![](https://media.priyo.com/img/500x/https://tds-images-bn.thedailystar.net/sites/default/files/styles/big_202/public/images/2024/07/28/ds.jpg?itok=Hq77wqke×tamp=1722136529)
শহরজুড়ে ব্লক রেইড, আতঙ্কে নগরবাসী
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সারি সারি গাড়ি যাচ্ছে তাদের এলাকায়—কখনোবা সূর্যাস্তের পর। বাহিনীর সদস্যরা গাড়িগুলো থেকে তড়িৎগতিতে লাফিয়ে নামছে, মুহূর্তেই ঘিরে ফেলছে এলাকা, অবস্থান নিচ্ছে বিভিন্ন পয়েন্টে। কখনো হাতে শক্ত করে ধরা বন্দুক, তর্জনী ট্রিগারে।
'আপনার বাসার ভেতরে যান, বাইরে আসার চেষ্টা করবেন না'—মেগাফোনের এই ঘোষণা ভবনের দেয়ালগুলোতে প্রতিধ্বনিত হয়ে ছড়িয়ে পড়ছে এলাকা জুড়ে।
আতঙ্কিত স্থানীয় মানুষ বাহিনীর সদস্যদের কথা মতোই ঢুকে যায় যে যার ঘরে—শুরু হয় ব্লক রেইড।
খুব অল্প সময়ের মধ্যেই টার্গেট করা বাড়ির ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয় এবং রাস্তার আলো একে একে নিভে যায়। শুধু আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গাড়িতে লাগানো বাতি জ্বলতে থাকে। পরবর্তী এক থেকে দুই ঘণ্টার মধ্যে ডাকা হয় অতিরিক্ত বাহিনী, যারা কয়েকটি দলে বিভক্ত হয়ে বিভিন্ন বাড়িতে অভিযান শুরু করে।
এভাবেই রাজধানীর অন্তত আটটি এলাকার বাসিন্দা তাদের অভিজ্ঞতা জানিয়েছেন দ্য ডেইলি স্টারের কাছে।
সাম্প্রতিক সহিংসতায় অন্তত ১৬২টি তাজা প্রাণ ঝড়ে যাওয়া দেখে যাদের ট্রমা এখনো কাটেনি, তাদের সামনে আবার এমন দৃশ্য আরও বেশি আতঙ্কের সৃষ্টি করছে।
এসব অভিযান চালানো হয়েছে—মাতুয়াইল, শনির আখড়া, যাত্রাবাড়ী, কাজলা, বসুন্ধরা, শাহিনবাগ, মিরপুর ডিওএইচএস, ইসিবি চত্বর ও মাটিকাটা এলাকায়।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানিয়েছে, অভিযানের সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দরজায় কড়া নাড়ছে, ভেতরে প্রবেশ করছে এবং সহিংসতার সঙ্গে জড়িত বা তাদের সংস্পর্শে থাকা সন্দেহভাজন কাউকে পেলে গ্রেপ্তার করছে।
কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সহিংসতার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তারে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ব্লক রেইড চালাচ্ছে যৌথবাহিনী।
প্রধান লক্ষ্য শিক্ষার্থী
গতকাল শনিবার পর্যন্ত পুলিশ দুই হাজার ৫৩৬ জনকে এবং র্যাব ৭১ জনকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ জানিয়ে এক কর্মকর্তা বলেন, 'অভিযান পরিচালনা করার আগে আমরা সংঘর্ষ সৃষ্টিকারী ও তাদের অবস্থান শনাক্ত করতে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীসহ স্থানীয় মানুষের কাছ থেকে তথ্য নিচ্ছি এবং তাদের ডিজিটাল ফুটপ্রিন্ট সংগ্রহ করছি।'
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বলছে, এই ব্লক রেইড চলছে চার ধরনের সন্দেহভাজনদের গ্রেপ্তার করার জন্য—যারা সহিংসতার নির্দেশ দিয়েছে, তহবিল দিয়েছে, আগ্নেয়াস্ত্র দিয়েছে এবং যারা সহিংসতায় অংশ নিয়েছে।
তবে অভিযান প্রত্যক্ষ করা স্থানীয়দের অনেকেই বলছেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা শিক্ষার্থীদের খোঁজ করছে এবং শিক্ষার্থী কাউকে পেলে তার মোবাইল ফোন তল্লাশি করছে, যা বেআইনি।