বিদ্যুতের প্রধান উৎস হতে পারে সৌরবিদ্যুৎ

www.ajkerpatrika.com ড. মইনুল ইসলাম প্রকাশিত: ০১ জুন ২০২৪, ১২:২৩

পত্রপত্রিকার খবর মোতাবেক ২০২৪ সালের মে মাসে বাংলাদেশে মাত্র ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াটের মতো বিদ্যুৎ উৎপাদিত হচ্ছে নবায়নযোগ্য উৎসগুলো থেকে। অথচ বাংলাদেশের ‘সাসটেইনেবল অ্যান্ড রিনিউয়েবল এনার্জি ডেভেলপমেন্ট অথরিটি’ তাদের ঘোষিত ন্যাশনাল সোলার এনার্জি রোডম্যাপে ৩০ হাজার মেগাওয়াটের সোলার এনার্জির টার্গেট অর্জনের সুপারিশ করেছে, যার মধ্যে ১২ হাজার মেগাওয়াট সৌরবিদ্যুৎ ছাদভিত্তিক সোলার প্যানেল থেকে আহরণের পরিকল্পনা করা হয়েছে। কিন্তু রোডম্যাপ ঘোষণার পর কয়েক বছর অতিবাহিত হলেও এই টার্গেট পূরণের উপযুক্ত কর্মসূচি আজও গৃহীত হলো না কেন? দেশের বড় বড় নগর এবং মফস্বল শহরের প্রাইভেট ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও বসতবাড়ির ছাদ ব্যবহারের মাধ্যমে ১০ থেকে ১২ হাজার মেগাওয়াট সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন মোটেও অসম্ভব মনে হচ্ছে না, প্রয়োজন হবে সোলার প্যানেল ও ব্যাটারির ভর্তুকি-দাম কর্মসূচি বাস্তবায়ন, সৌরবিদ্যুতের যন্ত্রপাতির ওপর আরোপিত শুল্ক হ্রাস এবং যুগোপযোগী ‘নেট মিটারিং’ পদ্ধতি চালু করা।


সম্প্রতি কয়েক দিন ধরে ভারতের সাধারণ নাগরিকদের বাড়ির ছাদে সৌরবিদ্যুৎ প্যানেল স্থাপনের জন্য ‘প্রধানমন্ত্রীর সূর্যোদয় যোজনা’ বা ‘পিএম রুফটপ সোলার যোজনা’ চালুর বিস্তারিত বিবরণ সোশ্যাল মিডিয়ার ইউটিউবে প্রচারিত হয়ে চলেছে। এতে দেখা যাচ্ছে, ৪৭ হাজার রুপি খরচে তিন কিলোওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতার সোলার প্যানেল বাড়ির ছাদে স্থাপন করতে চাইলে ওই যোজনার কাছে আবেদন করার নিয়মগুলো পরিপূর্ণভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। এই ব্যাখ্যা মোতাবেক ৪৭ হাজার রুপির মধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে ১৮ হাজার রুপি ভর্তুকি দেওয়া হবে, আর সোলার প্যানেল স্থাপনকারী ভোক্তাকে ব্যয় করতে হবে ২৯ হাজার রুপি। ১ কোটি পরিবারকে ‘পিএম রুফটপ সোলার যোজনায়’ অন্তর্ভুক্ত করার পরিকল্পনা নিয়েছে ভারত। ইউটিউবে যোজনার পূর্ণ বিবরণ পাঠ করার পর আমার কাছে মনে হয়েছে, এ মডেলটি বাংলাদেশে প্রয়োগযোগ্য। আমার মতে, ভারতের ‘প্রধানমন্ত্রীর সূর্যোদয় যোজনা’র মতো একটি কর্মসূচি অবিলম্বে বাংলাদেশে চালু করা প্রয়োজন, যেখানে সরকার রুফটপ সোলার প্যানেল স্থাপনের মোট খরচের এক-তৃতীয়াংশ বা তারও বেশি ভর্তুকি দেবে। এই ভর্তুকি কর্মসূচি বাড়ির মালিকদের তাঁদের ছাদে সোলার প্যানেল স্থাপনে উৎসাহিত করবে বলে আমার দৃঢ়বিশ্বাস।


গণচীন, ভিয়েতনাম, থাইল্যান্ড, ভারত, ফিলিপাইন এবং জার্মানি ছাদভিত্তিক সোলার পাওয়ার উৎপাদনে চমকপ্রদ সাফল্য অর্জন করেছে। সোলার প্যানেল ও ‘ব্যাটারি’র দামে সুনির্দিষ্ট ভর্তুকি প্রদান এবং ভর্তুকি-দামে ‘নেট মিটারিং’ স্থাপনে প্রণোদনা প্রদান—এসব দেশের সাফল্য অর্জনের প্রধান উপাদান হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। এই ‘নেট-মিটারিং’ প্রযুক্তি গণচীন থেকে এখন সুলভে আমদানি করা যাচ্ছে। অথচ এ ক্ষেত্রে আমাদের অগ্রগতি একেবারেই নগণ্য রয়ে গেল কেন? রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করার জন্য আমরা ১২ বিলিয়ন ডলার রাশিয়ান ঋণসহ ১ লাখ ১৩ হাজার কোটি টাকার বেশি বিনিয়োগ করছি, যেখান থেকে ২০২৫ সাল নাগাদ আমরা নাকি ২ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাব। ১২ বিলিয়ন ডলার রাশিয়ান ঋণে নির্মীয়মাণ রূপপুর প্রকল্প আমার বিবেচনায় একটি ‘সাদা হাতি প্রকল্প’, কারণ ভারতের তামিলনাড়ুর কুদান কুলামে রাশিয়া মাত্র ৬ বিলিয়ন ডলারে ২ হাজার মেগাওয়াটের একটি পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প নির্মাণ করে দিয়েছে কয়েক বছর আগে। আমাদের ২ হাজার ৪০০ মেগাওয়াটের জন্য ১২ বিলিয়ন ডলার রাশিয়ান ঋণ নিতে হলো কেন? এই প্রকল্পে ক্ষমতাসীন মহল ও তাদের পৃষ্ঠপোষকতাপ্রাপ্ত ঠিকাদারদের মার্জিন কত? এই মহাবিপজ্জনক পারমাণবিক প্রযুক্তি বাংলাদেশের মতো একটি ঘনবসতিপূর্ণ দেশের মাঝখানে স্থাপনকে আমি সমর্থন করিনি।


এখন আবার দ্বিতীয় রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প নির্মাণের তোড়জোড় শুরু হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী রাশিয়ান পারমাণবিক সংস্থা রোসাটমের কর্তাব্যক্তিদের সঙ্গে এ ব্যাপারে ইতিমধ্যেই আলোচনা সেরে ফেলেছেন। অথচ ছাদভিত্তিক সোলার পাওয়ার প্রযুক্তিকে অগ্রাধিকার দিলে ২ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের ব্যয় রূপপুর পারমাণবিক কেন্দ্রের মোট ব্যয়ের অর্ধেকও হতো না। সৌরবিদ্যুৎ পরিবেশবান্ধব এবং ঝুঁকিমুক্ত প্রযুক্তি। সাম্প্রতিক গবেষণায় প্রমাণিত, এক ইউনিট সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন খরচ ইতিমধ্যেই গণচীন, ভিয়েতনাম ও থাইল্যান্ডে বাংলাদেশি ১০ টাকার নিচে নেমে এসেছে। ১৭ নভেম্বর ২০২৩ একটি ইংরেজি দৈনিকে প্রকাশিত এক খবরে বলা হয়েছে, ব্লুমবার্গের এক গবেষণায় দেখানো হয়েছে যে ২০২৫ সালের পর সৌরবিদ্যুতের উৎপাদন খরচ অন্য সব বিকল্পের তুলনায় বাংলাদেশেও কমে আসবে। ২০৩০ সালে এক মেগাওয়াট সৌরবিদ্যুতের উৎপাদন খরচ হবে মাত্র ৪২ ডলার, যেখানে এলএনজিচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্রে তা পড়বে ৯৪ ডলার এবং কয়লাচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্রে ১১৮ ডলার।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও