উপজেলা নির্বাচন: দলীয় প্রতীক, কম ভোট ও বরিশালের চমক

ডেইলি স্টার আমীন আল রশীদ প্রকাশিত: ১২ মে ২০২৪, ১২:০৭

চলমান উপজেলা নির্বাচন নিয়ে দুটি খবরে আলোকপাত করা যাক—


১. উপজেলা নির্বাচনে এবারই সবচেয়ে কম ভোট।


২. বরিশাল সদর উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেতাদের ভিড়ের মধ্যে সাবেক শিক্ষক জয়ী।


প্রথম প্রশ্ন হলো, এবারের নির্বাচনে ভোটের হার কেন এত কম? মানুষ কি ভোট থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে, নাকি উপজেলা পরিষদের ব্যাপারে মানুষের আগ্রহ কম? জেলা পরিষদ, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদের মতো স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোর পাশাপাশি উপজেলা পরিষদের আসলে কাজটা কী বা সাধারণ মানুষের কাছে এই প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম কতটা স্পষ্ট—তা নিয়ে প্রশ্ন আছে।


দ্বিতীয় প্রশ্ন হলো, বরিশাল সদর উপজেলার মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় ক্ষমতাসীন দলের একাধিক নেতাকে হারিয়ে একজন অরাজনৈতিক ব্যক্তি কী করে জয়ী হলেন? এটি কি দলীয় কোন্দলের ফল, নাকি মানুষ সত্যিই ভেবেছে যে একজন নির্দলীয় লোক জয়ী হলে তিনি মানুষের কথা ভাববেন? মানুষ কি তাহলে দলীয় প্রার্থীদের ব্যাপারে ক্ষুব্ধ?


দলীয় প্রতীকে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের বিধান করার আগ পর্যন্ত, আরও পরিষ্কার করে বললে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে কেন্দ্রীয় সরকার এবং কেন্দ্রীয় রাজনীতির প্রভাব খাটানোর পরিমাণ ও প্রবণতা যতদিন কম ছিল, ততদিন পর্যন্ত স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোয় অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক, সমাজকর্মী, নির্দলীয় এলিট, স্থানীয়ভাবে পরিচিত সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বদের অনেকেই জয়ী হয়ে আসতেন।


অনেক সময় দলীয় পরিচয়ধারী অনেক প্রার্থীও এসব নির্দলীয় প্রার্থীর কাছে হেরে যেতেন। কেননা সাধারণ মানুষ তখন ভোট দিতেন ব্যক্তিকে। সামাজিকভাবে তার গ্রহণযোগ্যতা, তার সততা, মানুষের জন্য তার অবদান ইত্যাদি বিবেচনা করে। কিন্তু যখনই স্থানীয় সরকার নির্বাচনও দলীয় প্রতীকে হওয়া শুরু হলো, তখন থেকে এসব নির্দলীয় ভালো মানুষ, নির্দলীয় সমাজকর্মী, নির্দলীয় শিক্ষক, নির্দলীয় ব্যবসায়ীদের জন্য নির্বাচনের দরজা প্রায় বন্ধ হয়ে গেলো।


সাম্প্রতিক বছরগুলোয় নির্বাচনী ব্যবস্থাটা প্রশ্নবিদ্ধ হতে হতে এমন জায়গায় গিয়ে ঠেকেছে যে, ক্ষমতাসীন দলের মনোনয়ন পাওয়া মানেই তিনি বিজয়ী। এমনও দেখা গেছে যে, সরকারি দলের মনোনয়ন পাওয়ার পরেই কেউ কেউ বিজয় মিছিলও করেছেন! কারণ তিনি ধরেই নিয়েছেন যে, মনোনয়ন যখন পেয়েছেন, তখন তিনিই জিতবেন।


এসব কারণে বেশ কয়েক বছর ধরেই স্থানীয় সরকার নির্বাচনে নির্দলীয় ব্যক্তিদের জয় পাওয়ার হার খুবই কম। কিন্তু এবার উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ তাদের কোনো প্রার্থীকে দলীয় প্রতীক দেয়নি। দলের স্থানীয় নেতারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তবে নৌকা প্রতীক নিয়ে নয়।


গত ২২ জানুয়ারি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের জরুরি সভা শেষে গণভবন গেটে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের জানিয়েছিলেন, এবারের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রতীক থাকবে না। ফলে একক দলীয় প্রার্থী মনোনয়নের বিষয়টিও আর থাকছে না।


গণমাধ্যমের খবর বলছে, স্থানীয় নির্বাচনে দলীয় প্রতীকের পক্ষে-বিপক্ষে দলের সিনিয়র নেতারাও মতামত দেন। যেখানে বেশির ভাগ নেতা দলীয় কোন্দল ও সংঘাত থেকে নেতা-কর্মীদের দূরে রাখতে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রতীক না রাখার পরামর্শ দিয়েছেন। এমনকি আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাও নেতাদের এই মতামতের প্রতি নিজের সমর্থন জানান।


প্রশ্ন হলো, স্থানীয় নির্বাচন যদি দলীয় প্রতীকে করার ফলে সংঘাত ও কোন্দল বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়, তাহলে কেন স্থানীয় নির্বাচনে দলীয় প্রতীক চালু করা হলো?

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

এই সম্পর্কিত

আরও