলাই রোববার এ তথ্য প্রকাশ করেনি কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্ভরযোগ্য সূত্রের তথ্য অনুযায়ী, গত সপ্তাহে ১৯ থেকে ২৪ জুলাই দেশে রেমিট্যান্স এসেছে মাত্র ৭ কোটি ৮০ লাখ মার্কিন ডলার।
এর আগে ১ থেকে ১৮ জুলাই এসেছিল ১৪২ কোটি ২০ লাখ ডলার। অর্থাৎ চলতি মাসের প্রথম ১৮ দিনে প্রতিদিন গড়ে প্রবাসী আয় এসেছিল ৭ কোটি ৯০ লাখ ডলার। এ হিসাব বলছে গত সপ্তাহে দেশে রেমিট্যান্স আসা উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমে গেছে।