কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

রাজনৈতিক অস্থিরতায় সাধারণ মানুষের কষ্ট বাড়ছে

যুগান্তর ড. আর এম দেবনাথ প্রকাশিত: ১৮ নভেম্বর ২০২৩, ০৯:৫২

বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি কয়েকদিন আগে বলেছেন, তার অঞ্চলের মেয়েরা দিনে তিনবার লিপস্টিক ব্যবহার করে। এ কথা কীভাবে তিনি বললেন তা আমি জানি না। তবে যা গত পরশুদিন জেনেছি তার কথা বলছি। উত্তরাঞ্চলের এক রিকশাওয়ালা দৌড়ের ওপর আছেন। তার ‘কিস্তি’ দেওয়ার সময় হয়েছে। মেয়ের বিয়ে, স্ত্রীর অপারেশন ইত্যাদির জন্য তিনি স্থানীয় এক ‘এনজিও’ থেকে ‘লোন’ নিয়েছেন। প্রতি মাসে এর কিস্তি দিতে হয়। নভেম্বরের কিস্তি বাকি পড়ে গেছে। তিনি এখন গলদঘর্ম। রিকশায় এখন যাত্রী কম। হরতাল-অবরোধ। অস্থিরতা চারদিকে। স্কুল বন্ধ। ছেলেমেয়েরা অভিভাবকসহ স্কুলে যায় না। মানুষের চলাচল কম। অতএব যাত্রী কম। তাই অবশ্যম্ভাবীভাবে ভাড়াও কম। কম ভাড়ায় তিনি বেশি বেশি ‘খ্যাপ’ মারেন যাতে আয় বাড়ে। তবু তিনি কুলিয়ে উঠতে পারছেন না। কয়েকদিনের মধ্যে তাকে বাড়িতে ২০ হাজার টাকা পাঠাতে হবে-খোরাকি, কিস্তির খরচ বাবদ। মন্ত্রী সাহেবের কথার সঙ্গে তো রিকশাওয়ালার কথা মিলল না। ‘লিপস্টিক’ ব্যবহার করা যদি সচ্ছলতার খবর হয়, তাহলে কিস্তির খবরটা কী?


উত্তরবঙ্গের রিকশাওয়ালাদের একটা অংশ বরাবরই ঋণী-দায়গ্রস্ত। তারা কিস্তির টাকা দেওয়ার জন্য ঢাকায় আসেন। কাজ করেন এক-দুই মাস। বাড়ি যান কিছু টাকা হলে। ইদানীং এ ধরনের রিকশাওয়ালার সংখ্যা বাড়ছে। এমনিতেই মানুষ দেনার ভারে ভুগছে। টানা হরতাল-অবরোধ, অস্থিরতার কারণে মানুষের ভোগান্তি বেড়েছে। রোজগার নেই। বাকিতে খাওয়া, দেনা করা, সহায়-সম্পদ-গরু-ছাগল বিক্রি করা-এসব দিন দিন বাড়ছে। নির্বাচন-পূর্ববতী সময়ে যদি এ ধরনের অবরোধ-হরতাল দিনের পর দিন চলতে থাকে, তাহলে মানুষের ভোগান্তির শেষ থাকবে না। এ সময়ে অবশ্য একটা ভালো খবর আছে। আর সেটা হচ্ছে আমনের খবর। কাগজে দেখলাম দেশের কোথাও কোথাও ইতোমধ্যে আমন ধান উঠতে শুরু করেছে। ফসলের পূর্বাভাসও ভালো। কিন্তু ফসল তোলার কাজে শ্রমের ব্যবহার এখন কম। যন্ত্রেই হয় সবকিছু। অতএব, গ্রামেই কৃষি মজুরদের কাজ আমন মৌসুমে বাড়বে এর কোনো কারণ দেখি না।


হরতাল-অবরোধে দেশের সাপ্লাই চেইন যে পুরোপুরি ভেঙে গেছে, তা ১৪ নভেম্বরের এক সভায় এফবিসিসিআই নেতারা বলেছেন। তারা অবিলম্বে এ আত্মবিধ্বংসী কাজ থেকে সবাইকে বিরত থাকতে অনুরোধ করেছেন। দেশবাসীকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন টানা হরতাল-অবরোধের কুফল সম্পর্কে। একটি কুফলের কথা কাগজে দেখলাম। সেটি হচ্ছে পাইকারি বাজারের খবর। স্থান বগুড়ার মহাস্থান বাজার। সেখানে অবরোধের কারণে পরিবহণ বিঘ্নিত হওয়ায় চাহিদা কমে গেছে। এ কারণে এক সপ্তাহের ব্যবধানে পাইকারি বাজারে সবজির দাম প্রায় অর্ধেকে হ্রাস পেয়েছে। খবরে দেখা যাচ্ছে, কৃষক এক মন ফুলকপি আগে যেখানে বিক্রি করেছেন ১৮০০ টাকায়, তার দাম এখন মোটামুটি ১০০০ টাকা। এদিকে অবরোধের কারণে ট্রাকভাড়া বেড়ে গেছে। বগুড়া থেকে ঢাকায় ট্রাকভাড়া যেখানে ছিল ২০ হাজার টাকা, এখন তা ৩০ হাজার টাকা। এর ফল ঢাকাবাসী হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে। প্রতিটি পণ্যের, কৃষিপণ্যের জন্য দেড়গুণ-দ্বিগুণ দাম গুনতে হচ্ছে। পণ্যের ভোগ কমাতে হচ্ছে। পরিবহণ ব্যবসা বিঘ্নিত হওয়ায় ভাড়া বেড়েছে ঠিকই, কিন্তু সার্বিকভাবে পরিবহণের চাহিদা কমেছে। পরিবহণের চলাচল সীমিত হয়েছে। মালিকরা ভয়ে তটস্থ। কার গাড়ি কখন আগুনে পোড়ানো হয়-এই ভয়ে তারা গাড়ি রাস্তায় বের করছেন না। ঝুঁকি নিয়ে যারা বের করছেন, তারা ভাড়া নিচ্ছেন বেশি। পণ্যের দাম বাড়ছে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও