বাজেটে ইচ্ছাতালিকা বড়, পরিকল্পনা কম, চাপে থাকবে মানুষ
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর লিখেছিলেন, ‘কলস যত বড়ই হউক না, সামান্য ফুটা হইলেই তাহার দ্বারা আর কোনো কাজ পাওয়া যায় না। তখন যাহা তোমাকে ভাসাইয়া রাখে তাহাই তোমাকে ডুবায়।’ দেশের অর্থনীতিকে একটি কলসির সঙ্গে তুলনা করলে দেখা যাচ্ছে ফুটো একটা নয়, অসংখ্য। এর মধ্যে সবচেয়ে বড়টির নাম মূল্যস্ফীতি। প্রায় দুই বছর ধরে মূল্যস্ফীতি ৯ শতাংশের বেশি। আক্ষরিক অর্থেই বাজারদরের চাপে গলা পর্যন্ত পানিতে ডুবে আছে সাধারণ মানুষ, নাকটা সামান্য একটু উঁচিয়ে কোনোরকমে টিকে আছে তারা।
নতুন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী গতকাল বৃহস্পতিবার যে বাজেট দিলেন, তাতে নতুন অর্থবছরে অনেক আশার কথা শুনিয়েছেন। বলেছেন, মূল্যস্ফীতি সাড়ে ৬ শতাংশে নামিয়ে আনা হবে। যদিও স্বীকার করে নিয়েছেন, বিগত দুটি বাজেটে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিলেও তা অনমনীয়ভাবে ৯ শতাংশের ওপর অবস্থান করছে। এ জন্য নতুন অর্থবছরে আগে নেওয়া দুই নীতিই অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। যেমন বাজেট–ঘাটতি কমানো এবং কৃচ্ছ্রসাধন। এই দুই পথে এবারও মূল্যস্ফীতি কমবে—এই ভরসা অর্থমন্ত্রী বাজেটে দিয়েছেন। তবে তা কাজে দেবে, এটা বলা যাবে না। বরং বাজেটে বিনিয়োগ কমানোর কথা আছে। আর আছে অনেক অনুমান আর ‘যদি’র ওপর ভরসা। ফলে এই বাজেট অনেকটাই এখন ইচ্ছাতালিকার বাজেট।