রাজউকের ইন্সপেক্টররা এক একজন ‘জামাই’
কোনো জমির মালিক রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) কাছে ভবনের নকশা অনুমোদনের আবেদন করলে প্রথমেই লাগে ইমারত পরিদর্শকের (বিল্ডিং ইন্সপেক্টর) মতামত। স্থান পরির্দশন করে পরিদর্শকের মতামত ইতিবাচক না হলে নকশা অনুমোদনের আবেদন ‘গোড়ায় গলদ’ হয়ে যায়। তখন থেকেই শুরু হয় ইন্সপেক্টরদের উৎকোচ বাণিজ্য। এর পর ভবন তৈরির সময় নানা অনিয়মের ধুয়ো তুলে চলে বাণিজ্য। পুরো কাজ শেষ হওয়ার পরও থামে না তাদের ‘যন্ত্রণা’। আবাসিক ভবনের অ-আবাসিক ব্যবহারসহ নানা ছুতোয় ইন্সপেক্টরদের বাণিজ্য চলতেই থাকে। এ জন্য রাজউকে ইন্সপেক্টরদের আরেক নাম ‘জামাই’।
রাজধানীর বেইলি রোডে আগুনে পুড়ে কঙ্কাল হওয়া গ্রিন কোজি কটেজের অনুমোদনের সময় ওই এলাকার ইন্সপেক্টরের দায়িত্বে ছিলেন সেলিম বকাউল। ২০১৫ সালে ওই এলাকার ইন্সপেক্টর হয়ে আসেন আওরঙ্গজেব সিদ্দিকী নান্নু। পরে নান্নু বদলি হয়ে চলে যান বনানী এলাকায়। নান্নু বনানী এলাকায় দায়িত্ব পালনের সময় ২০১৯ সালের ২৮ মার্চ এফআর টাওয়ারে আগুন লেগে ২৬ জনের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় দায়ের করা মামলায় নান্নু আসামি ছিলেন। অভিযোগ থেকে অব্যাহতি পেয়ে আবার সিদ্ধেশ্বরী এলাকার দায়িত্বে আসেন। আর সিদ্ধেশ্বরী থেকে মোহাম্মদপুরে বদলি করার পর সেলিম বকাউলের বিরুদ্ধে স্থানীয় ভবন মালিকদের কাছ থেকে নানা উসিলায় উৎকোচ বাণিজ্যের অভিযোগ ওঠে। তখন সেলিম বকাউলকে নবগঠিত গাজীপুর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষে (গাউক) বদলি করা হয়। তবে এক সপ্তাহের মধ্যে সেই বদলি বাতিল করে আবার মহাখালীতে চলে এসেছেন বকাউল। তাঁর স্ত্রী মোসা. নাসরিন দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) উচ্চমান সহকারী পদে চাকরি করায় সেলিম বকাউল চলেন বুক ফুলিয়ে। রাজউকের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারাও তাঁকে সমীহ করে চলেন।