বিএনপির শীর্ষ নেতারা আত্মগোপনে
জামালপুরের সরিষাবাড়ী রেলস্টেশনের কাছে যমুনা এক্সপ্রেস ট্রেনে ১৮ নভেম্বর মধ্যরাতে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। এতে ট্রেনের তিনটি বগি পুড়ে যায়। এ ঘটনায় সহকারী স্টেশনমাস্টার মামলা করেন। এই এক মামলাতেই জামালপুর জেলা, সদর ও সরিষাবাড়ী উপজেলা বিএনপি এবং এর চার অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের গুরুত্বপূর্ণ প্রায় সব নেতাকে আসামি করা হয়। এরপর জামালপুর অনেকটা বিএনপিশূন্য। গ্রেপ্তার এড়াতে বিএনপি, ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, কৃষক দল ও মৎস্যজীবী দলের প্রায় সব নেতাই গা ঢাকা দিয়েছেন।
সারা দেশ থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, সারা দেশে বিএনপির অবস্থা অনেকটাই জামালপুরের মতো। গত ২৮ অক্টোবর বিএনপির ঢাকার মহাসমাবেশ পণ্ড হওয়ার পর থেকে পুলিশি অভিযানের মুখে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। অনেকে নতুন নতুন মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছেন। বাকিরা আত্মগোপনে রয়েছেন।
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন অসুস্থ, কারাবন্দী অবস্থা থেকে নির্বাহী আদেশে মুক্তি পেয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমান দেড় দশক ধরে যুক্তরাজ্যে, একাধিক মামলায় সাজাপ্রাপ্ত। মহাসচিব মির্জা ফখরুলসহ ইতিমধ্যে ২০ জন কেন্দ্রীয় ও শীর্ষস্থানীয় নেতা গ্রেপ্তার হয়েছেন।
সারা দেশে জেলা ও মহানগরে বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের শীর্ষ দুই পদের (সভাপতি/আহ্বায়ক ও সাধারণ সম্পাদক/সদস্যসচিব) নেতার সংখ্যা ৬ শতাধিক। প্রথম আলোর প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্য অনুযায়ী, বিএনপি ও এর তিন অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের শীর্ষ পদে থাকা ৮৫ জন নেতা ইতিমধ্যে গ্রেপ্তার হয়েছেন। ৩৮৬ জন আত্মগোপনে। ১৪৯ জনকে এলাকায় মাঝেমধ্যে দেখা যাচ্ছে, তবে বাসায় কম থাকেন বলে স্থানীয় সূত্রগুলো জানিয়েছে।
এর মধ্যে ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমান, সদস্যসচিব আমিনুল হকসহ পাঁচজন শীর্ষ নেতা, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সদস্যসচিব রফিকুল ইসলাম, ভারপ্রাপ্ত সদস্যসচিব তানভীর হাসান ছাড়া আরও তিনজন যুগ্ম আহ্বায়ককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যুবদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আবদুল মোনায়েম আগে থেকেই কারাগারে।