বাংলাদেশ সাত বছর ধরে মিয়ানমার সৃষ্ট রোহিঙ্গা সংকটের বোঝা বহন করে চলেছে। বর্তমানে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে আরাকান আর্মি (এএ) এবং মিয়ানমার সেনাবাহিনীর মধ্যেকার সংঘর্ষে বাংলাদেশের সীমান্ত অঞ্চলের বাসিন্দারা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে এবং এর পাশাপাশি এএ’র তীব্র আক্রমণ সহ্য করতে না পেরে মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী (বিজিপি) এবং সেনাবাহিনীর সদস্যরা বাংলাদেশে পালিয়ে এসে আশ্রয় নিচ্ছে। মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর এ দেশে পালিয়ে আসা একটা নতুন ধারার সৃষ্টি করেছে এবং এর ধারাবাহিকতায় তাদের ফেরত পাঠানোর কার্যক্রম ও অন্যান্য প্রাশাসনিক কাজ বেড়ে গেছে।
বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমারের বর্ডার গার্ড পুলিশ ও সেনাবাহিনীর ২৮৫ সদস্যকে মিয়ানমারের জাহাজে নৌপথে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। প্রায় সাড়ে বারো লাখ রোহিঙ্গার বোঝা বহনের পাশাপাশি বাংলাদেশের পার্বত্য অঞ্চলে কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) সন্ত্রাসীদের কার্যক্রম এবং নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে তাদের সংঘর্ষের ফলে হতাহতের সংখ্যা বাড়ছে। নিরাপত্তার দৃষ্টিকোণ থেকে এ ধরনের ঘটনা আদৌ কাম্য নয়। বাংলাদেশের এ অঞ্চল বিভিন্ন কারণে অতীব গুরুত্বপূর্ণ এলাকা, পার্বত্য চট্টগ্রামে কয়েক দশক ধরে চলমান সংঘাত পার্বত্য শান্তি চুক্তির মাধ্যমে নিরসন করায় বেশ কয়েক দশক ধরে সেখানে শান্তি বিরাজ করছিল। এর ফলে এ অঞ্চলের যোগাযোগব্যবস্থা ও আর্থসামাজিক উন্নয়ন বেগবান হয়েছিল। বর্তমান প্রেক্ষাপটে আবার এ এলাকার শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নিরাপত্তা বাহিনী ও সংশ্লিষ্ট সবাইকে একত্রে কাজ করতে হবে। বাংলাদেশের পার্বত্য জেলাগুলো এবং কক্সবাজার জেলার সঙ্গে আমাদের প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমার ও ভারতের সীমান্ত রয়েছে। কক্সবাজার ও এ অঞ্চল পর্যটনের জন্য অতি গুরুত্বপূর্ণ এলাকা। বাংলাদেশের নিরাপত্তা ও আর্থসামাজিক উন্নয়নে এ অঞ্চলের বিশেষ ভূমিকা আছে। তাই যত দ্রুত সম্ভব পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণপূর্বক শান্তি ফিরিয়ে আনা জরুরি।